মিজান নয়ন, চরফ্যাশন অফিস, ভোলা বানী॥
চরফ্যাশনে ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলার ডুবিতে নিহত ৫ জেলের লাশ এক সঙ্গে একই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে জিন্নাগড় ইউনিয়নের উত্তর মাদ্রাজ গ্রামের হাজী নুরু মিয়া মহাজন বাড়ির দরজার জামে মসজিদ ময়দানে জানাযা শেষে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে লাশগুলো দাফন করা হয়। এছাড়া রসুলপুর ইউনিয়নে ২জেলের লাশ দাফন করা হয়েছে। সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত জানাযা নামাজে স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিবগর্, শোকাহত স্বজন এবং শতশত গ্রামবাসী অংশ নেয়। চরফ্যাশন খাসমহল জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো.রফিকুল ইসলাম জানাযা নামাজ পরিচালনা করেন। এক সঙ্গে এক কবরস্থানে যাদের লাশ দাফন করা হয়েছে তারা হলো, উত্তর মাদ্রাজ গ্রামের মৃত আব্দুল হকের ছেলে মো. মাসুদ (৩৮), একই এলাকার মৃত বুর্জুগ হাওলাদারের ছেলে অজি উল্লাহ (৩৮), মৃত নুরের ছেলে অলি উল্যাহ (৫০), পূর্ব মাদ্রাজ গ্রামের মৃত আব্দুস শহীদের ছেলে বাবুল (৩২), একই এলাকার তরিক মাঝির ছেলে কামাল হোসেন (৩৫)। রসুলপুর ইউনিয়নে দাফন করা হয়েছে রসুলপুর ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আসলাম পাটওয়ারীর ছেলে শামছুদ্দিন পাটওয়ারী (৪৫) এবং রসুলপুর ৬নং ওয়ার্ডের মুসলিম বলির ছেলে জাহাঙ্গীর বলি (৪০)’র লাশ।
দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় লাশ পঁচে বাতাসে র্দুগন্ধ ছড়িয়ে পড়লেও এলাকা বাসী এবং স্বজনরা সেই দুর্গন্ধ উপেক্ষা করে জানাষা নামাজ শেষে কপিন থেকে বের করে একে একে ৫টি লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করেন। উত্তর মাদ্রাজ জামে মসজিদ ময়দানে এক সঙ্গে ৫টি লাশের কপিন পৌছলে সেখানে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয়। এলাকাবাসী এবং স্বজনরা লাশ দেখার জন্য ছুটে গেলেও লাশ থেকে পঁচা দুর্গন্ধ বের হওয়ায় কেউ দেখে, আবার কেউ না দেখেই পিছু হেঁটেছেন। লাশ দাফন কালে এলাকাবাসী ছিলো শোকে স্তব্দ। এলাকাবাসী জানায়, এর আগে তারা এত লাশ কখনো দেখেননি।
প্রকাশ’গত ৬ জুলাই মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ উপকূলে বঙ্গোপসাগরের টেংরার চর এলাকায় ডুবে যাওয়া চরফ্যাশনের মনির মাঝির ট্রলারের ৭ জেলের মরদেহ এবং ২ জেলেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে কক্সবাজারের প্রশাসন। যাদের মধ্যে জীবিত ২ জেলে কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এবং ৭টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়াও গত শুক্রবার কক্সবাজার প্রশাসন আরো ৪টি মরদেহ উদ্ধার করলেও এগুলো মনির মাঝির ট্রলারের নিখোঁজ ৫ জেলের কাহারো নয় বলে নিশ্চিত করেছেন স্বজনরা। ফলে গতকাল শনিবার দুপুরে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ডুবে যাওয়া মনির মাঝির ট্রলারের ৫ জন এবং শাহজাহান মাঝির ট্রলারের ১৫জনসহ মোট ২০ জন জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। উল্লেখ্য’মনির মাঝির ট্রলার ডুবির ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে গত ৭ জুলাই রবিবার রাতে চরফ্যাশনের ঢালচর উপকূলে বঙ্গোপসাগারের শিবচর এলাকায় শাহজাহান মাঝির মাছধরা ট্রলারটি ১৫ জেলেসহ ডুবে যায়।
চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রুহুল আমিন জানান, নিহত জেলেদের লাশ দাফন এবং আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে বরাদ্ধপ্রাপ্ত ২৫ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৮:০৯ ৪৬১ বার পঠিত |