ছোটন সাহা।।ভোলাবাণী।।
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসার ঘটিয়ে অবশেষ স্বপ্ন পূরন হতে যাচ্ছে মনপুরাবাসীর। জেলার মূল ভু-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সাগর উপকূলের এক লাখ মানুষের স্বপ্নের নৌ এ্যাম্বুলেন্স চালু হতে হচ্ছে এমন খবররে আনন্দে ভাসছে মানপুরার মানুষ। স্বাস্থ্য সেবায় দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে থাকা সেখানকার জনগোষ্টির জন্য এ্যাম্বুললেস্টটি আর্শিবাদ বয়ে আনবে বলেও মনে করছেন তারা।
উন্নত চিকিৎসা বঞ্চিত মানুষ নৌ এ্যাম্বুলেন্সটির মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসা সেবা পাবেন বলে জানা গেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয় থেকে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের জন্য এ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্র জানিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চারদিকে নদী বেষ্টিত দ্বীপ উপজেলার মনপুরা থেকে জেলা সদরের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌ পথ আর তাই জেলা সদরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম হচ্ছে ইঞ্জিত চালিত ট্রলার বা সি-ট্রাক। কিন্তু তাতেও ভোগান্তির শেষ নেই।
দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়াতে বন্ধ থাকে এসব নৌযান। তাছাড়া এসব নৌ-যান নির্ধারিত সময়ের বাইরের যাতায়াত করেনা। যে কারনে জরুরি প্রয়োজনে প্রসুতি মা কিংবা জরুরি রোগীরা চিকিৎসা নিতে পারেন না। অনেক সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার দিয়ে যেতে গিয়ে পথে মারা যান অনেক মা। মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেকসের সুত্র জানিয়েছে, এ্যাম্বুলেন্সটি দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট এবং প্রস্থে সাড়ে ৭ ফুট। ১১ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকা ব্যায়ে এ্যাম্বুলন্সেটি তৈরী করা হয়েছে।
এ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে একটি কেবিন, একটি পেসেন্ট বেড, একটি অকসিজেন সিলিন্ডার, ২টি ফ্যান, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা বক্স, ২টি লাইফ বয়া এবং ১০টি লাফ জ্যাকেট। এ্যাম্বুলেন্সটিতে রোগীসহ ২০ জন যাত্রী ধারন করতে পারবে।
এছাড়াও ডিজেল চালিত নৌ এ্যাম্বুলেন্সটি ঘন্টায় ১২ নটিক্যাল মাইল অতিক্রম করতে পারবে যাতে তেল খরচ ৩ লিটার।খরচ অনেক কম।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, মনপুরা উপজেলঅ স্বাস্থ্য কমপ্লেকসে সিজিারিং ডেলিভারি না থাকায় চরফ্যাশন কিংবা ভোলা সদর হাসপাতালে বা কিনিকে যেতে হয়। কিন্তু যাতায়াত সুবিধা না থাকায় প্রতি বছরই প্রসুতি মায়েদের মত্যৃ হয়।
কারন, নদীর পথ থাকায় নির্ধারিত সময়ে প্রসুতির নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়না। সর্বশেষ গত ১৭ মাসে ৫ জন প্রসুতি মা মারা যায়।
এছাড়াও দুর্গম কলাতলীর চর, চর নিজাম এবং ঢালচরে মানুষ উপজেলা সদরে আসতে পারেনা নৌ যান সংকটের কারনে। তাদের উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হয় ইঞ্জিন চালিক ট্রলার দিয়ে তাই ওই সব রোগীদের জন্য নৌ এ্যম্বুলেন্সটি অনেক উপকারে আসবে। এটি চালু হওয়ার মধ্যেদিয়ে মনপুরাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবী পূরন হলো।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহমুদুর রশিদ বলেন, মনপুরায় যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌ পথ হওয়ায় জরুরি রোগী এবং প্রসুতি মায়েরা যথা সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছে না। তাদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়। এই নৌ এ্যম্বুলেন্সটি মনপুরাবাসীর অনেক উপকারে আসবে। ঢাকা থেকে ২৫ জুলাইর মধ্যে মনপুরাতে এসে পৌছাবে এ্যাম্বুলেন্সটি। পরে উদ্বোধনের মধ্যেদিয়ে এর যাত্রা শুর হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৬:৪২ ১৯৩ বার পঠিত |