দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনশতাধিক আসনে নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্রের লড়াই

প্রথম পাতা » জাতীয় » দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনশতাধিক আসনে নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্রের লড়াই
বুধবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩



ভোলাবাণী ডেক্স।।

শতাধিক আসনে নৌকার সঙ্গে স্বতন্ত্রের লড়াই

  • ২৮ জন বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, ২২১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩৮২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী

  •   ব্যালট পেপার মুদ্রণের কাজ শুরু ইসির, ২৫ ডিসেম্বর যাবে জেলায় জেলায়

  •   ৯ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শতাধিক আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের লড়াই হবে। ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২২১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অন্তত ৩৮২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাদের বড় অংশই আওয়ামী লীগের নেতা, যারা ইতিমধ্যে ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। বর্তমান সংসদের ২৮ জন এমপি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচন করছেন।

গতকাল চাঁদপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শক্তি ও সামর্থ্য আছে বলেই নির্বাচনে নেমেছেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ, রিটার্নিং কর্মকর্তার বাছাই ও ইসির আপিলে বাদ পড়াদের অনেকে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন। তাদের কেউ কেউ ইতিমধ্যে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। ভোটের আগ পর্যন্ত আরও কেউ কেউ প্রার্থিতা ফিরে পেতে পারেন।

জানা গেছে, এবার তুলনামূলক স্বতন্ত্র প্রার্থী বেশি বগুড়ায়। এই জেলার সাতটি আসনের ছয়টিতে স্বতন্ত্র আছেন মোট ১৮ জন। এর মধ্যে বগুড়া-১ ও ৩ আসনে চার জন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন। এবারের নির্বাচনে প্রায় ৪০০ স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চসংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থীর রেকর্ড হয়নি। এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ছিল ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ঐ নির্বাচনে ৪৮৬ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

এর মধ্যে ছয় জন জিতেছিলেন। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে। এর আগে ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনও বর্জন করেছিল বিএনপি। সেবার ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা। তখন এটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছিল। এবার যাতে কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী না হন, সেদিকে সতর্ক ছিল আওয়ামী লীগ। সেজন্য দলীয় নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত দল আছে ৪৪টি। এর মধ্যে ভোটে ২৭টি দলের প্রার্থী আছে। সবচেয়ে বেশি ২৬৬টি আসনে প্রার্থী আছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক প্রার্থী আছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাপার। ২৬৫টি আসনে প্রার্থী আছে দলটির। এর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে ২৬টি আসনে তাদের সমর্থনে নিজেদের প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয় আওয়ামী লীগ। সমঝোতার বাইরের আসনগুলোতে অন্য প্রার্থীদের বিরুদ্ধে এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে জাপাকে। একই অবস্থা ১৪ দলীয় জোট শরিক ও নির্বাচন অংশ নেওয়া অন্য দলগুলোর। এবারের নির্বাচনে এই জোটের শরিকদের আওয়ামী লীগ যে ছয়টি আসন দিয়েছে, সেগুলোতে তারা ভোট করবে নৌকা প্রতীকে।

ইসির তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে তৃতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক প্রার্থী দিয়েছে হঠাৎ করে নিবন্ধন পেয়ে আলোচনায় আসা তৃণমূল বিএনপি। ১৩৩টি আসনে দলটির প্রার্থী আছে। এর বাইরে ১০০টির বেশি আসনে প্রার্থী আছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি)। তারা ১২২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। তবে রাজনীতি বা ভোটের মাঠে এই দলের তেমন কোনো প্রভাব নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে জাতীয় পার্টি-জেপি ১৩ আসনে, জাসদ ৬৪ আসনে, ওয়ার্কার্স পার্টি ২৬ আসনে, তরীকত ফেডারেশন ৩৮ আসনে, সাম্যবাদী দল চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এর বাইরে অন্য দলগুলোর মধ্যে ইসলামী ফ্রন্ট ৩৯ আসনে, ইসলামী ঐক্যজোট ৪২ আসনে, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ২৯ আসনে, গণফোরাম ৯ আসনে, গণফ্রন্ট ২১ আসনে, জাকের পার্টি ২১ আসনে, বিকল্পধারা ১০ আসনে, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭ আসনে, বাংলাদেশ কংগ্রেস ৯৫ আসনে, কল্যাণ পার্টি ১৬ আসনে, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ১১ আসনে, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি পাঁচ আসনে, বিএনএম ৫৪ আসনে, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি পাঁচ আসনে, বিএনএফ ৪৫ আসনে, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ চার আসনে, সুপ্রিম পার্টি ৭৯ আসনে, সাংস্কৃতিক মুক্তি জোট ৬৩ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ইসি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই দলগুলোর কোনোটিই আওয়ামী লীগের সঙ্গে প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার সামর্থ্য রাখে না।

তবে এবারে নির্বাচনের নতুনত্ব হচ্ছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্তত ১২৭টি আসনে এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নিজ দলের নৌকার প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারেন।

ব্যালট পেপার মুদ্রণের কাজ শুরু ইসির :দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের জন্য ব্যালট পেপার মুদ্রণের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যে সব আসন থেকে বাদ পড়া প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন, সেসব প্রায় ৪০টি আসন বাদ রেখে ব্যালট পেপার মুদ্রণ ?শুরু হয়েছে। এ ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, গত সোমবার প্রতীক বরাদ্দ কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আমরা ৩০০ আসনের প্রার্থীদের তালিকা পেয়েছি। সে অনুযায়ী প্রতীকসহ আমাদের ব্যালট পেপার ছাপার কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তিনটি সরকারি ছাপাখানায় এ কাজ শুরু হয়েছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা ব্যালট পেপার ছাপার কাজ শেষ করতে চাই।

সোস্যাল মিডিয়ায় ‘না’ ইসিতে: ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত নিরাপত্তার স্বার্থে আউটসোর্সিং ও দৈনিক ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশনের কর্মচারীদের কর্মস্থলে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইউটিউব, টিকটকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার না করাসহ আট দফা নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এতে বলা হয়, নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে।

প্রার্থিতা ফিরে পেলেন আওয়ামী লীগের তিন প্রার্থী :রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে বাতিল হওয়া পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে অবশেষ তিন জন প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এরা হচ্ছেন ফরিদপুর-৩ আসনে শামীম হক, যশোর-৪ আসনের এনামুল হক বাবুল, ময়মনসিংহ-৯ আসনে মেজর জেনারেল (অব.) আবদুস সালাম।

৯ লাখ কর্মকর্তার প্রশিক্ষণ শুরু: নির্বাচন উপলক্ষে ৯ লাখ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ভোটের আগেই এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করতে চায় ইসি। নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।

পাঁচ স্টেডিয়ামে নির্বাচনি কার্যক্রম না নিতে বাফুফের অনুরোধ: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ভেন্যু হিসেবে দেশের পাঁচ ফুটবল স্টেডিয়ামে নির্বাচনি কার্যক্রম না করতে নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের কাছে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে বাফুফে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ২০২৩-২৪’ এর খেলাগুলো দেশের পাঁচটি ভেন্যু শেষ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়াম-গোপালগঞ্জ, বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়াম-মুন্সীগঞ্জ, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়াম-রাজশাহী, রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম-ময়মনসিংহ এবং বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা-ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। মাঠগুলোতে যে কোনো কার্যক্রম ও জনসমাবেশ আয়োজনের অনুমতি না দেওয়াসহ বর্ণিত খেলাগুলো আয়োজনের লক্ষ্যে মাঠ ও অবকাঠামো যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ইসির আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে ঐ চিঠিতে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:২০:১৭   ৯৩ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জাতীয়’র আরও খবর


অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক করা হচ্ছে
কাউকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী
বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ট ব্যবসায়ীসহ গ্রাহকবিদ্যুত বিহীন মনপুরা ॥ তীব্রতাপদাহে ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ
আজ পহেলা বৈশাখ
সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী
জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে , ভোটের চিন্তা থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী
আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরও সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের হারানো গৌরব ফিরিয়ে এনেছে : প্রধানমন্ত্রী
১০ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী

আর্কাইভ