অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে নিরুপায় ভোলার এক ‘কিশোরী মা’

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে নিরুপায় ভোলার এক ‘কিশোরী মা’
শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৭



 

---

ইয়াছিনুল ঈমন, ভোলা জেলা প্রতিনিধি ।।ভোলাবাণী।। দ্বীপ জনপদ ভোলার লালমোহন উপজেলার কাশমি ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম চরমোহনের মেয়ে তাসলিমা আক্তার(১৬)। বাবা নূর মোহাম্মদ মাত্র ১২ বছর বয়সে পাশের ইউনিয়ন রাইচাদের মেহেদি নামে এক ছেলের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হন।
শৈশব পেরিয়ে সবে কৈশোরে পা দেওয়া তাসলিমা বিয়ের বছর না পেরুতেই অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ে। জন্ম দেয় এক শিশুর। স্বামী পবিত্র কোরআনের হাফেজ হলেও ঢাকায় এসে গাড়ির হেলপার হিসাবে কাজ নেয়। ছেলে আহাদকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে রাজধানী ঢাকায় পাড়ি জমায় তাসলিমা। তখনও সে জানতো না জীবনে কত বড় বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। স্বামী সংসারে কিছুদিন গড়াতে না গড়াতেই নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে তার ওপর।
বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসাবে টাকা এনে দিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন স্বামী মেহেদি। দরিদ্র বাবার কাছে হাত পেতে কিছু অর্থ এনে দিলেও তাতে খুশি নয় স্বামী। তাই ছোট্ট ছেলে আর কিশোরী স্ত্রীকে অথৈ সাগরে ফেলে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় মেহেদি।
ফোন করলে অপরপ্রান্ত থেকে ভেসে আসে নারীকণ্ঠ, যিনি নিজেকে পরিচয় দেন মেহেদির স্ত্রী হিসাবে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে তাসলিমার। ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকার পাশে থাকে তাসলিমা। নিরুদ্দেশ স্বামী মাঝে মধ্যে আসেন কিশোরী স্ত্রীকে মারধর করতে, কেন সে ফোন করে ‘জ্বালাতন’ করে। তার সামনে অন্য মেয়েদের নিয়ে স্বামীকে ঘুরে বেড়াতে দেখে তাসলিমা, কিন্তু সে নিরুপায়। ঘরে চাল নেই, তেল নেই, রান্না করার কোনো বাজার নেই। উপরন্তু বাসা ভাড়ার তিন হাজার টাকা দিতে বাড়িওয়ালার ক্রমাগত চাপ। স্বামীর কাছে ফোনে কেঁদেকেটেও কোনো লাভ হয়নি। অগত্যা বাসাবাড়িতে ঝি-এর কাজ শুরু করে তাসলিমা। কিন্তু সেই আয়েও সংসার চলে না। বাধ্য হয়ে ১৫ টাকার ঝুপড়ি ঘরে স্থানান্তর করে বাসা। তবে তারচেয়েও বড় দুশ্চিন্তা শিশুপুত্রকে নিয়ে।
কারণ চার বছরের ছেলে আহাদের পেট অনেকটা ফুলে থাকে। স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি খাবার খায় সে। প্রায়শই জ্বর থাকে শরীরে, দেখা দেয় অন্যান্য উপসর্গ। কোনো রকমে শিশু হাসপাতালে ভর্তি করালেও অর্থাভাবে ব্যাহত হয় ছেলের চিকিৎসা। চিকিৎসকরা তাসলিমাকে জানিয়েছেন, তার ছেলের প্লিহা বড় হয়ে গেছে। অপারেশন করতে অন্তত ৫০ হাজার টাকা লাগবে। অনন্যোপায় তাসলিমা ক্ষুধার্ত পেটে সারাক্ষণ ঘুরে বেড়াচ্ছে কেবল অসুস্থ ছেলের একটা গতি করতে, অন্তত কেউ যদি এগিয়ে আসেন তার সন্তানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে।
অশ্রুসজল চোখে তাসলিমার আকুতি, ‘ভাই মাইনসের বাড়িত কাম কইরা খাইতে পারমু। কিন্তু আমার পুতডার কী অইব? আফনেরা অর জইন্য কিছু একটা কইরা দেন’

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৮:৫০   ১৫৪ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ নির্বাচিত হলেন মুফতি মাও: মুজির উদ্দিন
চাহিদার চেয়ে উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকলেও ভোলায় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না গ্রাহকরা।
লালমোহনে জাগোনারী’র অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর ভোলায় মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে নামবেন জেলেরা
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে আরও ইউরোপীয় দেশ
তজুমদ্দিনে ৮৫৬টি গাছ কেটে রাস্তা চওড়া করার প্রস্তুতি সম্পন্ন ,স্থানীয়দের ক্ষোভ
ভোলায় ডিবির অভিযানে অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, অপহৃতরা উদ্ধার
গুজবে কেউ কান দেবেন নাঅটো চেয়ারম্যান হওয়ার দিন শেষ জনগনের ভোট লাগবে: মোহাম্মদ ইউনুছ
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪মনপুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৫ জন ॥ মোট প্রার্থী ১১ জন
তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি ॥

আর্কাইভ