বিশেষ প্রতিনিধি: ভোলা বাণী : ভোলা সদর হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় জেএসসি ফল প্রার্থীর শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে চিকিৎনাধিন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রোগীর উত্তেজিত স্বজনরা হাসপতালের আসবাব পত্র ভাংচুর করেছে। কি কারণে ওই রোগী মরা গেছে তার জন্য দুই সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভোলা সদর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের মধ্য রতনপুর এলাকার বাসিন্দা শাহজাহান মিয়ার কন্যা ও ভোলা পৌর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার ফলপ্রার্থী নুপুর আক্তার ডায়েরীয়ায় আক্তান হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ভোলা সদর হাসপাতালের ৫৫ নং বেডে ভর্তি হন। তখন তাকে ঔষধ ও সেলাইন দেয় ডাক্তাররা। তার এক ঘণ্টা পর রোগীর অবস্থা আরো অবনতি হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স তাকে একটি ইনজেকশন পুশ করলে কিছুক্ষণ মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই শিক্ষার্থী। জেএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যুর খবর শুনে তার স্বজনরা হাসপাতালে এসে ভিড় জমায় এবং উত্তেজিত হয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর চালায়।
রোগীর বাবা শাহজাহান অভিযোগ করেন, ডাক্তার ও নার্সদের ভুল চিকিৎসার কারণেই তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। তিনি দোষী ডাক্তার ও নার্সদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
নুপুর আক্তারের মা রুমা বেগম এবং স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালের আশ-পাশ ভারী হয়ে যায়। তিনি আহাজারি করে বলেন, আমার মেয়ে তার পরীক্ষার রেজাল্টটিও দেখে যেতে পারলো না।
এব্যাপারে ভোলা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা.রথিন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে নুপুর বেগম নামের এক শিক্ষার্থী ভর্তি হন। হাসপাতালে আসার পথে বেশ কয়েক বার বমি ও পাতলা পায়খান করে ওই শিক্ষার্থী। হাসপাতালে আনা হলে তখন ডাক্তাররা তাকে ঔষধ ও সেলাইন দেন। তার এক ঘণ্টার পর রোগীর অবস্থা অবনতি হলে তাকে বকর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স একটি ইনজেকশন পুশ করলে তার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই রোগীর মৃত্যু হয়। কি ইনজেকশন পুশ করা হয়েছে, তার মেয়াদ ছিল কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।
কি কারণে রোগী মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে বের করার জন্য হাসপাতালের ডা. সাম্মি আহমেদকে প্রধান করে দুই সদস্য বিশিষ্ট এক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্য হলেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.শরীফুল ইসলাম। রাতের মধ্যেই তদন্তের রিপোর্ট দেয়ার জন্য তিনি তাদের নির্দেশ দেন।
ভোলা পৌর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মাহমুদ বলেন, নুপুর আক্তার তার বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। সব সময় পড়া-লেখার প্রতি ছিল তার অধিক মনযোগ। তার এই অকাল মৃত্যুতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শোক প্রকাশ করেছে।
আগামী ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশিত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০৭:৩৪ ৫২৪ বার পঠিত |