ছোটন সাহা,ভোলাবাণী:
সন্ধা সাড়ে ৭টায়, ভোলা সদর হাসপাতালের ২য় তলায় ফ্লোরে অবস্থারনরত রোগীর স্বজনরা। তাদের চোখ-মুখে আতংক আর উৎকন্ঠা। এদের মধ্যে একজন রুবেল ও জান্নাত বেগম। তাদের ৩দিন বয়সী শিশু হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের স্কেনো রুমে চিকিৎসাধীন। কিন্তু শারিরিক কোন পরিবর্তন নেই। তাই শিশুকে নিয়ে আরো বেশী দুশ্চিন্তায় তারা।
শিশুর পিতা রাজমিস্ত্রী রুবেল জানান, ভোলা সদও হাসপাতালে তিনদিন আগে স্বাভাবিকভাবে জম্মগ্রহন করে শিশুটি। এরপর থেকেই খিচুনি, তাই খুবই ভয়ের মধ্যে রয়েছি।
রুবেলের স্ত্রী জান্নাত জানান, চার বছর আগে প্রথম শিশুটি ঠান্ডাজনতি কারনে ৪ দিন বয়সে মারা যায়, দুই বছর আগে ৬ মাস বয়সী আরেক শিশু মারা যায়। তাই আতংক অনেক বেশী। ডাক্তার-নার্স চিকিৎসা দিচ্ছেন কিন্তু কিছুতেই শিশু সুস্থ হচ্ছে না।
রুবেল ও জান্নাতের মত এমন রোগীর স্বজনের সংখ্যা অনেক। যাদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালের ফ্লোরে উৎকন্ঠায় সময় পার করছেন। শনিবার সন্ধায় ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। হাসপাতালের মেজেতে রোগীর স্বজনদের ভীড়।
টানা বর্ষনের পর হঠাৎ করেই আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারনে ভোলায় বেড়েছে তারমাত্রা। এতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গরমের কারনে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। রোগে আক্রান্ত হয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ও স্কেনার ওয়ার্ড শিশু রোগীরদের উপছে পড়া ভীড়।
স্কেনার ওয়ার্ডের দায়িত্বরত নার্স সুমিতা হালদার বলেন, শনিবার রাত পর্যন্ত ওয়ার্ডে ১৩টি শিশু ভর্তি রয়েছে। এরা সকলে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বেবী অব জান্নাতের শিশুটি জম্মগত সমস্যা নিয়ে জম্মগ্রহন করেছে। তবে এখন সুস্থ্য রয়েছে। সকল শিশুদের নিবিড় পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে।
ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখো গেছে, শিশু রোগীদের ভীড়। সেখানে ৫০টি শিশু চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে গত এক সপ্তাহে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে ২০টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এসব রোগীরা নিউমোনিয়া ও ঠান্ডাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
দৌলতখানের মেদুয়া থেকে আসা রোগীর মা ফেরদৌসী বেগম বলেন, ঠান্ডাজনিত রোগে ২ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে একদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাকে নিয়ে আতংকের মধ্যে রয়েছি’।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ঝর্না রানী দাস বলেন, গরমের কারনে শিশুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মায়েরা সচেতন না থাকায় শিশুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুরা ঘামে ভীজে ঠান্ডা ভুগছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০/১২জন শিশু ভর্তি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক ডা: সালাহউদ্দীন বলেন, আবহাওয়ায় পরিবর্তনজনিত কারনে এ সময়ে শিশুরা আক্রান্ত হয়ে থাকে, তবে এতে আতংকের কিছু নেই, আমরা শিশুদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। তিনি বলেন, হাসপাতালের সকল ওষুধ সরবরাহ হচ্ছেনা কছু সংখ্যক ওষুধ বাইওে থেকে আনতে হয়। স্কোনো রুমে সব সময়ই শিশুদেও বীড় তাকে, তারা চিকিৎসা পাচ্ছেন।
এদিকে হাসপাতালের পুরুষ ও নারী মেডিসিন, সার্জারী, গাইনী, অর্থপেডিকস ওয়ার্ডেও রোগীদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। সেখানে চিকিৎসক ও নার্সদের চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। তবে চিকিৎসক সংকট থাকায় কিছুটা হলেও রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রোগীদের।সুত্-সুসংবাদটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলাদেশ সময়: ১০:২৯:১৪ ৩১৮ বার পঠিত |