তজুমদ্দিন প্রতিনিধি ॥ ভোলাবাণীঃ
ভোলার তজুমদ্দিনে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের আনুতোষিক বিলের ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩০৫ টাকা তুলতে দুই প্রধান শিক্ষক বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভোক্তভোগী সাবেক প্রধান শিক্ষক কানন দে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বাদলীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানন দে বলেন, ২০১৫ সালে সরকার ঘোষিত জাতীয় বেতন স্কেলের আনুতোষক বিল প্রাপ্ত হন এবং একই বছর তিনি চাকুরী থেকে অবসরে যান। ওই সময় তিনি তার প্রাপ্ত জাতীয় বেতন স্কেলের আনুতোষক বিলটি উত্তোলন করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তার সাথে একই সময় অবসরে যাওয়া অন্য শিক্ষকরা উক্ত বিলটি উত্তোলন করলেও কানন দে উপজেলা শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে তাকে বিলটি দেয়া যাবে না বলে জানিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা।
পরবর্তীতে তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আতিকুল ইসলামের কাছে দীর্ঘদিন ধরে এ ব্যাপারে কোন সাড়া না পেয়ে তারই নিয়োগ করা দুই প্রতারক শিক্ষক শশীগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফরহাদ হোসেন ও ২৮নং চাঁদপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিতালী দত্তের সাথে যোগাযোগ করে।
পরে ফরহাদ হোসেন শিক্ষা অফিস থেকে কানন দে’র সার্ভিস বুক বাসায় নিয়ে যায়। সার্ভিস বুক নেয়ার দু’দিন পর কানন দে’কে জানায় তার জাতীয় বেতন স্কেলের আনুতোষক বিল তোলা যাবে। এরপরেই শুরু হয় ওই দুই প্রধান শিক্ষকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রতারণা। পরে বিভিন্ন অফিসের নামে টাকা দাবী করেন প্রধান শিক্ষক ফরহাদ ।
এক পর্যায়ে অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কানন দে মিতলী দত্তের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা করে দুই কিস্তিতে ফরহাদকে এক লক্ষ টাকা প্রদান করেন। এতো কিছুর পরও কানন দেকে জানানো হয়নি তার কত টাকা আনুতোষক বিল হয়েছে। কানন দে আরো জানান, একদিন তিনি চাঁদপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে মিতালী দত্তের সামনে বসে ফরহাদকে ফোন করলে তিনি এসে সোনালী ব্যাংক তজুমদ্দিন শাখা থেকে ৭ লক্ষ টাকা এনে তাকে দেন। ৭ লক্ষ টাকা দেয়ার পরে ফরহাদ ও মিতালী দত্ত আরো ৯২ হাজার টাকা খরচের দাবী করেন এবং তার কাছ থেকে নিয়ে নেন। প্রধান শিক্ষক ফরহাদ ও মিতালী দত্ত নিজেদের খরচ বাবদ পরবতীর্তে আরো ৩০ হাজার টাকা নেন।
তবে ফরহাদ কানন দের আনুতোষিক বিল বাবদ ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন করলেও তাকে দেন ৭ লক্ষ টাকা। আনতোষক বিল তুলতে ফরহাদ হোসেন ও মিতালী দত্ত কানন দে’র কাছ থেকে নগদ নেয় ২ লক্ষ ২২ হাজার টাকা ও বিল থেকে নেয় ৪৮ হাজার ৩০৫ টাকাসহ সর্বমোট নেয় ২ লক্ষ ৭০ হাজার ৩০৫ টাকা নেয়।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধান শিক্ষক কানন দে’র আনুতোষক বাবদ ৭ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩০৫ টাকার বিল সোনালী ব্যাংক তজুমদ্দিন শাখায় প্রেরণ করা হয়। সে অনুযায়ী উক্ত বিল ব্যাংক থেকে প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন উত্তোলন করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফরহাদ হোসেন বলেন, কানন দে’র কত টাকা আনুতোষিত বিল উত্তোলন করছি এই মুহুর্তে আমার মনে নেই। এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, তবে আমি যা করেছে তার আত্মীয় মিতালী দত্তের অনুরোধে করেছি।
মিতালী মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তবে কিছুক্ষণ পর এই ০১৭১৪০৯৮৬৪৮ নম্বরটি থেকে ফোন করে তার ভাই পরিচয়ে জানান তিনি অসুস্থ্য।
তৎকালীন শিক্ষা অফিসার আতিকুল ইসলামের ব্যবহৃত নম্বরে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ বলেন, এমন ঘটনা খুবই দুঃখ জনক। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৮:১৬ ২০৫ বার পঠিত |