।।ভোলাবাণী।। লালমোহন প্রতিনিধি: লালমোহনে আলোচিত সেই হিন্দু মেয়ে অন্তঃস্বত্বা দীপ্তির দায়ভার আর বহন করতে পারছেন না প্রশাসন কিংবা পৌর কাউন্সিলর রঞ্জ য় কুমার দাস।অবশেষে দীপ্তিকে শেষ পর্যন্ত চলে যেতেই হলো লালমোহন থেকে। এতোদিন যারা মিমাংসার আশ্বাস দিয়েছেন তারাও কেটে পড়েছেন। শেষ পর্যন্ত স্বামী উজ্জলকে খুঁজে বের করার দায়ীত্ব দেওয়া হল দীপ্তিকেই।
পৌরসভার কাউন্সিলর রঞ্জয় কুমার দাসের বাসায় আশ্রয়ে থাকলেও সোমবার বিকেলে তাকে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে দিয়ে আসেন কাউন্সিলর।
সেখান থেকে নড়িয়া, শরিয়তপুর এর একটি ঠিকানা দেওয়া হয়। উজ্জল সেখানে আছে। দীপ্তিকে দায়ীত্ব দেওয়া হয় উজ্জলকে খুঁজে আনতে। তার উপর নতুন করে যোগ হলো মামলা। উজ্জলের বাবা কালিপদ দাস দীপ্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যত গন্তব্যে মামলার দায় কাঁধে নিয়ে ছুটেছেন দীপ্তি রাণী।হতাশার ছাপ চোখে মুখে তার কেঁদে কেঁদে বলছেন কোথাও সঠিক বিচার নেই,সঠিক বিচারের কথা চিন্তা করাও পাপ।উল্লেখ্য গেল ৪ই জুন স্বামীর স্বীকৃতির আশায় লালমোহনে পাড়ি জমিয়েছেন স্বামী সংসার হারা অন্তঃস্বত্বা দীপ্তি রানী দাস।
লালমোহনের আখড়া বাড়ির সুদ খোর প্রভাবশালী ব্যবসায়ী কালিপদ বাবুর পুত্রবধু দীপ্তি রানী দাস(২১) বিয়ের ১ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি।তাই গেল চার পাঁচ দিন যাবত স্বীকৃতি পাবার আশায় শ্বশুরের বসতি ঘরের সামনে হাজির হয়।দীপ্তিকে দেখা মাত্রই ঘরের দরজা বন্ধ করে পালিয়েছে কালিপদ এবং তার অকর্মণ্য গুণধর ছেলে উজ্জ্বল দাস।প্রথমদিন অনশন করে কাটিয়েছেন দীপ্তি,ঘরেতে থাকা কারও মন গলেনি হয়নি এক টুকরো দয়া।
দীপ্তির সাথে কথা বলে জানা যায় ঢাকার গাজীপুরের মনিপুর এলাকায় থাকা কালে পরিচয় হয় উজ্জ্বল দাসের সাথে,দীপ্তির বাবা প্রদীপ কৃষ্ণ ছোটবেলায় তাকে মানুষ করতে পারেনি মা লিজা রানী মারা যাবার পর অন্যের কাছেই বড়ো হয় সে।যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে তখনই দীপ্তি জানতে পারে নিজের আসল পরিচয়।দীপ্তি আরও জানান এক বছর পূর্বে মন্দিরের পুরোহিতের সামনেই উজ্জ্বল আমাকে বিয়ে করে।আমার প্রথম সন্তান নষ্ট করে দিয়েছে উজ্জ্বল এর কিছুদিন পর আমাকে ছেড়ে চলে আসে,অনেক কষ্টে ঠিকানা সংগ্রহ করে আমি শ্বশুর বাড়িতে এসেছিআর এখন আমাকে কেউ মেনে নিচ্ছে না।
এদিকে দীপ্তির স্বীকৃতির জন্য সোচ্চার পুরো উপজেলা বাসী কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে কালিপদ বাবুর অঢেল সুদের টাকা।এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মো:সামছুল আরিফ বলেন দীপ্তির বিষয়টি জেনেছি তাই থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জয় কুমার দাসের বাড়িতে রেখেছি।তিনি আরও বলেন আমরা কালিপদ এবং তার ছেল উজ্জ্বল দাসকে খুঁজছি।তারা হাজির হলেই বিষয়টি মিমাংশা করা হবে।এদিকে দীপ্তির বিষয় সম্পর্কে লালমোহন থানার অফিসার ইনচার্জ মো:হুমায়ুন কবির বলেন দীপ্তি এ ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ করেনি আমরা ইউএনও স্যারের কাছে শুনে তার পাহারার জন্য দুজন পুলিশ সদস্য দিয়েছি ।
এ ব্যাপারে কালিপদ বাবু এবং উজ্জ্বল সাথে কথা বলতে চাইলে তাদের ফোন বন্ধের কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।দীপ্তির বিষয়টি নিয়ে উপজেলার সাধারণ মানুষ বলছেন ভিন্ন কথা তাদের উক্তি কালিপদ বাবুর সুদের টাকার কাছে প্রশাসন হেরে গেছে নইলে এতোদিনেও একটি অসহায় অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের প্রকৃত বিচার কিভাবে না হয়।দাস।আর এসবের সবই এখন রূপকথা।দীপ্তির ভাগ্যের চাকা গুরলোই না বরং হতাশার ছাপ আর মামলার দায় নিয়ে ছুটছেন অচেনা গন্তব্যে ।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৯:৫৭ ৪২৬ বার পঠিত |