লালমনিরহাটে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের “স্মৃতি জাদুঘর”

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » লালমনিরহাটে বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের “স্মৃতি জাদুঘর”
মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট ২০১৭



---

আসাদুল ইসলাম সবুজ ।।ভোলাবাণী।। লালমনিরহাট ॥ বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের চির স্মরণীয় করে রাখতে “দি পিকটোরিয়াল মিউজিয়াম প্রেসিডেন্ট/প্রাইমমিনিষ্টার অফ ওয়ার্ল্ড” (ড.চ.গ= ২০০১) নামক একটি প্রতিষ্টান সংগ্রহশালা যাত্রা বহুদিন আগে থেকে শুরু করেছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতি জাদুঘরে ইতিমধ্যে রাষ্ট্রীয় পোষাক পরিহিত ছবি ও সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত প্রদান করেছেন। বিশ্বের সমস্থ রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীগন মহামানব, মহাজ্ঞানী, মহাভাগ্যবান ব্যক্তি। এক একটি জাতির জন্য ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে একজনকে মহানসৃষ্টিকর্তা জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন। একজন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একটি রাষ্ট্রের অভিভাবক। মহান এই অভিভাবকদের জন্য সর্বউচ্চ কোন সেমিনারে তাদের জীবনী আলোকপাত করা হয় না। তাদের চির অমর করে রাখার জন্য বিশ্বের কোথাও কোন স্মৃতি ঘর তৈরি হয়নি। অথচ কবি, সাহিত্যিক, শিক্ষানুরাগি, চিকিৎসক, গবেষক, বিজ্ঞানিক, রাজনীতিবিদ, সমাজ সংস্কারক সেবকসহ মানব সমাজে যারা অবদান রেখেছেন তাদের বিভিন্ন ভাবে চির অমর করে ধরে রাখা হয়। কিন্তু তাদের তুলুনায় একজন রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী অনেক বেশি সম্মানি ব্যক্তি। এসব চিন্তা ভাবনা শেষে মহাভাগ্যবান রাষ্ট্র প্রধানদের চির অমর “স্মৃতি জাদুঘর” প্রতিষ্টা করেছেন বলে এসব কথা বলেন ব্যতিক্রম নেশার মাহমুদ ফিরোজ।
মোঃ মাহমুদ ফিরোজ (৪৫)। ফিরোজ ডাক নামে তিনি বেশি পরিচিত। পেশায় তিনি রুপালী ব্যাংক লিমিটেডের অফিস সহকারী (বর্তমান তিনি রুপালী ব্যাংক লিঃ, লালনিরহাট শাখায় কর্মরত আছেন)। “দি পিকটোরিয়াল মিউজিয়াম প্রেসিডেন্ট/প্রাইমমিনিষ্টার অফ ওয়ার্ল্ড” (ড.চ.গ= ২০০১) এর পরিচালক মাহমুদ ফিরোজ। এই ঐতিহাসিক নিদর্শক সংগ্রহকের বাড়ি বর্তমান লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের খাতাপাড়া “দরবেশ বাড়ী”। সেখানে ছোট বসতবাড়ী নির্মানের কাজও চলছে। সেই বসতবাড়ীর সাথে আলাদা একটি ঘরে বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রদর্শনের জন্য খুব তারাতারি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এসব কাজ তিনি যুবক বয়সে শুরু করেন। তার সংগ্রহশালা স্মৃতি জাদুঘরে ইতিমধ্যে বেশকিছু দেশের রাষ্ট্র প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীগনে ছবি সংগ্রহ করা হয়েছে। তার ছবি সংগ্রহের ধরন আলাদা, এসব ছবি ও জীবনী বাজার থেকে বা কারো কাছ থেকে নেওয়া নয়, প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের কাছ থেকে নেওয়া। তার একাজে অনেকেই বলেন এটা পাগলা হয়েছে, অনেকেই হেঁসেছেন, অনেকেই টাকা লোভ দেখিয়েছেন, তারপরেও তিনি পিছু হটেনি। অর্থনৈতিক সমস্যায় পরেও বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহাসিক নিদর্শক সংগ্রহকের কাজ।
মাহমুদ ফিরোজের সাথে কথা বলে জানা যায়, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌরসভাধীন ২নং ওয়ার্ডে তার জম্ম ১৯৭১ সালে। তার বাবা মরহুম আঃ সালাম সরকার। ৪ভাই ৩বোন এর মধ্যে মাহমুদ ফিরোজ ৪র্থ। ৯সদস্যের সংসারে কৃষক বাবার সংসারে খরচ জোগান দেয়া কষ্টকর। তাই তিনি নিম্ন মাধ্যমিক পেরিয়ে যেতে পারেনি। ১৯৮৯ সালে রুপালী ব্যাংক লিমিটেড, হারাগাছ শাখায় অস্থায়ী ভিত্তিতে চাকরিতে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর তিনি বিভিন্ন পত্রিকা পড়তেন আর ব্যতিক্রম কোন কিছু সংগ্রহশালার কথা ভাবতেন। একপর্যায় তিনি ভাবতেন, বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীরা এক একটি রাষ্ট্রের অভিভাবক। কিন্তু এই মহান অভিভাবকদের ছবি এবং জীবনী সংগ্রহশালা “স্মৃতি জাদুঘর” বিশ্বের কোথাও নেই। তাই তিনি অবসর সময়ে সংগ্রহশালার কাজটি কিভাবে শুরু করা য়ায় এনিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন। অস্থায়ী চাকরি অর্থনৈতিক সমস্যার মুখে ১৯৯৮ সালে নাসিমা আক্তারের সাথে মাহমুদ ফিরোজের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার স্বপ্ন পুরনের পালা শুরু হয়। তার স্ত্রী তার একাজের সঙ্গী হয়ে যায়।
মাহমুদ ফিরোজ জানান, ২০০১ সালে রংপুরে থাকতে “দি পিকটোরিয়াল মিউজিয়াম প্রেসিডেন্ট/প্রাইমমিনিষ্টার অফ ওয়ার্ল্ড” (ড.চ.গ= ২০০১) নামক একটি প্রতিষ্টান তৈরি করেন। বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের চির স্মরণীয় করে রাখতে “স্মৃতি জাদুঘরে” রাষ্ট্রীয় পোষাক পরিহিত ছবি ও সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত চেয়ে ৪৫টি দেশে চিঠি পাঠান। ইতিমধ্যে ১৫টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীরা তাদের ছবিসহ সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত প্রদান করেছেন। সেই সাথে তার এই উদ্দ্যোগকে প্রশংসা করেন অর্থনৈতিক সহযোগীতা দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধানরা। অবশিষ্ট দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের ছবি, জীবনী সংগ্রহের চেষ্ঠা চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী আজবর্ধি কোন সাড়া দেয়নি।
২০১৩ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার রুপালী ব্যাংকের চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর লালমনিরহাট শাখায় চলে আসেন মাহমুদ ফিরোজ। এমনকি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ থাকায় রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের “স্মৃতি জাদুঘরে” কাজ কিছুটা বিলম্ব হয়। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ ও চাকরিও স্থায়ী তাই “স্মৃতি জাদুঘরে” কাজ চলছে পুরোদমে। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের খাতাপাড়া এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দার হিসেবে জমি কিনে বসতবাড়ী নির্মানের কাজও শুরু করেছেন। সেই বসতবাড়ীর নাম রাখা হয় “দরবেশ বাড়ী” সেখানে একটি ঘরে বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রপ্রধান, প্রধানমন্ত্রীদের ছবি ও সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রদর্শনের জন্য খুব তারাতারি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে মাহমুদ ফিরোজ বলেন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রীদের ছবি, জীবনী সংগ্রহশালা “স্মৃতি জাদুঘর” বাংলাদেশে তৈরি হলে, বাংলাদেশের ভাবমুক্তি বহিঃবিশ্বে উজ্জ্বল হবে। “দি ওয়ার্ল্ড অব রিমেম্বার” নামে ব্যাংকে একটি সঞ্চযী হিসাব খোলা হয়েছে। সেখানে কিছু কিছু করে সঞ্চয় রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে চিঠিপত্র পাঠাতে এ সঞ্চয়ের টাকা খরচ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী ছবি ও জীবনী প্রদান করেনি, এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি আরও বলেন, ইতিমধ্যে অনেক দেশে আমাকে অর্থনৈতিক সহযোগীতা দিতে চান কিন্তু তাও আমি নেইনি, কারণ এতে বাংলাদেশে ভাবমুক্তি ক্ষুন্ন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৭:০০   ২৩৮ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


বীজ পাইনি সার দিয়ে কি করবো ? চরফ্যাশনে কৃষকের প্রশ্ন
চরফ্যাশনে বিদ্যুৎ স্পৃস্টে শিশুর মৃত্যু
তজুমদ্দিনে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে ৩শ কেজি পাঙ্গাসের পোনা আটক ॥
প্রাইম ইউনিভার্সিটি ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত
ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ আপনারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ লালমোহনে দোয়াত কলম সমর্থকদের ওপর শালিক সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় চলছে বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ড্রেজারে সরকারি জলাশয়ের মাটি খনন ঝুঁকিতে মুজিব কিল্লা
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত

আর্কাইভ