ভোলাবাণী: লালমোহন প্রতিনিধি:
লালমোহনে শাহানাজ বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধুকে তার স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ির লোকজন পিটিয়ে করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত শাহানাজ, লালমোহন উপজেলার চরছকিনা গ্রামের গওহর আলী হাজি বাড়ি এলাকার আলমগীরের মেয়ে। ঘটনার ৩ দিন পর পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার ঘাসের চর নামক এলাকা থেকে শাহনাজের রক্তাক্ত মৃতদেহ উধার করে বুধবার সকালে পিতার বাড়িতে নেয়া হয়। লাশের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন এবং নাক মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে বলে জানিয়েছে শাহনাজের পিতা। শাহনাজের পিতার অভিযোগ, স্বামী জুয়েল ও তার পরিবারের নির্যাতনেই শাহানাজের মৃত্যু হয়েছে।শাহনাজের পিতা আলমগীর জানান, গত প্রায় ৭ বছর আগে এলাকার তোফাজ্জালের ছেলে জুয়েলের সাথে শাহনাজের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা শাহনাজকে নিয়ে স্ব-পরিবারে গলাচিপা উপজেলা ঘাসেরচর চলে যায়। সেখানে তারা জেলে পেশায় কাজ করে।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন কারনে শাহনাজকে নির্যাতন করে চলেছে জুয়েল ও তার পরিবার। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে কয়েকবার শালিস বিচার হয়েছে। এসব নির্যাতনের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে আমাকে জানানোর কারনে নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয় জুয়েল। এমনকী শাহানাজের মোবাইলের সীমটিও খুলে নেয় জুয়েল।প্রতিবেশিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শাহানাজের পিতা আলমগীর আরো জানান, গত রবিবার রাতে শাহানাজকে আবার বেধম মারপিট ও নির্যাতন শুরু করে জুয়েল। মারপিট সইতে না পেরে শাহানাজ দৌড়ে গিয়ে জুয়েলের বড় ভাই সোহেলের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়ে আবারো নির্দয়ভাবে মারপিট করে জুয়েল ও তার পরিবার। মারধরের এক পর্যায়ে শাহনাজ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটে পরলে জুয়েল ও তার পরিবারের লোকেরা বিলের মধ্য দিয়ে টেনে শাহনাজকে, জুয়েলদের ঘরে নিয়ে উঠায়। পরদিন প্রতিবেশিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমি কালামা ইউনিয়নের ফারুক মেম্বারকে নিয়ে সেখান থেকে লাশ উদ্ধার করে বরফ দিয়ে দেশে নিয়ে আসি।
এ ব্যাপারে গলাচিপা থানার ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে সাথে সাথে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে ছিলাম। শাহানাজের পিতার কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় কিছু করতে পারিনি। তার পরও লালমোহনে লাশ নিয়ে যদি অভিযোগ দেয়, তা হলে প্রয়োজনে মামলা হবে এবং লাশের ময়না তদন্ত হবে।
এলাকার ফারুক মেম্বার বলেন, নিহত শাহানাজ ও জুয়েল সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন ছিল। তারা দু’পক্ষই বিষয়টি মিটমাট করতে আগ্রহী। চেয়ারম্যান সাহেবকে জানানো হয়েছে। সে ফয়সালা করে দিবে।
লালমোহন থানার ডিউটি অফিসার আবু জাহের বলেন, আমাদের কাছে কোনো পক্ষ এ ব্যাপারে অভিযোগ করেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১১:১৫:৫০ ২২৭ বার পঠিত |