টি আই স্বপন।। ভোলাবাণী লাইফস্টাইলঃ
সন্তানের কাছে নিজেকে রোল মডেল করে তুলুন। মৌখিক ইন্সট্র্রাকশনের পাশাপাশি নিজেও নিয়ম মেনে চলুন, অনেক বেশি ইফেক্টিভ হবে। আপনি যদি সময় অসময় টিভি চালিয়ে দেন বা ফোনে আড্ডা দেন তাহলে কখনই আশা করবেন না আপনার ছেলেমেয়ে সময়মতো হোমওয়ার্ক শেষ করবে। নিজে সময়ের কাজ সময়ে করুন।
সন্তানরা আপনাকে দিয়েই শিখবে। আপনি যদি সন্তানদের সম্মান আশা করেন তাহলে আপনাকেও ওকে সম্মান করতে হবে। যত ছোটই হোক না কেন ওযে পরিবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এ বোধটা যেন ছোট থেকেই জেগে ওঠে। সন্তানের মতামতকে গুরুত্ব দিন। ওর কথা শুনুন। যদি ওর অভিমত মানার মতো না হয়, তাহলে ওকে বুঝিয়ে বলুন কেন তা মানা সম্ভব নয়। ‘আমি না বলছি, তাই না; এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
সন্তানকে শাসন করার সময় আপনাকেও আপনার পরিবারের সদস্যদের একটা ইউনিট হিসেবে কাজ করতে হবে। একজন খুব বকাঝকা করলে, অন্যজন টেনে নিয়ে আদর করলে এমনটা করলে চলবে না। এতে বাচ্চার মধ্যে কোনো একজনকে ফেবার করার প্রবণতা তৈরি হতে পরে। বাচ্চাকে শাসন করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করবেন না। বাচ্চাকে বুঝাতে হবে ভুলটা ভুলই। ও যেন বুঝতে পারে অন্যায় করলে মা-বাবা দু’জনই রাগ করেন। বাচ্চাকে বকার প্রয়োজন হলে কখনও খারাপ শব্দ প্রয়োগ করবেন না।
বা অন্য কারোর সঙ্গে তুলনা করে কথা বলবেন না। এতে বাচ্চার আত্মবিশ্বাস কমে যায়। যেমন তোমার মাথায় একেবারে বুদ্ধি নেই এ রকমের কথা না বলাই ভালো। এটা কি একটা বুদ্ধিমানের মতো কাজ হয়েছে? এক এক শিশুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এক এক রকম। সে অনুযায়ী আপনার পরিকল্পনা ও প্রয়োগ কৌশল তৈরি করুন।
বাচ্চা কীভাবে সময় কাটাতে ভালোবাসে আপনার কাছে কতটা গুরুত্ব চায়, কোন সময়ে পড়তে বসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সব কিছুই মাথায় রেখে দিনের রুটিন স্থির করুন। ওর মতামত নিয়ে রুটিন তৈরি করুন। তবে খেয়াল রাখবেন রুটিন একবার তৈরি হয়ে গেলে তা যেন নড়চড় না হয়। খুব বেশি নিয়মকানুন বাচ্চাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। স্কুল থেকে ফিরে অন্তত দুই ঘণ্টা যেন ছোটাছুটি করে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে পারে। নিয়ম কখনই চাপিয়ে দেবেন না।
কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ওর পছন্দ-অপছন্দের গুরুত্ব দিন। কেন আপনি সিদ্ধান্তটা নিচ্ছেন সেটা বোঝালে ওর কাছে নিয়ম পালনের গ্রহণযোগ্যতাও বাড়বে। (কোনো অন্যায় করতে দেখলে প্রথমে ওয়ার্নিং দিন, বুঝিয়ে বলুন তার পর শাস্তি দিন)। শাস্তি মানে কিন্তু চেঁচামেচি বা গায়ে হাত তোলা একেবারেই নয়। (কিছু দিনের জন্য ওর পছন্দের কোনো জিনিস বন্ধ করে দিন বা ওর সঙ্গে কথা বলা কমিয়ে দিন)।
আবার সামনে ওর সমালোচনা বা নিন্দা করবেন না। এতে ওর আত্মবিশ্বাসে চির ধরতে পারে। কথাবার্তায় আচার-আচরণে ইতিবাচক ইঙ্গিত থাকলেও উৎসাহিত বোধ করবে। কোনো উপলক্ষ ছাড়াই ওর পছন্দমতো ছোট কোনো উপহার দিন যাতে করে বুঝতে পারে ওর ব্যবহারে এবং কাজকর্মে আপনারা খুশি।
ওর সামনে কখনও কোনো গুরুজনের সমালোচনা করবেন না। এতে করে বড়দের শ্রদ্ধা করতে শিখবে না। বরং বড়দের সঙ্গে সম্মানসহকারে খোঁজখবর কীভাবে নিতে হবে সেটা বুঝিয়ে বলুন। যত ব্যস্তই আপনি থাকেন না কেন বাচ্চাকে সময় দিতে হবে। তাহলে আপনাদেরও ভালো করে চিনতে পারবে।
এ সময়টুকুর মধ্যে সুস্থ, রুচি সমাজিকতার খুঁটিনাটি ওর মধ্যে গেঁথে দিন। তবে মনে রাখবেন শাসনে রাখা মানেই কিন্তু কড়া ধমক কিংবা শাস্তি নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। শাস্তি নয় আদর ও ভালোবাসা দিয়ে সন্তানকে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:০০:০২ ৩২৩ বার পঠিত |