।।ভোলাবাণী।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের গরীব কৃষকের বীজ ভাণ্ডার বলে খ্যাত বিএডিসিকে বিএনপি সরকার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শে। কারণ এটা নাকি লাভজনক না। আর বীজ উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বেসরকারি খাতে দিয়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে বীজের মান ঠিক ছিল না। কিন্তু আমরা সরকারে এসে বলেছি, বেসরকারি খাত করে করুক, তাদের উৎসাহী করব। কিন্তু সরকারের একটা থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কৃষিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ৩২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার ১৪২৩ এর পদক প্রদান করেন। পুরস্কার প্রাপ্তদের মধ্যে ৫টি স্বর্ণ পদক, ৯টি রৌপ্য পদক এবং ১৮টি ব্রোঞ্জ পদক প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গরীব কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে যেন বীজ পায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে বিএডিসিকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলেছি। সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিকটন বীজ আমরা বিতরণ করেছি ১০ বছরে। তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ খাদ্যে প্রথমবারের মতো স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করায় বিএনপি তার সমালোচনা করেছিল। সংসদে তারা বলেছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া ভালো না, এতে বিদেশ থেকে খাদ্য সাহায্য পাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাড়ির আশেপাশের জমি যাতে পড়ে না থাকে সেজন্য আমরা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এতে কৃষক অব্যবহৃত জমি ব্যবহার করতে পারবে এবং নিজেদের স্বচ্ছল করতে পারবে। একই সঙ্গে আশপাশের অন্য মানুষ যেন কাজ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এটা করে দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার না করে ভূউপরিস্থ পানি ব্যবহারের বিষয়ে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে ফসলও ভালো হবে, আর পানির স্তরও নিচে নেমে যাবে না। কৃষকদের জন্য কৃষি উপকরণ কার্ডের ব্যবস্থা করে দেয়ার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। দুই কোটি কৃষক স্বল্প খরচে কৃষি উপকরণ পাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে জানিয়ে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোরও কথা বলেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে কৃষি বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ এবং সম্প্রসারণকর্মীদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথাও বলেন তিনি।
মাছের উৎপাদন বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের কোনো নদ-নদী, বিল, পুকুর, ডোবা ও খাল যেন পরিত্যক্ত অবস্থায পড়ে না থাকে সেজন্য কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে এ কর্মসূচি জোরদার করে মাছের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:২০:১৯ ৩৮৫ বার পঠিত |