আধুনিকতার যাতাকলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবান্নের উৎসব

প্রথম পাতা » ফটোগ্যালারী » আধুনিকতার যাতাকলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবান্নের উৎসব
বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০



সাব্বির আলম বাবু।।ভাঁপা পীঠারে…তোরে খাইতে গিয়া হা…আমার মুখটা পুইরা গেছে রে… জনপ্রিয় এই গানের রেশ ধরে আমাদের মনের গহীন কোনে ভেসে ওঠে বাঙ্গালীর শীত কালীন নবান্নের পীঠা উৎসবের কথা। এক সময়ে ভাওইয়া-ভাটিয়ালী-মুর্শীদি গান গুন গুন করে গাইতে গাইতে অগ্রহায়ন মাসে মাঠ ভর্তি সোনালী রংয়ের পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত থাকতো কৃষক।

আধুনিকতার যাতাকলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবান্নের উৎসব

মাথায় করে ধানের আঁটি বয়ে এনে বাড়ীর আঙ্গিনায় জড়ো করে পরে গরু দিয়ে তা মাড়াই করে ধান ও খড়-কুটা আলাদা করতো। সেই খড়-কুটা দিয়ে কেউ ঘরের ছাউনী দিত আবার কেউ গরুর খাবার হিসেবে সংরক্ষন করতো। এরপরই কৃষানীদের কাজ শুরু হয়ে যেত, যেন সাজ সাজ রব পড়েছে, তারা সংসারের দ্বায়িত্ব সামলে কিছু ধান বিক্রি বা সংসারের চাল-ভাতের জন্য গরম পানিতে সিদ্ধ করতো আবার কিছু ধান পীঠা তৈরীর জন্য সিদ্ধ ছাড়া রেখে দিতো যাকে স্থানীয় ভাষায় (আলবা) ধান বলা হয়। কিছু ধান আবার জমিতে পরবর্তী ধানের চারা রোপনের জন্য বীজতলা হিসাবে সংরক্ষন করতো। এসকল কর্মকান্ডের সঙ্গে গ্রামের কৃষানীরা আলবা ধানকে ঢেঁকিতে ছেঁটে ঘরে-ঘরে, বাড়ীতে-বাড়ীতে নব অন্নের বাহারী নকশার পুস্টিমান সম্পন্ন পীঠা তৈরী করা বা নবান্নের উৎসব চলতো। বিকাল থেকে রাত ব্যাপী নাচ-গানের পাশাপাশি একজন আরেক জনের ঘরে বা বাড়ীতে বেড়াতে যেত অথবা পীঠা পাঠাতো। এতে নিজেদের মাঝে আন্তরিকতা-হৃদ্যতা প্রকাশ পেতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার যাতাকলে বাংলার বহুদিনের ঐতিহ্যবাহী নবান্ন উৎসব আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। ইরি-বোরো ধান, সার-কীট নাশকের আগ্রাসনে মুনাফা লোভী কৃষকের কারনে আউস, আমন, গীয়স, কালিজিরা সহ বিভিন্ন জাতের পুস্টিমান সমৃদ্ধ ধান কম মুনাফা বিধায় এগুলো চাষে অনাগ্রহী। উপরোন্তু প্রযুক্তির উৎকর্ষকায় উরকা, ট্রাকটর সহ নানা মেশিনের সাহায্যে কম খরচে, স্বল্প সময়ে ক্ষেত হতে ধান কাটা থেকে শুরু করে বাড়ীতে চাল হয়ে পৌছানো পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়াই মেশিনে হয় এমন কি পীঠা তেরীর চালের গুড়াও মেশিনে হয়। তাই সেই নবান্নের আমেজ এখন আর পাওয়া যায় না। অপর দিকে যত্রতত্র অতিরিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগের ফলে জমির উর্বর শক্তি ক্রমেই নস্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন দিনে দিনে কমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলার সুজলা-সুফলা-শস্য-শ্যামলা মাটি মরুভূমিতে রুপান্তর হবে। তাই সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাগুলোর এ বিষয়ে কাজ করা জরুরী বলে মনে করেন সুশীল সমাজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৫:৪১   ২০২ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ফটোগ্যালারী’র আরও খবর


এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥
বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় মেরিনা তাবাসসুম
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষেকর্মস্থলে ফিরছে মানুষ, ইলিশা ঘাটে যাত্রীদের চাপ
ঘনিষ্ঠ দৃশ্য করতে গিয়ে বিপাকে বিপাশা
সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
ভোলায় ঈদ উপলক্ষে আকতার হোসেনের ২ হাজার দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষকে সহায়তা প্রদান
ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তায়ভোলায় ঈদে যাত্রীদের ভোগান্তি লাগবে পুলিশের ফ্রি বাস সার্ভিস

আর্কাইভ