আজ ৭ মে; পেরুলো ‘আহসান উল্লাহ মাস্টার’ নিহতের এক যুগ

প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » আজ ৭ মে; পেরুলো ‘আহসান উল্লাহ মাস্টার’ নিহতের এক যুগ
রবিবার, ৭ মে ২০১৭



---

ভোলাবাণী: গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। গ্রাম্য সাজেই ব্যক্তি জীবনের গড়ন। সহজ-সরলতাই ছিল তার জনপ্রিয়তার প্রধানতম হাতিয়ার। জনপ্রিয়তা আর মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তাকে কখনো হারতে হয়নি নির্বাচনে। একে একে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, সংসদ সদস্য করে টঙ্গীর গণমানুষও ছিলেন অতি নির্ভার।

আহসান উল্লাহ মাস্টার। শিক্ষক থেকে শ্রমিক নেতা। শ্রমিক নেতা থেকে সংসদ্ সদস্য। সবই মিলেছে তার শুধু মানুষের হৃদয় জয় করে। মানুষই ছিল তার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু।

ভালোবাসার বাহুবলে সারাজীবন মানুষদের আগলে রেখেছিলেন, অথচ সেই মানুষদেরই কারো না কারো হাতে বুক ঝাঝরা হলো তার। রাজনীতি, ক্ষমতার নির্মমতায় প্রাণ দিত হয় গণমানুষের প্রিয় নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারকে।

আজ ৭ মে। ২০০৪ সালের এই দিনে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে প্রাণ দেন গুণী এই রাজনীতিক। আহসান উল্লাহ মাস্টারের নিহত হওয়ার ১২ বছর পেরুলো।

এক যুগ আগে ঘাতকের বুলেট জীবন প্রদীপ নিভে দিলেও আহসান উল্লাহ মাস্টার আজ আরও দীপ্তময়, আরও বেশি জনপ্রিয়। ক্ষমতার দ্বন্দ্বে প্রাণ দিয়ে তিনি আজ ক্ষমতার কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগে বিভাজন আছে, আছে দ্বন্দ্বও। কিন্তু আহসান উল্লাহ মাস্টার প্রশ্নে সবাই যেন এক। নিজেদের চেতনা আর আদর্শে আহসান উল্লাহ মাস্টারকে সামনে রেখেই গাজীপুরের রাজনীতি। দলের মধ্যে মতভেদ আছে। কিন্তু নিজেদের নামে পোস্টার, ব্যানার সাটাতে সবাই আহসান উল্লাহ মাস্টারকে উপরেই রাখেন।

শাহাদৎ বরণ করার মধ্য দিয়ে গাজীপুরের গণ্ডী পেরিয়ে আহসানউল্লাহ মাস্টার আজ জাতীয় নেতাও বটে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ যথার্থ মর্যাদা দিয়েই আহসান উল্লাহ মাস্টারকে স্মরণ করে।

আহসান উল্লাহ মাস্টার প্রসঙ্গে কথা হয় পোশাক শ্রমিক সুরুতজামালের সঙ্গে। ২০০১ সালে টঙ্গীতে এসে পোশাক কারখানায় চকরি নেন তিনি। গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাট হলেও এখন গাজীপুরের ভোটার তিনি। সুরুত বলেন, খুব কাছে থেকে দেখেছি তাকে। শ্রমিকদের নেতাও ছিলেন। শ্রমিকদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হলেই তিনি এসে মিটমাট করে দিতেন। সবার সঙ্গেই হাসিমুখে কথা বলতেন। ঘটনার দিন আমরাও জনসভার কাছে ছিলাম। গুলির শব্দ পাইয়া সটকে পড়ি। সে কথা মনে পড়লে আজও চমকে উঠি।

আহসান উল্লাহ মাস্টারের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে ভোলাবাণীর কাছে স্মৃতিচারণ করেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমত উল্লাহ।

আহসান উল্লাহ মাস্টারের রাজনৈতিক এই সহচর বলেন, নিজের সততা আর দক্ষতা বলেই আহসান উল্লাহ মাস্টার অতি অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার কোনো তুলনা হয় না। একেবারে তৃণমুল থেকে রাজনীতি করে এসেছিলেন বলে তিনি সাধারণ মানুষের আবেগ, ভালোবাসা বুঝতেন। তার দ্বারা কারো ক্ষতি হয়েছে এ কথা কেউ বলতে পারবে না।

তিনি বলেন, মৃত্যুর পর আহসান উল্লাহ মাস্টার আরও শক্তিশালী হয়েছেন। আমরা তার দেখানো পথকেই অনুসরণ করছি। তার শেখানো রাজনীতি থেকেই নিজেদের পথ চলা।

২০০৪ সালের ৭ মে সন্ত্রাসীরা গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১:০৮:২১   ২১৬ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

বিশেষ প্রতিবেদন’র আরও খবর


দক্ষিণ আইচায় স্কুল ছাত্র নয়নের রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ ভাসছে পানিতে
দেশে অর্ধেকের বেশি নারীর বাল্যবিয়ে হয়’
টাঙ্গাইল শাড়ি চিনবেন কীভাবে
ভোলায় চলছে জাটকা নিধন ॥ ইলিশের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা
ভোলায় শৈত্যপ্রবাহে হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপন্ন
ভোলার বন্ধন হেলথ কেয়ার চালু করল অনলাইন নার্সিং হোম সার্ভিস
দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে স্কুল উধাওচরফ্যাশনে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
পরিবারিক ভ্রমণের জন্য ৪ টিপস
তজুমদ্দিনে সরকারি নলকূপ অকেজো, গরমে তীব্রতায় পানি সংকট।
ভোলায় আরো ৫ কূপ খননের পরিকল্পনাদেশর ২৯তম গ্যাস ক্ষেত্রর মর্যাদা পেয়েছে ইলিশা-১ কূপ।

আর্কাইভ