জেলা সংবাদদাতা, ভোলাবাণী: ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ক্লোজার বাজার সংলগ্ন ফয়জুল উলুম কাওমী মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকদের রাজনীতিতে আনতে ভোলায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা কর্মীরা দৌড়ঝাপ ও বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এ ব্যাপারে মাদ্রাসা কার্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আলীমাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি আব্দুর রাজ্জাক, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ফরাজী, মুফতি আবুল বাশার, মাওলানা মহসিন। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, আমাদের মাদ্রাসাটি ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
শুরু থেকে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মাদ্রাসাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। মাদ্রাসায় বর্তমানে ৩১৬ জন ছাত্র রয়েছে।
এ মাদ্রাসায় কেরাত, হেফজ, কিতাব ও দ্বাওরা হাদিস বিভাগে আমরা ছাত্রদের শিক্ষা দিয়ে থাকি। মাদ্রাসাটির বিশেষ বৈশিষ্ট হলো এ মাদ্রাসার সকল ছাত্র শিক্ষক সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত। কোন ছাত্র শিক্ষকের রাজনৈতিক সম্পর্ক পাওয়াগেলে তাহাকে তাৎক্ষনিক মাদ্রাসাথেকে বহিস্কার করার আইন রয়েছে। কিছু দিন যাবৎ একটি মহল আমাদেরকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাথে জড়ানোরজন্য বিভিন্ন ভাবে দাওয়াত দিয়া আসছে। তারা সকল চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে বর্তমানে বিভিন্ন উগ্র পন্থা অবলম্বন করছে।
তারা গত ২৭ মার্চ-২০১৭ সন্ধ্যার পর ভোলার ইসলামী আন্দোলনের সেক্রেটারী মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আতাউর রহমান, ও মাওলানা তাজুল ইসলামসহ ৮/১০জন্য লোক মাদ্রাসায় এসে বলে, আমরা চরমোনাইর পীর সাহেবের পক্ষ থেকে এসেছি। আপনাদের মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক আমাদের রাজনৈতিক সংগঠনে যোগদান করাতে হবে। এর পর গত ৪ এপ্রিল মাওলানা মিজানের নেতৃত্বে অর্ধ শতাধিক লোক মটর সাইকেল বহর যোগে মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। সে দিন তারা প্রথমে আমাদেরকে চরমোনাইর রাজনীতিতে যোগদান করতে বলে।
এবারও আমরা রাজি না হওয়াতে তারা আমাদের সাথে বিভিন্ন ফতুয়া নিয়ে বাক-বিতন্ড শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা উত্তেজিত হয়ে পেশি শক্তির ভয় দেখায়। এরপর তারা আমাদেরকে জোড়পূর্বক বহছে (বিতর্কে) বসার প্রস্তাব দেয় এবং বলে বহছের খরচ বাবাৎ আমাদেরকে নগদ ১লাখ টাকা দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেন, মাওলানা মিজান গংরা আমাদেরকে কোন ভাবেই তাদের রাজনীতিতে অন্তর্ভূক্ত করতে না পেরে আমাদের নামে বিভিন্ন মহলে, পত্রিকা ও ফেসবুকে লিখেছে মুফতি আব্দুর রাজ্জাক দেশ বিদ্রোহী, রাজাকার, ধর্ম বিদ্রোহী, মানবাধীকার বিরোধী এবং জঙ্গীবাদ। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এসব মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। এমনকি তারা গত শীত মৌসুমে ক্লোজার বাজারে আমাদের মাহফিলে বাঁধা প্রদান করে এবং রৌদ্রের হাটে আমাদেরকে মাহফিল করতে দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভোলা জেলার সেক্রেটারী মাওলানা মিজানুর রহমান জনান, আমরা তাদেরকে আমাদের রাজনীতিতে অন্তর্ভূক্ত করতে যাই নাই। তারা অনেক ভুলের মধ্যে রয়েছে সে ভুল গুলো ধরিয়ে দিতে গিয়েছি।
মাদ্রাসা এলাকা ঘুড়ে দেখা গেছে, দেশে যত কাওমী মাদ্রাসা রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে এ মাদ্রাসাটি জড়াজীর্ন অবস্থায় রয়েছে। ৩১৬জন ছাত্রাকে দৈনিক পাঠদানের ভবনটি দেখে মনেহয় এর মধ্যে কোন মানুষ থাকতে পারেনা। একেতো ভাঙ্গা দরজা-জানালা, ঘরের চাল। অন্যদিকে নেই কোন বিদ্যুতের ব্যবস্থা। দেখা গেছে ছাত্ররা বিভিন্ন গাছের নিচে বসে পাঠদান নিচ্ছে।
এলাকাবাসীরা জানান, ১৫ বছর ধরে এভাই মাদ্রাসটি চলছে। এলাকাবাসীর সামান্য সহযোগীতা ছাড়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অন্য কোন আয়ের ব্যবস্থা নাই। তাতেও তারা আল্লাহর শুকুর করছে।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ চায় সকল রাজনীতি থেকে মুক্ত থেকে সকলের চোঁখে ভালো থাকতে ও ছাত্রদের সুশিক্ষা দান করতে। বর্তমানে চরমোনাইর নেতা কর্মীদের সকল ষড়যন্ত্র থেকে তারা বাঁচতে চায়।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৭:৪৫ ২৮১ বার পঠিত |