আমজাদ হোসেন, ভোলাবাণী: ভোলার লালমোহন উপজেলার ৭নং পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের নিঃস্ব মানিক জানের (৪৫) ভাগ্যে স্বামী মৃত্যুর সাত বছরেও জোটেনি সরকারের কোনো তহবিল বা ইউনিয়ন পরিষদের ভাতা।
কোন মতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে নিজের ক্ষুধার জ্বালা মেটাতাম এমনটাই কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন অসহায় মানিক জান।
তিনি আরও বলেন স্বামীকে হারিয়েছি সাত বছর আগে, দুইডা মেয়ে ছিলো, ঢাকায় থাকে বড়োডার বিয়া হইছে আর ছোটডার হয়নায়। কাজ করে মানুষের বাসায় মাঝে মাঝে বাড়ি আসে । স্বামী সন্তান হারিয়ে নিঃস্ব মানিক জান স্মৃতি হিসেবে তার নিজের স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটিতেই পড়ে আছেন কোন রকম না খেয়েই।
তার সাথে দেখা হওয়ায় কেঁদে কেঁদে তার কষ্টের কথা গুলো বলতে লাগলেন।
স্বামী জয়নাল আবেদিনের আগের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মানিকজানকে বিয়ে করলেন। স্বামীর আয় রোজগারে ভালোই কাটছিলো তাদের সংসার । আগের ঘরের সন্তানেরা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে একটা টাকা পয়সাও দেয়না। সাত বছর আগে স্বামী মারা যায় মানিকজানের। এরপর থেকেই রোগ শোক আর খাদ্যের অভাব দেখা দেয়।
কিভাবে খাবো ঔষধ শুধু বসত ভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই ।মানুষের জমিতে ফসল তুলতাম তাও এবার নেই ঝর বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে,আমি পাবো কোথায় শাড়ির আচলে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন মানিকজান।
ওয়ার্ডের মেম্বার কে জানিয়েছেন ভাতার কথা উত্তরে বললেন যাদের আছে তারাই ভাতা বা ভিজিএফ চাল পায় আমি পাইনি। একবার গিয়েছিলাম চেয়ারম্যানের কাছে সেদিন সবাইকে চাল দিয়েছিলো, আমি বাড়ির নাম বলেছিলাম তারা বললো জনু মালের বাড়ি চিনিনা। সেদিন আমাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিল পরিষদের লোকজন।
আজ আমি নিঃস্ব আল্লাহ ছাড়া আর কেউই নেই আমার ।
সরেজমিনে দেখা যায় বসত ভিটা ছাড়া আর কোন জমি নেই তার সাথে ভাঙা একটি দুই চালা ঘর। মানিকজানের মতো এভাবেই অসহায় জীবন যাপন করে সম্পদ লোভী মানুষের ভিড়ে হাজারো বৃদ্ধা। তাদের নেই জন প্রতিনিধি মেম্বার কিংবা চেয়ারম্যান,আছে ঝর বৃষ্টিতে সংগ্রাম করে করে বেঁচে থাকার এক টুকরো চাহনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৩:৩৭ ৪১৬ বার পঠিত |