ভালোবাসলে হৃদয় শুণ্য হয়

প্রথম পাতা » সর্বশেষ সংবাদ » ভালোবাসলে হৃদয় শুণ্য হয়
সোমবার, ১৩ মে ২০১৯



ভোলাবাণী সাহিত্যঃ

---লেখক : নায়লা পাইলট

(পর্ব-০৩ - শেষ পর্ব পর্যন্ত)

……………………………

আজ ১৬ ই ডিসেম্বর খেলার মাঠে কুচকোআওয়াজ হবে শীলা গার্লস গাইডের নেতৃত্ব দিবে হাসান দিবে স্কাউটে । কুচকো আওয়াজে প্রথম স্হান শীলার টিম ও হাসানের টিম দ্বিতীয় স্হান অধিকার করেছে। সবাই একসাথে ঝালমুড়ি সমুচা খেয়ে রাতে অডিটোরিয়ামে তাদেরকে মন্ত্রী পুরস্কার হাতে তুলে দিলেন।মাঝে এস.এস.সি পরীক্ষার জন্য শীলা পড়াশুনা নিয়ে দিন রাত এক করে কঠোর পরিশ্রম করছিল। পড়াশুনা তার ছিল ধ্যান সাধনা। হাটি হাটি পা পা করে দরজায় কড়া নাড়ল পরীক্ষা। খুব ভোরে আমি উঠে হাত মুখ ধুয়ে পড়া রিভিশন দিয়ে নাস্তা করলাম। মা আমায় কোরআন শরীফ পড়ে ফু দিয়ে দিলেন এবং বাবার সাথে বাইকে চড়ে আমি পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌছে নিজের সিটের পেছনে তাকে দেখে অবাক হলাম মনে মনে বল্লাম আজ হেডস্যার অনেক পেটাবে হাসানকে। একটু পরে দেখি সব বন্ধুরা একই রুমে ভাল ছাত্র ছাত্রীদের একখানে স্কুল কতৃপক্ষের টিম বসিয়েছেন ফলাফল ভাল হবার জন্য। পরীক্ষা সবকয়টি খুব ভাল হলো আমাদের। তিন মাসে আমি বাবার সাথে নানা বাড়ি চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করে আসলাম। আমি রাজশাহী বোর্ডের মধ্যে ৫ম স্হান অর্জন করলাম আর হাসান জিপিএ ৫। আমি কলেজে ভর্তি হলাম আর সে তার বাবার সাথে ঢাকা নটরডেম কলেজে ভর্তি হল।অনেকদিন আর দেখা হল না কিন্তু সে মাঝে মধ্যে বন্ধু বান্ধব বিশেষ করে আমাকে শুধু দুর থেকে দেখার জন্য আসত। কলেজে বসে থাকত সবাই মিলে আমরা আড্ডা দিতাম।একদিন আমার সাথে জোর করে কথা বলার কারণে বায়োলজি হাবিব স্যার তাকে ডেকে শাসানো শুরু করলেন আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন কে এই ছেলে আমি ভয়ে বললাম আমার চাচাতো ভাই স্যার বুঝতে পেরে ও সেদিন ওকে শাস্তি না দিয়ে বকা দিয়ে ছেড়ে দিলেন। ও লজ্জায় মাথা নত করে চলে গেল এবং আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে গেল বন্ধু মহলে তাকে বাচানোর জন্য। আজ ১৫ ই মে আমার জন্মদিন ও ঢাকা থেকে ফোন করে সবাইকে আমার জন্মদিনের কথা বলেছে এবং আমাকে সব বন্ধুরা সারপ্রাইজ পার্টি দেবে সে এরেন্জমেন্ট ও ট্রিটের ব্যবস্হা সে করবে সবাই আমার জন্মদিন নিয়ে ব্যস্ত আমাকে বুঝতে না দিয়ে তারা বলে কিনা প্রাকটিকাল খাতা ও ক্যামেস্টরি মাসিক পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত।আমি কলেজে ইংরেজি হলে যাবার সাথে সাথে সবাই সুসজ্জিত রুমে আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে কেক কেটে সেদিন ইংরেজি স্যারের অফ ছিল এই সুযোগে রুম ফাকা ছিল সবাই অনেক উপন্যাস, কলম, সুন্দর সুন্দর গিফট দিল।হাসান অনেক বড় ফুলের তোড়া আমাকে দিয়ে সারপ্রাইজড করে দিল।সবার ট্রিট বিকেলে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে ছিল। আমরা ক্লাস শেষ করে যে যার বাসায় চলে গেলাম। আমার ছোট বোন টিনা সব গিফট দেখে খুব খুশি হলো বলল তোর বন্ধু বান্ধবীরা তোকে তো অনেক ভালবাসে। ফুলের তোড়াটা বললাম যে আমাকে পপি দিয়েছে। বিকেলে হইহৌল্লোর করে খুব মজা করে তৃপ্তির সহিত ফ্রাইড রাইসের সাথে চিকেন, চিলি ওনিয়ন বীফ, স্পারাইট এগ রোল খেয়ে আমাকে বন্ধুরা ও কাকলী এগিয়ে দিয়ে চলে গেল।

(পর্ব ০৪)

…………………..

আজ শনিবার সৈকত ছুটির দিনে রেডি হয়ে জিন্স টি শার্ট পড়ে সুরভীর ফোন পেয়ে বেড়িয়ে গেল লাঞ্চ করবে বাইরে হোটেলে ২০৫ নং ভি আই পি রুম বুকিং করেছে শয্যা সঙ্গীনির জন্য শীলার কলিজা ফেটে খা খা করছে বুকটা রৌদ্রময় চৌচির হয়ে ফেটে যাচ্ছে তখনি হাসান কল করল আমাকে আমার সাথে কথা বলে বিকেলে আমাকে গার্ডেনে বেড়াতে ডেকেছে। আমায় একাকিত্ব কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তাই আমিও রিলাক্স মুডে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম গার্ডেনের দরজায় হাসান দাড়িয়ে ছিল আমরা দুজন কফি হাউসে বসে অতীত স্মৃতি চারন করছিলাম।আমার চোখের দিকে তাকিয়ে সে বলল তুমি কি সুখে আছো আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি কিছু একটা লুকিয়ে রেখেছ আমার থেকে? তখনি আমি অঝোর ধারায় বৃষ্টি ছোঁয়া দিলাম আঁখি দুটো সিক্ত হয়ে পড়ল। হাসান বলছে তুমি এতক্ষণ বাহিরে আর তোমার স্বামী একটি ফোন ও করেনি। সব কথা শুনার পর হাসান আমাকে জানাল আমি আমার ভালোবাসাকে শেষ হতে দেব না। তোমাকে আমি তোমার সন্তান সহ বিয়ে করে স্ত্রীর মর্যাদা দিব। আমি বললাম সেটা কি করে সম্ভব? হাসান বলল ভালোবাসার কাছে ছলনা সবসময় হেরে যায়।আমি বাসায় রাতে ডিনার করে এসে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম রাতে আমার স্বামী আসল অতিরিক্ত ড্রিংক করে আমি ও জানিয়ে দিলাম যে আমি ডিভোর্স চাই। সে হতভম্ব হয়ে আমাকে বেদম পেটানো শুরু করল আমি ও অনেক সাহস জাগিয়ে থানায় কল করলাম সাজ্জাদ ওসি আমার ফ্রেন্ড ছিল সে এস আই শফিককে ফোর্স নিয়ে পাঠিয়ে দিল সরেজমিনে তদন্ত করে তাকে হাজতে রেখে দিল। সে অনেক পা হাত ধরল ক্ষমা চাইল আমি জানি এগুলো সব মায়া কান্না, অভিনয়। আমি ডিভোর্স লেটার তাকে দিয়ে বাবার বাড়ি চলে এলাম।মা বাবা সব শুনে আমাকে বুকে টেনে নিলেন।

(পর্ব ০৫)

……………………….

আমাদের পুকুরের পাড়ে বসে আছি আমি। তখনি হাসান কল করে বলল তার বাবা মা আজ আমাদের বাড়ি আসবে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।আমি মাকে বললাম মা বাবাকে তাড়াতাড়ি বাজারে পাঠালেন। রকমারী রান্না সরষে ইলিশ, পোলাও, চিংড়ির মালাইকারি, মালাইকোপ্তা, নার্গিস কাবাব,খাসির রেজালা,বীফ ভুনা। বিকেলের নাস্তায় কেক, পুডিং, কিমামী সেমাই, গাজরের হালুয়া, বিভিন্ন ধরনের ফুল পিঠা, পায়েশ সবাই তৃপ্তির সহিত খেয়ে বিয়ের ডেট সাত দিন পড়ে দিলেন।নববধূ সাজে আমাকে আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি বরণ করে নিলেন।আমরা দুজন থাইল্যান্ড হানিমুনে গেলাম।তারপর সিলেটের বাড়িতে নিজের সংসার নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে সাজালাম।আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি গ্রামের বাড়িতে ছোট ছেলে বৌমাকে নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকতেন। আমার দেবর কলেজের লেকচারার দেবরের বৌ স্কুল টিচার। পাশাপাশি আমার একমাত্র ননদ থাকে মাঝে মধ্যে এসে খোঁজখবর নিয়ে যায়।আমার ফুটফুটে ছেলে আমার কোল জুড়ে এল হাসান খুশিতে বাগানে সবাইকে মিষ্টিমুখ করাল এবং সাতদিনের দিন আকিকাতে তার বাবা, মা,ভাই, বোন, আত্মীয় স্বজনরা সবাই বাবুকে দোয়া করলেন। বাগানের কর্মীরা শ্রমিকরা সবাই তৃপ্তির সহিত আপ্যায়ন করল।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৫৫:৪৭   ২৮৭ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সর্বশেষ সংবাদ’র আরও খবর


তজুমদ্দিনে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে ৩শ কেজি পাঙ্গাসের পোনা আটক ॥
প্রাইম ইউনিভার্সিটি ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত
ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ আপনারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ লালমোহনে দোয়াত কলম সমর্থকদের ওপর শালিক সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় চলছে বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ড্রেজারে সরকারি জলাশয়ের মাটি খনন ঝুঁকিতে মুজিব কিল্লা
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে শীর্ষে পিরোজপুর জেলা
ভোলা শহরে নেই কোন গণশৌচাগার ॥ জনগনের ভোগান্তি চরমে

আর্কাইভ