ইয়াবার মরণ ছোবল সকলের উদ্যোগী ভূমিকা প্রয়োজন

প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » ইয়াবার মরণ ছোবল সকলের উদ্যোগী ভূমিকা প্রয়োজন
মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই ২০১৭



---।।ভোলাবাণী সম্পাদকীয়।।ইয়াবায় আসক্তি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সরকারি হিসাবেই দেশে দিনে ২০ লাখ ইয়াবা বড়ি সেবন করা হয়। লাখ লাখ তরুণ এতে আসক্ত হয়ে বিপর্যয়কর অবস্থার দিকে যাচ্ছে। কম্বোডিয়ার সাংবাদিক নাথান এ থম্পসন মিয়ানমার ও বাংলাদেশে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছেন। গত রবিবার জাপানের নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ সাময়িকীতে ‘বাংলাদেশে ইয়াবা সমস্যা’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে ইয়াবার উৎস ও ভোক্তার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশের মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হিসাব তুলে ধরে প্রতিবেদক বলেন, ২০১০ সালে ৮১ হাজার ইয়াবা বড়ি আটক করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে এ সংখ্যা প্রায় তিন কোটিতে দাঁড়ায়। ফলে অনুমান করা যায়, বিপুলসংখ্যক মানুষ এ মরণ নেশায় আক্রান্ত।

বাংলাদেশে ইয়াবা সেবন শুরু হয় ২০০৬ সালের দিকে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এসংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদনটি ২০১৩ সালের। তাতে বলা হয়েছে, প্রথম দিকে অভিজাত শ্রেণির অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ইয়াবার নেশা চালু ছিল। বিশেষ করে ঢাকার ইংরেজি মাধ্যম স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। ইয়াবা দ্রুত স্মার্টনেস, ফ্যাশন ও আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে ওঠে। তারকাজগতের অনেকেই এতে আসক্ত হয়ে পড়েন।

মিয়ানমার থেকে ইয়াবা কক্সবাজারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। নাথান থম্পসন বলেছেন, কক্সবাজারের স্থানীয় অনেক ব্যক্তি ইয়াবা সমস্যার জন্য কিছু অশুভ শক্তিকে দায়ী করে। কক্সবাজার আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, তরুণসমাজকে ধ্বংস করা এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্রের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ইয়াবা। তাঁর মন্তব্যের লক্ষ্য পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। কক্সবাজারভিত্তিক একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালকও বলেন, বাংলাদেশে ইয়াবা সমস্যার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। তাঁর মতে, এর পেছনে রয়েছে পাকিস্তান। তারা বাংলাদেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।

ইনডেক্সমানডির তথ্য মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী। তাদের অনেকের রয়েছে প্রচুর অবসর সময় ও ওড়ানোর মতো নগদ টাকা। আগে কোনো প্রজন্মের হাতে এসব ছিল না। ঢাকার এক মাদক বিশেষজ্ঞ বলেন, মাদক হিসেবে এ প্রজন্মের প্রথম পছন্দ ইয়াবা।

২০১৩ সালের এক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৬০ লাখ। ২০১৪ সালের আরেক তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৫৩.২৭ শতাংশ তরুণ মাদকাসক্ত। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের, বিশেষ করে তরুণদের ইয়াবায় আসক্ত হওয়ার কারণ কী? তথ্য বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞদের অভিমত পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এর কারণ বৈষম্যমূলক উন্নয়ন, আর্থিক অনটনজনিত হতাশা, আভিজাত্য প্রকাশ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রের সংকোচন, দুর্নীতিলব্ধ উড়ো টাকা, রাজনৈতিক অপকৌশল ও জনকল্যাণমুখী মতাদর্শ চর্চার অভাব। এসব বিষয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের সমন্বিত উদ্যোগ না থাকলে সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়ে এখনই সতর্ক দৃষ্টি দেবে বলে আমরা আশা করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৩:৩৮   ২৭৯ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ভোলার গ্যাস উৎপাদন: বাড়তি খরচে কূপ খনন করতে চায় রাশিয়ার গাজপ্রম
মুজিব শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরনে একধাপ এগিয়ে মনপুরায় বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস পর্যটন কেন্দ্রস্থান সচিবের পরিদর্শন ॥
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
প্রচণ্ড গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম
ভোলাবাণী’র পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের শুভেচ্ছা.
ভোলায় ৩৪.৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি চালু হয়নি ৩ মাসেও ।।চরম বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দ্বীপবাসি
দুর্যোগে জরুরি প্রস্তুতি ও সাড়া দান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠানে দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সচেতনতা ও সামর্থ্য বাড়াতে হবে- ভোলা জেলা প্রশাসক
ভোলায় পিআইবির আয়োজনে সাংবাদিকদের ৩ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে সার্টিফিকেট বিতরণ
ভোলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন

আর্কাইভ