জলদস্যু আতংকে মনপুরার ১০ হাজার জেলে

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » জলদস্যু আতংকে মনপুরার ১০ হাজার জেলে
বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭



---ছোটন সাহা ।।ভোলাবাণী।।
ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু হওয়ায় সাথে সাথে ভোলার মনপুরার মেঘনায় বৃদ্ধি পেয়েছে জলদস্যুতা। এতে আতংকিত হয়ে পড়েছেন উপজেলার ১০ হাজার জেলে। নদীতে গেলেই দস্যুদের হামলাম মুখে পড়ছে হয় জেলেদের। এতে ভয়ে অনেক জেলে নদীতে মাছ শিকারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
গত এক সপ্তাহে পৃথক দুটি এলাকায় দুই জলদস্যুতার ঘটনায় ৭ জেলে অপহৃত হয়েছে, যাদের মুক্তিপন দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। জলদস্যু দমনে পুলিশ এবং কোস্টগার্ডের টহল থাকালেও যেন কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না দস্যুতা।
জেলে ও আড়ৎদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপকূলের দ্বীপ মনপুরা উপজেলার চারটি ইউনিয়নে জনতা বাজার, কালকীনি, দক্ষিন সাকুচিয়া, হাজিরহাট, রামনেওয়াজ, চর ফৈয়েজউদ্দিন, কোড়ালিয়া, কলাতলীর চর, ঢালচরসহ ১৫টি মৎস্যঘাটে অন্তত শতাধিক মৎস্য আড়ৎ রয়েছে। সেখানে অন্তত ১০ হাজার জেলের জীবন জীবিকা।
মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এসব আড়ৎ। ইলিশের ভরা মৌসুমে নদীতে জাল, নৌকা, ট্রলার ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে নেমে পড়েছেন জেলেরা। তারই ধারাবাকিতায় চলতি মৌসুমেও জেলেদের ঝালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। কিন্তু নদীতে ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে হঠাৎ করেই বেড়েছে দস্যুদের উপদ্রব। এরই মধ্যে ৭ জেলে অপহৃত হয়েছে।
মনপুরার রামনেওয়াট ঘাটের আড়ৎদার টিটু ভুইয়া জানান, জলদস্যুদের কারনে ইলিশ ধরা হুমকির মুখে পড়েছে। কিছুদিন ধরে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে সেই সাথে দস্যুতার ঘটনাও বেড়ে গেছে।
আড়ৎদার মোশারেফ হোসেন বলেন, এ ঘাটের ১৪টি আড়তে অন্তত ৫শতাধিক জেলে রয়েছে যারা ইলিশের ভরার মৌসুমে নদীতে নামলেও এখন ভয়ের মধ্যে রয়েছে।
রামনেওয়াট ঘাট আড়ৎদার সমিতির সভাপতি লোকমান হোসেন বলেন, দস্যুরা জেলেদের অপহরন করে নিয়ে যায়, তাদের ছাড়িয়ে আনতে এক লাখ টাকা করে মুক্তিপন দিতে হয়। দস্যুতের কারনে অনেক জেলেই এখণ আতংকিত।
মনপুরা উপজেলা মৎস্য আড়ৎদার সমিতির সভাপতি ও দক্ষিন সাকুচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান অলিউল্ল্যাহ কাজ বলেন, মাছের মৌসুমে জেলেদের নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে, কিন্তু তারপরেও একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জেলে ও আড়ৎদার জানিয়েছে, মেঘনার দুর্ধর্ষ ডাকাত কৃষ্ণা, বাবু এবং কালাম বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। এ বাহিনীর সদস্যরা মেঘনার বিভিন্ন চরে অবস্থান করে জেলেদের উপর ঝাঁপিয়ে পাড়ে। এসব এলাকায় পুলিশ ও কোস্টগার্ডের অভিযান থাকলে জেলেরা নিরাপদে মাছ শিকারে যেতে পারবে।
জেলে সুত্র আরো জানিয়েছে, নিরাপদে মাছ শিকারের জন্য টাকা দিয়ে জলদস্যুদের কাছ থেকে টোকেন কার্ড সংগ্রহের জন্য জেলেদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। কার্ড সংগ্রহ না করলেই তাদের উপর চাড়াও হয় ডাকাতরা।
হাতিয়া ও নোয়াখালির দুধর্ষ কয়েকটি বাহিনী জলদস্যুতার সাথে জড়িত। এদের কাছে উপজেলার ১০ হাজার জেলে জিম্মি হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ভোলা কোস্টগার্ড দক্ষিন জোনের অপারেশন অফিসার লে. কমান্ডার সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান জানান, জলদস্যুতা দমনে প্রতিদিন কোস্টগার্ডের চারটি পেট্রোল টিম টহলে রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। যখনি ডাকাতির খবর পেয়ে থাকি তখনি কোস্টগার্ড অভিযানে নামে। এছাড়াও দস্যুদের নির্মূলে খুব শিগ্রই একটি যৌথ অভিযান পরিচালনার করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫১:০৯   ২৬১ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


প্রাইম ইউনিভার্সিটি ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত
ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ আপনারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ লালমোহনে দোয়াত কলম সমর্থকদের ওপর শালিক সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় চলছে বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ড্রেজারে সরকারি জলাশয়ের মাটি খনন ঝুঁকিতে মুজিব কিল্লা
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে শীর্ষে পিরোজপুর জেলা
ভোলা শহরে নেই কোন গণশৌচাগার ॥ জনগনের ভোগান্তি চরমে
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচনমটরসাইকেল ও উড়োজাহাজ প্রার্থীর গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ

আর্কাইভ