অর্থআত্মসাৎ, শ্লীলতাহানী ও জালজালিয়াতির অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিন ছাগলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার বরখাস্ত

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অর্থআত্মসাৎ, শ্লীলতাহানী ও জালজালিয়াতির অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিন ছাগলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার বরখাস্ত
বুধবার, ১০ এপ্রিল ২০১৯



---ভোলাবাণী ॥বিশেষ প্রতিনিধি।।

ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার ছাগলা হাসনাইন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ আবদুল্যাহকে চুড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়েছে। অর্থ আতœসাৎ, শ্লীলতাহানী, জালজালিয়াতি ও দায়িত্ব পালনের অবহেলাসহ নানা অভিযোগে তাকে মাদ্রাসা ম্যানেজিং (পরিচালনা) কমিটি বরখাস্ত করেন। এরপরও তিনি জাল রেজুলেশনের মাধ্যমে রূপালী ব্যাংক ব্যাবস্থাপকের জোগ সাজেসে বেতন উত্তোলন করে দায়িত্বে আসার নানা অপকৌশলে ব্যাস্ত রয়েছেন। এতে ভেঙ্গে পরছে মাদ্রাসার চার শতাধীক শিক্ষার্থীর শিক্ষা ব্যাবস্থা।

মাদ্রাসা ম্যানেজিং (পরিচালনা) কমিটির রেজুলেশন, অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে জাানা যায়, ২০১১ সালে ভোলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার ছাগলা হাসনাইন ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার পদে যোগদান করেন আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ আবদুল্যাহ। তার পর থেকেই তিনি অর্থ আতœসাৎ, জালজালিয়াতি, শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে অর্থ আতœসাৎ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে শ্লীলতা হানী, বিয়ের প্রলোভনে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পরেন।
গত ০৩/০৩/২০১৮ ইং মাদ্রাসার সহকারী মৌলভীকে চাকুরীচ্যুতির নানা ভয়-ভীতি দেখিয়ে শ্লীলতা হানী করে। ১৩/০৮/২০১৮ ইং ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে না প্রলোভনে শ্লীলতা হানি করে। জে এস সি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষায় সুযোগ সুবিদা দেয়ার কথা বলে শ্লীলতা হানির চেষ্টা কওে এক শিক্ষার্থীর।
২৯/০৫/২০১৮ ইং শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অডিটের নাম করে সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের থেকে ১,৯২,৪০০/= একলক্ষ বিরানব্বই হাজার চারশত টাকা উত্তোলন করে অডিট কমিটিকে না দিয়ে আতœসাৎ করে। মাদ্রাসার উদ্দীপনা পুরস্কারের ১,০০০০০/= এক লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আতœসাৎ করে। মাদ্রাসার বিভিন্ন উন্নয়নের নাম করে ৮৪,০০০/=চুরাশি হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ সকল অভিযোগ লিখিত ভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিদের মাধ্যমে এবং মাদ্রাসার সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে লিখিত ভাবে মাদ্রাসা ম্যানেজিং (কার্যকরী) কমিটি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরন করা হয়। তার প্রেক্ষিতে ০৮/১১/২০১৮ ইং তদন্ত করেন বোরহান উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আঃ কুদ্দুস, ২৩/১০/২০১৮ইং তদন্ত করেন বোরহান উদ্দিন উপজেলা একাডেমীক সুপার ভাইজার আয়েশা ছিদ্দিকা, ম্যানেজিং (পরিচালনা) কমিটি ১৬/১০/২০১৮ইং মির্জাকালু সিনিয়র মাদ্রাসার প্রভাষক শাহ মোঃ হেলাল উদ্দিনকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি মাধ্যমে এবং ০৮/০৯/২০১৮ ইং মোঃ বাচ্চু নক্তিকে আহবায় করে তিন সদস্যে কমিটির মাধ্যমে পৃথক দু’টি তদন্ত করান। সকল তদন্তেই তদন্ত কমিটি মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত সুপার আবুল ফয়েজ মোহাম্মদ আবদুল্যাহর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পান।
যার কারনে তদন্ত কমিটি তাকে অপরাধি সাব্যস্ত করে লিখিত ভাবে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ০২/০৯/২০১৮ইং মাদ্রাসা ম্যানেজিং (পরিচালনা) কমিটি সুপারকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে কেন চুড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত করা হবেনা এ মর্মে কারন দর্শনোর জন্য জবাব চাওয়া হয়।
পরবর্তীতে তার কারন দর্শনোর জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় ১১/১১/২০১৮ ইং তারিখে মাদ্রাসা ম্যানেজিং (পরিচালনা) কমিটি তাকে চুড়ান্ত ভাবে চাকুরী থেকে অব্যহতি প্রদান করেন। নিয়ম অনুযায়ী এ অব্যহতি অনুমোদনের জন্য গত ১৩/১২/২০১৮ইং তারিখ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর জমা দেন। যার ডকেট নংয়-২১৮১২১৩০০৮৬। এর পরও বরখাস্তকৃত সুপার রুপারী ব্যাংক বোরহান উদ্দিন, কুতুবা শাখার ব্যাবস্থাপক আবুল কালাম আযাদ ও সভাপতির অববৈধ এবং মিথ্যা রেজুলেশনে অবৈধ ভাবে ভারপ্রাপ্ত সুপারের ব্যাংকে দাখিলকৃত বিল বাতিল করে, স্বাক্ষর কেটে, কোন শিক্ষকের স্বাক্ষর ছাড়াই বরখাস্তকৃত সুপারকে জানুয়ারী ২০১৯ ইং মাসের বেতন প্রদান করেন।
যা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তদন্তে প্রমানিত হয়। বিষয়টি দুদকের তদন্তাধীন রয়েছে। এসব বিষয়ে বোরহান উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (চলতি দায়িত্ব) জিতেন্দ্র কুমার নাথ বলেন, সুপার বর্তমানে বরখাস্ত অবস্থায় আছে। কোন মাসে জালজালিয়াতি করে পুরো বেতন উত্তোলন করলে এটা ঠিক করেনি।
তবে সভাপতি তার বরখাস্ত প্রত্যাহার করতে চায়। এখন মাদ্রাসা বোর্ডের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত বিবেচ্য বিষয়। মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী সুপারকে চুড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত করার কথা স্বীকার করে বলেন, মানবিক কারনে তাকে পূনরায় চাকুরীতে আনতে চাই।
ব্যাংক ব্যাবস্থাপক আবুুল কালাম আযাদ দুদকের তদন্তের কথা স্বীকার করে বলেন, আমি ইচ্ছা করলে কোন শিক্ষকের স্বাক্ষর ছাড়াই বেতন দিয়ে দিতে পারি। মাদ্রাসার বরখাস্তকৃত সুপারের ব্যাবহৃত ০১৭১৮৯৯২৮৭৭ এ মোাবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নী।
ভারপ্রাপ্ত সুপার কে.ইউ.এম নজরুল ইসলাম বলেন, কমিটির সিদ্ধান্তের আলোকে আমি ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে আছি। বরখাস্তকৃত সুপারের হুমকীতে দায়িত্ব পালন করা ও শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পরিবেশ বজায় রাখা কষ্টকর।
এ অবস্থায় মাদ্রাসার চার শতাধীক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চয়তার দিকে ঢলে পরছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:১৬:০০   ৩২৩ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


বীজ পাইনি সার দিয়ে কি করবো ? চরফ্যাশনে কৃষকের প্রশ্ন
চরফ্যাশনে বিদ্যুৎ স্পৃস্টে শিশুর মৃত্যু
তজুমদ্দিনে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে ৩শ কেজি পাঙ্গাসের পোনা আটক ॥
প্রাইম ইউনিভার্সিটি ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত
ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ আপনারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ লালমোহনে দোয়াত কলম সমর্থকদের ওপর শালিক সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় চলছে বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ড্রেজারে সরকারি জলাশয়ের মাটি খনন ঝুঁকিতে মুজিব কিল্লা
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত

আর্কাইভ