চরফ্যাশনে প্রবাসী ভাইদের টাকায় কেনা সম্পত্তির সমঅংশ নিজের নামে লিখে নেয়ার অভিযোগ

চরফ্যাশন অফিস ॥

আফ্রিকা প্রবাসী ছোট দুই ভাইয়ের পাঠানো টাকায় জমি ক্রয় এবং ভবণ নির্মাণ কাজ দেখা শোনার দায়িত্বে থাকা বড় ভাই মিজান ব্যাপারীর বিরুদ্ধে দলিলে গ্রহীতার জায়গায় দুই ভাইয়েরে নামের সঙ্গে নিজের নাম অর্ন্তভুক্ত করে ভাইদের সমপরিমান জমি লিখে নিয়ে নির্মানাধীন ৫তলা ভবনের তিন এর এক অংশের মালিক দাবী করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছোট ভাই মনির হোসেন এমন অভিযোগ করেছেন।

চরফ্যাশন উপজেলা সদরের কোর্ট বিল্ডিং সংলগ্নের ৮শতাংশ জমি এবং ৫তলা ভবনের মালিকানা নিয়ে তিন ভাইর দ্বন্ধ এখন চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন দ্রুত এ দ্বন্ধের অবসান না হলে যে কোন সময় এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মনির হোসেন জানান, তিনি এবং তার অপর ভাই আকবর হোসেন কয়েক বছর যাবত আফ্রিকা প্রবাসী। তার বড় ভাই মিজান বেপারী দেশের বাড়িতে বেকার থাকায় তাকে তাদের সংসার ও দেশে জমি কিনা এবং ওই জমিতে ভবণ নির্মান কাজ দেখাশোনার  দায়িত্ব দেন তারা। বিনিময়ে তার সংসারসহ যাবতীয়  খরচ বাবদ তাকে প্রতিমাসে ২০হাজার টাকা দিতেন। পাশাপাশি তাকে  ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি কোম্পানির  ডিলারশিপ নিয়ে দেন। ২০১৩ সনে বড় ভাই মিজান ব্যাপারীর মাধ্যমে চরফ্যাশন পৌর সদরে আদালত ভবন সংলগ্ন এলাকায় ৮শতাংশ জমি ৪৮ লাখ টাকায় খরিদ করে ২০১৭ সনে ওই জমিতে ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। নির্মাণ কাজের জন্য ভাই মিজান ব্যাপারীকে ১কোটি ৯৩লাখ টাকা দেয়ার পর কাজের ৫তলার নির্মান কাজ চলমান অবস্থায় ২০১৯ সনে তারা জানতে পারেন তাদের দুই ভাইর টাকায় খরিদকৃত জমির দলিলে দুই ভাইর নামের সঙ্গে তার নাম অর্ন্তভুক্ত করে  ৮শতাংশ জমির তিন এর এক অংশ বড় ভাই মিজান ব্যাপারী  তার  নামে লিখে নিয়েছেন। তখন তারা ওই ভবন নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। ভাইদের সঙ্গে বড় ভাইয়ের প্রতারণার বিষয়টি লোকজনকে জানানোর কারণে বড় ভাই মিজান বেপারী ছোট ভাই মনিরকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন । এঘটনায় তিনি  চলতি বছরের ২২ জানুয়ারী চরফ্যাশন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন।

তিনি আরো জানান, থানায় সাধারন ডায়েরী করায় ক্ষিপ্ত বড় ভাই মিজান ব্যাপারী ২৩মার্চ ভাড়াটিয়া বাহিনী দিয়ে ওই ভবন থেকে তাদের পরিবারের সদস্যদের বের করে জবর দখল ,ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর, নগদ টাকা , স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন  লুটে নেয়।

বিষয়টি থানায় জানালে চরফ্যাশন থানা পুলিশ  মিজানকে আটক করে থানায় নেয়। এসময় লুটে নেয়া টাকা এবং  মালামাল ফেরত দিবে বলে থানা থেকে ছাড়া পেয়ে উল্টো হুমকি ধমকি দিচ্ছে। তাদেরকে বাসায় ঢুকেতে দিচ্ছে না। স্থানীয় নেতাদের তদবীরের কারণে থানা পুলিশ মামলা নিতে পারছেন না। এমতাবস্থায় তিনি পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় আছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মনির হোসেনের মা জাহানারা বেগম, বোন শাহানাজ পারভীন, ভগ্নিপতি তোফায়েল আহমেদ এবং বড় ভাই এ জাহান ফিরোজ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযুক্ত মিজান জানান, জমির দলিল সম্পাদনের সময় ভাই আকবর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। তার সম্মতিতে জমির একাংশ আমার নামে দলিল করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবন নির্মানের সময়ও জমির অংশ হিসেবে তাদের সাথে যৌথ ভাবে নির্মান করা হয়েছে। তাদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি সঠিক নয়।