রোহিঙ্গা আসছে রোহিঙ্গা ভাসছে

প্রথম পাতা » সম্পাদকীয় » রোহিঙ্গা আসছে রোহিঙ্গা ভাসছে
বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০১৭



 

 

 

 

।।---।।ভোলাবাণী সম্পাদকীয়।।

।।খলিল উদ্দিন ফরিদ।।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধন ও বিতাড়ন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে করুণ এক মানবিক সংকট। সাত দিন ধরে পালিয়ে আসার সময় পথের ধকল সইতে না পেরে সোমবারও মায়ের কোলে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

এর আগের দিন নাফ নদে নৌকা ডুবে ১১ শিশুসহ ২৩ জনের সলিল সমাধি হয়েছে। মিয়ানমার পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার কথা মুখে বললেও কাজে করছে তার উল্টোটা। সেনাবাহিনীর অভিযান থামেনি। যুবতী মেয়েদের ঘর থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে। হত্যা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন তো আছেই। ফলে সোমবার আবার বড় ধরনের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে। প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এক দিনেই ৩০ থেকে ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমার যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে আন্তরিক—এসব ঘটনা তার ইঙ্গিত বহন করে না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সোমবার ঢাকায় কর্মরত ২৮টি দেশের কূটনীতিকদের রোহিঙ্গা সংকটের সর্বশেষ পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, বৈরী পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার স্রোত এখনো অব্যাহত আছে। তাই এই সংকটের গ্রহণযোগ্য সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। কূটনৈতিক বিশ্লেষকরাও মনে করছেন, মিয়ানমার যে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলছে, তার ওপর আস্থা রাখা কঠিন। আন্তর্জাতিক চাপ প্রবল হলেই কেবল এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। পাশাপাশি তাঁরা মনে করেন, এই সংকট সমাধানে ভারত, চীন ও রাশিয়ার পক্ষ থেকে উদ্যোগ আসা জরুরি। বাংলাদেশকে এই তিন দেশের সঙ্গে দূতিয়ালি আরো বাড়াতে হবে।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির দপ্তরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়ে গত সপ্তাহে ঢাকা সফর করে ১৯৯২ সালে সম্পাদিত চুক্তির ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ইচ্ছার কথা জানিয়ে গেছেন। কিন্তু সে সময়ের বাস্তবতা ও এখনকার বাস্তবতা এক নয়। এই সংকটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যুক্ত হওয়ার প্রেক্ষাপটও ছিল ভিন্ন। বহু রোহিঙ্গার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা ফিরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে কোথায়? তাদের নিরাপত্তার কী হবে? তাদের নিয়ে কি আবার শিবিরে তোলা হবে? অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোনোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে কি? এ রকম অনেক প্রশ্ন জড়িত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সঙ্গে। সেসবের ফয়সালা করেই তাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। আর তাই নতুন করে চুক্তি করাটা জরুরি।

বাংলাদেশে নতুন করে রোহিঙ্গা এসেছে সাড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি। নতুন-পুরনো মিলিয়ে এই সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। এদের সবাইকে ফিরিয়ে নিতে হবে। তার আগ পর্যন্ত তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এই পুরো প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ১৬ অক্টোবর ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মিয়ানমারের ওপর কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। জাতিসংঘও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের চিন্তাভাবনা করছে। তার সঙ্গে সংগতি রেখেই দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকে এগিয়ে নিতে হবে। আমরা চাই, দ্রুত এই সংকটের অবসান হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩০:০৯   ৩৭৭ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সম্পাদকীয়’র আরও খবর


ভোলার গ্যাস উৎপাদন: বাড়তি খরচে কূপ খনন করতে চায় রাশিয়ার গাজপ্রম
মুজিব শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরনে একধাপ এগিয়ে মনপুরায় বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস পর্যটন কেন্দ্রস্থান সচিবের পরিদর্শন ॥
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
প্রচণ্ড গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম
ভোলাবাণী’র পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরের শুভেচ্ছা.
ভোলায় ৩৪.৫ মেগাওয়াট রেন্টাল বিদ্যুৎ প্ল্যান্টটি চালু হয়নি ৩ মাসেও ।।চরম বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে দ্বীপবাসি
দুর্যোগে জরুরি প্রস্তুতি ও সাড়া দান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠানে দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সচেতনতা ও সামর্থ্য বাড়াতে হবে- ভোলা জেলা প্রশাসক
ভোলায় পিআইবির আয়োজনে সাংবাদিকদের ৩ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে সার্টিফিকেট বিতরণ
ভোলায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন

আর্কাইভ