

বৃহস্পতিবার ● ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » দক্ষিণ আইচা » চরফ্যাশনে নিবন্ধন ফি জমা না দেয়ায় বন্ধ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইডি,জন ভোগান্তি চরমে
চরফ্যাশনে নিবন্ধন ফি জমা না দেয়ায় বন্ধ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইডি,জন ভোগান্তি চরমে
চরফ্যাশন অফিস ॥ভোলাবাণী।।ভোলার চরফ্যাশনের চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদে জন্ম নিবন্ধন ফি বাবদ জনগনের নিকট থেকে আদায়কৃত ছয় লাখ টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাত করায় জন্ম নিবন্ধন আইডি বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ। ফলে ওই ইউনিয়নের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সেবা গত বিশ দিন যাবত বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান শফি উল্যাহ হাওলাদার এর সত্যতা স্বিকার করেছেন।
১৪ ফেব্রুয়ারী চ/মা/ইউপি ৪৭-২০২৩স্মারকে ইউপি চেয়ারম্যান শফি উল্যাহ হাওলাদার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, ওই ইউনিয়নের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি বাবদ প্রাপ্ত ছয় লাখ টাকা ততকালীন সচিব মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাত করে অন্যত্রে বদলী হয়ে যান। একারণে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইডি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তিনি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ফি‘র ছয় লক্ষ টাকা সাবেক সচিব সিদ্দিকুর রহমান কতৃক পরিশোধ পুর্বক জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইডি খোলার ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানান।এদিকে গতকাল বুধবার চরমানিকা ইউপি‘র ততকালীন সচিব বর্তমানে লালমহনের বদরপুর ইউপিতে কর্মরত সচিব মো. সিদ্দিকুর রহমান স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন,তিনি লালমহনে বদলী হয়ে যাওয়ার তারিখ থেকে পূর্বের তিন বছর চরমানিকা ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল্যাহ হাওলাদার তাকে বাদ দিয়ে গ্রাম আদালতের সাচিবিক দায়িত্ব তৃতীয় ব্যক্তি দিয়ে পরিচালনা করেন। ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত ভিজিডি, ভিজিএফসহ অন্যান্য ত্রানের তালিকা প্রস্তুত করণ, উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে মালামল উত্তোলন ও বিতরণ কার্যক্রম সচিবকে বাদ দিয়ে নিজেই করছেন। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে মালামাল রক্ষিত গুদামের চাবিও নিজের কাছে রাখেন। সচিবকে বাদ দিয়ে পরিষদের তথ্য উদ্যোক্তা মনিরের স্ত্রী ফাতেমা আক্তার রুমির নামে পাসওয়ার্ড আইডি খুলে জন্ম মৃত্যু নিবন্ধন কাজ করতেন। জন্ম সনদে সচিবের স্বাক্ষরের অপশন থাকলেও চেয়ারম্যানের একক স্বাক্ষরে গোপনে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়ার কারণে বিগত তিন বছর জন সাধারণকে দেয়া জন্ম সনদে সচিবের স্বাক্ষরের অপশন স্বাক্ষর বিহীন রয়েছে বলে দাবী করেছেন সচিব সিদ্দিকুর রহমান।
২০২১সনের ৩০জুন ঐ আইডি দিয়ে চেয়ারম্যান শফি উল্যাহ হাওলাদার তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মনিরের মাধ্যমে মোসা, জাকিয়া সুলতানা উর্মি এবং মোহাম্মদ রিফাতুল করিম নামের দুই জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেন। এঘটনায় ২০২২সনের ২৩মে ৩৫০নং স্মারকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চেয়ারম্যান এবং সচিবকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে সচিব তার নামে জন্ম নিবন্ধন পাসওয়ার্ড আইডি না থাকার বিষয়টি অবগত হন। পরবর্তীতে সচিবের ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তার অজান্তে তার নামে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে জন্ম নিবন্ধন পাসওয়ার্ড আইডি খুলে চেয়ারম্যান তার একক স্বাক্ষরে জনসাধারণকে জন্ম নিবন্ধন দিয়েছেন।
সচিব সিদ্দিকুর রহমান চরমানিকা ইউপি থেকে পার্শ্ববর্তী লালমহন উপজেলায় বদলী হয়ে যাওয়ার চার মাস পর চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী চরমানিকা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মনির ওটিপির জন্য তার কাছে গেলে তিনি তার অজান্তে করা পাসওয়ার্ড আইডির ওটিপি দিতে অস্বিকৃতি জানান। সচিব ওটিপি না দেয়ায় ১৪ ফেব্রুয়ারী চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট জন্ম নিবন্ধন সনদের ৬লক্ষ টাকা এবং তথ্য উদ্যোক্তা মনিরের নিকট থেকে ২লাখ ২৩হাজার টাকা ও অডিট ফি বাবদ ১লাখ ৪০হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন।
চেয়ারম্যান শফি উল্যাহ হাওলাদার তার বিরুদ্ধে সাবেক সচিব সিদ্দিকুর রহমানের আনিত অভিযোগ অস্বিকার করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান জানান, চেয়ারম্যান শফি উল্যাহ হাওলাদার এবং সাবেক সচিব সিদ্দিকুর রহমানের অভিযোগ সমুহ যাছাই করে দেখা হবে।