ভোলার মাটিতে নান্দনিক মসজিদ

প্রথম পাতা » ইসলাম ও ধর্ম » ভোলার মাটিতে নান্দনিক মসজিদ
বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬



---ভোলা বাণী : বাইরে থেকে মনে হবে রাজ দরবার। ভুল ভাঙবে সুউচ্চ মিনারগুলো দেখার পর। চারপাশ ফুলে ফুলে সুশোভিত। লাল গালিচার মতো বিছানো ঘাস। সব মিলিয়ে স্বর্গীয় অনুভূতিতে আচ্ছন্ন করবে।

রাতে পাল্টে যাবে পুরো চেহারা। আলো আঁধারির মতো এক ধরনের প্রতিবিম্ব তৈরি হবে। যা নান্দনিকতা বাড়িযে দেবে নিমিষেই।

মসজিদটির নির্মাণশৈলীর মূল আকর্ষণ আল্লাহর একত্ববাদ ও ইসলামের ৫ মূলস্তম্ভ। দুতলা বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণে কোনো পিলার ব্যবহার করা হয়নি। নিচতলার দরজার দুই পাশে দুটি সিঁড়ি বেয়ে উঠে যেতে হবে উপরে। সাধারণ বিল্ডিংয়ের মতো সোজা নয় বরং চার কোণা থেকে উপর দিকে উঠে গেছে চিকনভাবে।

---মসজিদের সামনে আছে দুটি মিনার। দুই পাশে দুটি ও সামনে প্রবেশ পথে একটি গম্বুজ সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। মসজিদের পুরো ওয়াল মোড়ানো হয়েছে অত্যাধুনিক মার্বেল পাথরে।

মসজিদে প্রবেশ করলেই ভেতরটা আতকে উঠবে। মনে হবে ভিনদেশের কোনো ঝা চকচকে আইকনিক মসজিদে পা রেখেছি। কিন্তু না এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছে ভোলা জেলার উকিলপাড়ায়। উদ্যোক্তা মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব নিজাম উদ্দিন আহমদ। তারই প্রতিষ্ঠিত ‘নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনে’র সহায়তায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। নাম রাখা হয়েছে ‘নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন মসজিদ’।

ভোলা জেলার এ সংস্থাটি জন সাধারণের জন্য করেছে আরো নানারকম স্বেচ্ছাসেবী কাজ। বিভিন্ন হাসপতাল, বৃদ্ধ নিবাস, এতিমখানা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী, গরিবদের জন্য নগদ অর্থ সহায়তাসহ নানাভাবে উপকৃত হয়েছে মানুষ। লক্ষাধিক মানুষের ফ্রি চিকিৎসাও করেছে সংস্থাটি।

জানা যায়, মসজিদটি নির্মাণে ৫২ হাজার কর্মী ৭ বছর কাজ করেছেন। তবে মসজটি নির্মাণে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে তা জানা যায়নি। মসজিদ চত্বরে একটি হিফজখানা ও লাইব্রেরিও রয়েছে।

---রাতে এমন দেখাবে মসজিদটি

আগামী ৩০ ডিসেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের মাধ্যমে উদ্বোধন করা হবে মসজিদটি। এ দিন থেকেই সাধারণ মানুষদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেয়া হবে। জুমার নামাজের খুৎবা পাঠ করবেন ইসলামিক ফিকহ একাডেমির সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ আমিমুল ইহসান। নামাজের ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব (ভারপ্রাপ্ত) ও পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী।

নান্দনিক এ মসজিদ নির্মাণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে মেঘনা লাইফ ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন আহমদ  বলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির লাভের জন্যই আমাদের এ উদ্যোগ। মসজিদ আল্লাহর ঘর, আল্লাহর ঘরটাকে সুন্দর করে সাজাবো এটিই উদ্দেশ্য। সারা জীবন তো নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, পরকাল সম্পর্কে কিছুই খোঁজ রাখা হয়নি, আল্লাহ যেন তার ঘরের উসিলায় মাফ করে দেন আমাদের।

নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০০০ সাল থেকে এ ফাউন্ডেশনের যাত্রা। এ পর্যন্ত ভোলায় হাসপাতাল, এতিমখানা, স্কুলসহ অনেক সেবামূলক কাজ করেছে। এগুলো বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন হয়েছে।

এসব কাজের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, সারাজীবন অনেক পাপ করেছি। ধর্মের কথা শুনিনি, পালন করিনি। আল্লাহ যেন ক্ষমা করে দেন এ উদ্দেশ্যেই এ কাজগুলো করছি। আর কোনো উদ্দেশ্য নেই।

মসজিদটি নির্মাণে কত টাকা ব্যয় হয়েছে জানতে চাইলে নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, এর কোনো হিসাব আমার কাছে নেই। রাখিনি। বিভিন্ন মানুষ টাকা দিয়েছেন আমরা নির্মাণ করেছি। আমার ছেলে বউ ও প্রতিবেশীরা অর্থ দিয়েছে। মহব্বত থেকেই এ ঘর নির্মাণ করা। অর্থটা উদ্দেশ্য ছিল না।

৩০ ডিসেম্বর মসজিদটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট আলেম ও ফিকহবিদ মুফতি মুহাম্মদ আমিমুল ইহসান। মসজিদটি সম্পর্কে তার কাছে জানতে চাইলে  বলেন, আলহামদুলিল্লাহ বিভিন্ন দেশে সফরে গিয়ে দেখেছি এরকম চোখজুড়ানো অনেক মসজিদ রয়েছে। মালয়েশিয়াতে দেখার মতো এমন অনেক মসজিদ রয়েছে যেগুলোতে প্রতিদিন হাজারও মানুষ নামাজ পড়তে আসে। আমাদের দেশে এরকম মসজিদ নেই বললেই চলে। সেখানে ভোলার ‘নিজাম-হাসিনা মসজিদ’ ঐতিহাসিক স্থাপনার মতো ইতিহাসে স্থান করে নেবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৬:০৭   ২৭৯৮ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ইসলাম ও ধর্ম’র আরও খবর


নারীরা যেভাবে ইতেকাফ করবেন
পবিত্র মাহে রমজানের ৮ সুন্নত
আল্লাহর যেসব হক আদায় করা মুমিনের কর্তব্য
তুরাগতীরে দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত
আতিথেয়তায় আল্লাহর অনুগ্রহ মিলে যেভাবে
লিবিয়ায় মুসলিম বিজয়ের ইতিহাস
আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
কাদের জন্য ওমরাহ , এর ফজিলত ও কবুল হওয়ার শর্ত
ধর্মীয় সম্প্রীতির নতুন ভুবন: আমিরাতে একই কমপ্লেক্সে মসজিদ-গির্জা-সিনাগগ
পবিত্র হজ আজ লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর হবে আরাফাতের ময়দান

আর্কাইভ