মনপুরায় পানিবন্ধী ১০ গ্রামের ৪০ সহ¯্রাধীক মানুষের চরম দুর্ভোগ ॥ খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট

প্রথম পাতা » মনপুরা » মনপুরায় পানিবন্ধী ১০ গ্রামের ৪০ সহ¯্রাধীক মানুষের চরম দুর্ভোগ ॥ খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট
সোমবার, ১২ জুন ২০১৭



 

---

মোঃ ছালাহউদ্দিন ।।ভোলাবাণী।। মনপুরা সংবাদদাতা ॥ ভোলার দ্বীপ উপজেলা মনপুরার মূল ভুখন্ডের ১নং মনপুরা ইউনিয়নের চৌমহনী বাজার সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ভাঙ্গা বেড়ীবাধ ও হাজির হাট ইউনিয়নের পুর্ব সোনার চরের ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে পুর্নিমার জোতে পানি ঢুকে রবিবার চরাঞ্চলসহ ৩০ সহ¯্রাধীক মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়ছেন। প্র্রায় সহ¯্রধীক পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। গত ৩ দিন ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে হুহু করে জোয়ারের পানি ঢুকে ১নং মনপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম কুলাগাজী তালুক,কাউয়ারটেক চৌমহনী গ্রামের ৭নং ওয়ার্ড, পুর্বকুলাগাজির তালুক, হাজির হাট ইউনিয়নের পুর্ব সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান,চরমরিয়ম,দাসেরহাট গ্রাম তলিয়ে গেছে। এছাড়া মূল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কলাতলীচর,ঢালচর,চরনিজাম,চরশামসুউদ্দিন চরের চারপাশে কোন বেড়ীবাধঁ না থাকায় আমবশ্যার জোয়ারে অস্বভাবিক জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব চরাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে পানি ওঠা নামা করে। এসব প্লাবিত এলাকার মানুষের বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।সরজমিনে সোমবার সকাল বেলা গিয়ে দেখা গেছে,এসব প্লাবিত এলাকার মানষের বসত ভিটা পানির নিচে ডুবে আছে। উঠানে ময়লা আবর্জনা পানি জমে রয়েছে। বসত ভিটা ডুবে থাকার কারনে রান্না বান্না করতে পারছেনা। মহিলারা ঘরে বসে জোয়ারের পানিতে পাতিল পরিস্কার করছেন। ঘর থেকে কোথাও বের হতে পারছেননা। চারিদিকে জোয়ারের পানি থৈ থৈ করছে। রাস্তার উপর দিয়ে জোয়ারের পানি যাচ্ছে। সাধারন মানুষ খুব আতংকে আছেন। গো খাদ্যের ও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। গবাধি পশুগুলো উঠানের উচু জায়গায় রাখা হয়েছে। রাস্তার উপর কেউ কেউ জাল দিয়ে মাছ ধরছেন। রান্না বান্না করতে না পারায় অনেকে ২/ত বেলা উপোস থকতে হয়েছে।
সোনারচরের আবুল কাশেমের স্ত্রী রেহানা বেগম জানান,রাতে জোয়ারের পানি তাদের ঘর ডুবে গেছে। চৌকির উপর ছেলেমেয়েদের নিয়ে সারারাত বসে কাটিয়েছি। রান্নাবান্না করার মত কোন চুলা ছিলনা। ছেলেমেয়েয়েরা রাতে উপোস ছিল। আমরা না খেয়ে রোজা ধরেছি। পানিবন্ধী হাজির হাট ইউনিয়নের ১নং পুর্ব সোনার চরের মনুরা খাতুন বলেন,জোয়ারের পানিতে ঘর ডুবে যাওয়ায় বাচ্চাদের জন্য রাতের খাবার রান্না করতে পারিনি। সারারাত আমার বাচ্চারা উয়াস ছিল। আমরা ঘরের মধ্যে চৌকির উপর সারারাত বসে ছিলাম। সকালবেলা টিনের জের দিয়ে চুলা তৈরি করে রান্না করেছি। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে আছি।এরম শতশত নারী পুরুষ একই অভিযোগ করেন। তারা ছেলে মেয়েদের নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।

সাধারন মানুষের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় এসব ভাঙ্গা বেড়ী বাধ নির্মান না করায় সাধারন মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়ছেন। আবার যেসব নতুন বেড়ীবাধ করা হয়েছিল তাও পানিউন্নয়ন বোর্ড সঠিকভাবে তদারকি না করার কারনে এবং ঠিকাদারের সাথে পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে যেভাবে বেড়ীবাধঁ করার কথা ছিল সেভাবে করা হয়নি।

হাজির হাট ইউনিয়নের চরযতিন গ্রামের আলাউদ্দিন আজাদ বলেন,জোয়ারের পানি ঢুকে পুকুরের সব মাছ চলে গেছে। আশেপাশের সকল বাড়ীর পুকুর ডুবে গেছে এখন মহিলারা জোয়ারের পানি দিয়ে রান্না বান্না করেন।
প্লাবিত এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানির খুব সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার মানুষ প্রচন্ড কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। বর্তমানে তাদের কষ্টের যেন শেষ নেই।

 

---

এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে ভিতরে পানি প্রবেশ করে মানুষ পানিবন্ধী রয়েছেন। তবে ৩টি পয়েন্টে রিং বেড়ীবাধের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। শিপন চৌধুরী বাড়ীর পুর্বপাশের ভাঙ্গা বেড়ীবাধ ,কাউয়ারটেক চৌমহনী বাজার পশ্চিম পাশের ভাঙ্গা বেড়ীবাধ ও নাইবেরহাট সংলগ্ন পশ্চিম পাশের ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ সামনে ১০ফুট চওড়া ও ১০ ফুট উচ্চতার রিং বেড়ীবাধের কাজ দ্রুত শুরু হয়েছে। হাজির হাট ইউনিয়নের পুর্বসোনারচর ভাঙ্গা বেড়ীবাধেঁর টেন্ডার করার জন্য অনুমতি পেয়েছি। আশা করছি তা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। চরাঞ্চলগুলোতে বেড়ীবাধ নেই । আমরা এবিষয়গুলো উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
রবিবার বিকাল বেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পানিবন্ধী এলাকা পরিদর্শন করেন। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সোহাগ হাওলাদার বলেন,ভাঙ্গা বেড়ীবাধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে মানুষ পানিবন্ধী হয়ে পড়ছেন। আমি খবর পেয়ে দ্রুত পানিবন্ধী এলাকা পরিদর্শন করি। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অভিহিত করেছি।

এব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিসেস শেলিনা আকতার চৌধুরী বলেন, জোয়ারের প্রবল চাপে ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ দিয়ে পানি ঢুকে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এম.পির প্রচেষ্ঠায় ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁগুলো সংস্কারের জন্য রিং বেড়ীবাধেঁর টেন্ডার করা হয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে। উপমন্ত্রী প্রতিদিন কাজের খোজঁ কবর রাখেন। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলগুলোতে বেড়ীবাধঁ না থাকায় জোয়ারের সময় মানুষ কষ্ট করছেন। আমরা এবিষয়গুলো উপমন্ত্রী কে জানিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সকল সমস্যা সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৪:৫৫   ১৯৫ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

মনপুরা’র আরও খবর


মনপুরায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষন কর্মশালা অনুষ্ঠিত ॥
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ মনপুরায় শেষ দিনে ৯ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল ॥
মনপুরায় কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ বিতরন ॥
মনপুরায় কোস্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অবহিতকরন সভা অনুষ্ঠিত
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪মনপুরায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পত্র দাখিল
মনপুরায় দুর্যোগ বিষয়ক মাঠ মহড়া অনুষ্ঠিত ॥
মুজিব শতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পুরনে একধাপ এগিয়ে মনপুরায় বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস পর্যটন কেন্দ্রস্থান সচিবের পরিদর্শন ॥
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪মনপুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৫ জন ॥ মোট প্রার্থী ১১ জন
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মনপুরায় সম্বাব্য প্রার্থীদের অনলাইনে নোমিনেশন পেপার সাবমিট বিষয়ে প্রশিক্ষন কর্মশালা অনুষ্ঠিত ॥
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥

আর্কাইভ