ভোলাবাণী স্পোর্টস ডেক্স।। আফগানিস্তান দেশটির কাছে ক্রিকেট যেন রূপকথার মতো। এক ক্রিকেটে বুঁদ হয়ে অনেক জীর্ণতা ভুলে থেকেছে দেশটির মানুষ। যুদ্ধের বিভীষিকা, নিজেদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক জটিলতা কিংবা অর্থনৈতিক সংকট। এমন শত দুঃখ ভুলে রশিদ-মুজিবদের ঘূর্ণিতে হাসি খুঁজে নিয়েছে আফগানরা। তবে বিশ্বকাপ হয়ে আছে দেশটির দুঃখগাথার আখ্যান হয়ে।
২০১৫ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলুড়ে ক্লাবের নিয়মিত সদস্য আফগানিস্তান। আর এবারতো ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ সুপার লিগে ৫ম অবস্থানে থেকে, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশের আগেই নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তারা। কিন্তু দুঃখ ওই একটাই। আরেকটা জয়। আজ দিল্লিতে মুখোমুখি হওয়ার আগে আফগানিস্তান বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলেছে ১৭টি। তার মধ্যে ১৬টিতেই হার। একমাত্র জয়টি সেই ২০১৫ আসরে। বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।আফগানিস্তানের চার কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে বিশ্বকাপে একটা জয়ের খোঁজে হন্যে হয়ে ছিল শাহিদি-গুরবাজরা। সেই উপলক্ষ এতোটা মধুর হয়ে ধরা দেবে কে-ই বা কল্পনা করতে পেরেছিল! আফগানিস্তান হারিয়ে দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে। ইংল্যান্ডের সামনে আফগানদের দেয়া ২৮৫ রানের লক্ষ্যটি যে নাও শাখ পর্বতের মতো দুর্গম আর অভেদ্য হয়ে দাঁড়াবে ভাবাই যায়নি। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় আপসেট উপহার দিয়ে আফগানিস্তান জয় তুলে নিয়েছে ৬৯ রানের।
রহমানউল্লাহ গুরবাজের ৮০ আর ইকরাম আলিখিলের ৫৮ রানে ভর করে ২৮৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আফগানিস্তান। অবশ্য শুরুটা আরো দারুণ করেছিল তারা। ১১৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙ্গে পড়ার ৫০ রানের মধ্যে আরো ৫টি উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় আফগানিস্তান। সেখান থেকে ইকরামের সাহসী ব্যাটিংয়ে দিশা খুঁজে পায় তারা। আদিল রশিদ ৩টি, মার্ক উড ২টি আর রুট, লিভিংস্টোন, টপলি ১টি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই জনি বেয়ারস্টোর উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। সেই থেকে শুরু। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর এক পর্যায়ে স্কোরকার্ডের চেহারা দাঁড়ায় ১৩৮/৬। স্বপ্ন বোনা শুরু করে আফগানরা। ১৬৯ রানে মুজিব যখন হ্যারি ব্রুকের উইকেট তুলে নেন তখনই বিজয়ধ্বনি বাজতে শুরু করে আফগান শিবিরে। আর সেই সুর চূড়ায় ওঠে রশিদ খান যখন মার্ক উডের উইকেটটি তুলে নেন ইনিংসের ৪০.৩ ওভারে। ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২১৫ রানে। আফগান রূপকথায় যুক্ত হয় ৬৯ রানের বিজয়ের নতুন ইতিহাস।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৫:১৩ ১১৫ বার পঠিত |