বিশেষ প্রতিনিধি ।।ভোলাবাণী।। এবার কিশোরী ক্লাবের সদস্যদের সহায়তায় ও প্রশাসন ও সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে বাল্য বিবাহর হাত থেকে রক্ষা পেল দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মালা বেগম (১৫)। মঙ্গলবার দুপুরে মালার গায়ে হলুদ ও রাতে রাজাপুর ইউনিয়নের প্রবাসী সবুজ এর সাথে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে কোস্ট ট্রাস্ট (আইইসিএম) প্রকল্পের পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডের “জবা ক্লাবের” সদস্য সুমি ও চৈতি এর মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী সহায়তায় নিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এই বাল্য বিয়ে বন্ধ করা হয়।
পরে স্থানীয় প্রশাসন এসে আঠারো আাগে মালার বিয়ে নয় এই মর্মে মুচলেকা নিয়ে বাল্য বিবাহর হাত থেকে মালাকে রক্ষা করে। এদিকে মালার সহপাঠীরাও চায় মালা যেন পড়াশোনা চালিয়ে যায়।
ভোলার সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চর ছিপলী গ্রামের কৃষক মো: হাছান ও ফুল রানী বেগম এর ৩ মেয়ের মেঝো মেয়ে মালা বেগম (১৫) ।
এ বছর মনেজা খাতুন মাধ্যমিক গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম ফিলাপ করে। ফরম ফিলাপের একদিন পরেই বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছিল মালা বেগম। কিন্তুু স্কুলের সহপাঠীরা ও কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা মনেজা খাতুন মাধ্যমিক গার্লস স্কুল এর সহকারী শিক্ষক শচিনন্দ্র দাশ সহায়তায় কোস্ট ট্রাস্ট ও ইউনিসেফের (আইইসিএম) প্রকল্পের মিডিয়াও এডভোকেসি অফিসার চ্যানেল-২৪ ভোলা প্রতিনিধি আদিল হোসেন তপু, স্থানীয় সাংবাদিক শাওন ,এনজিও কর্মী সোহেল মাহামুদ এর সহায়তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে খবর দেয়া হয়। পরে খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত এর প্রতিনিধি সহকারী কমিশনার (ভূমি) ভোলা সদর এর কর্মকর্তা রুহুল অমিন ঘটনাস্থল মালাদের বাড়িতে উপস্থিত হয়। এসময় খবর পেয়ে বাড়ীর সবাই সটকে পড়ে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদেরকে সামনে আনা হয়।
পরে দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থী মালা বেগম এর বয়স আঠারো বছর না হওয়ায় বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি। এবং তাদের কাছ থেকে মালাকে ১৮ বছর আগে বিয়ে দিবেনা বলে মুচলেকা নেয়া হয়।
এসময় বিয়ের জন্য তৈরি প্যান্ডেল প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ভেঙ্গে দেয়া হয়। পরে পরিবারের লোকজনকে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝানো হয়। এসময় তারা বুঝতে পেরে প্রশাসনের কাছে বাল্য বিবাহ আার পড়াবেনা বলে ক্ষমা চায়।
ভোলা সদর এর সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা রুহুল অমিন বলেন, আমরা মেয়ের আঠারো বছর না হওয়াতে মেয়ের পরিবার ও স্থানীয়দের সামনে ভেঙ্গে দিই। এবং মেয়ের পরিবারের মুচলেকা নেই যে আঠারো বছর বয়স পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবেনা । এবং যদি কোন নকল কাগজ বানিয়ে বিয়ে দেয়া হয় কিংবা চেষ্টা করা হয় তাহলে বাল্য বিবাহর আইন অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হবে ।
এদিকে মালার সহপাঠীরা ও স্থানীয়রা জানায় মালা খুব ভালো শিক্ষার্থী । আর কয়েক দিন পড়ে এসএসসি পরীক্ষা দিবে । আমরা চায় মালা পড়াশোনা করুক এবং প্রাপ্ত বয়সে যেন মালার বিয়ে দেয় তার পরিবার ।
বাংলাদেশে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আাগে শতকরা ৩৯ শতাংশ ও ১৮ বছরের মধ্যে ৭৪ শতাংশ মেয়ে বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। আর ভোলাতে এর হার শতকরা ৫৯ শংতাংশ। তাই বাল্য বিবাহ রোধ করি সুখী সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি।
বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:০৪ ২৮৩ বার পঠিত |