মোহনায় পলি জমে ইলিশের গতিপথ পরিবর্তন ইলিশ নেই ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায়

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মোহনায় পলি জমে ইলিশের গতিপথ পরিবর্তন ইলিশ নেই ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায়
মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর ২০২২



ছোটন সাহা ॥ভোলাবাণী।।ফের ইলিশ সংকট দেখা দিয়েছে ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে। এতে চরম সংকটে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা। সারাদিন জাল বেয়েও কাক্সিক্ষত পরিমাণ ইলিশ না পেয়ে হতাশ তারা। যে কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন জেলেরা।

ইলিশ নেই ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায়

মৎস্যবিভাগ বলছে, মোহনায় পলি জমে ইলিশের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মৎস্য উৎপাদনে ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
উপকূলের বিভিন্ন মাছ ঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিশের প্রধান প্রজনন সময়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা শুরু হয়। এরপরেই জেলেরা জাল নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন নদী-সাগরে। এরপর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে জেলেদের জালে। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা থাকে না বেশিদিন। এখন ভিন্ন চিত্র মেঘনা-তেঁতুলিয়ায়। গত ১০ দিন ধরে নদীতে দেখা নেই ইলিশের। সারাদিন জাল বেয়ে তেমন ইলিশ পাচ্ছেন না জেলেরা।
লালমোহনের গজারিয়া খালগোড়া ঘাটের জেলে আলী হোসেন ও বেলায়েত হোসেন বলেন, অবরোধের পর ভালো ইলিশ ধরা পড়তো, কিন্তু এখন অনেক কম। এতে আমাদের তেলের খরচও উঠছে না।

ইলিশের এমন আকাল দেখা দেওয়ায় চিন্তিত মৎস্য বিভাগও।

এমন বাস্তবতায় ড্রেজিং জরুরি

হোসেন মাঝি বলেন, সারাদিন তেল খরচ করে নদীতে জাল বেয়ে যাচ্ছি, কিন্তু যে মাছ পাওয়া যায় তা দিয়ে তেলের খরচও উঠছে না। এতে আমাদের অনেক লোকসান হচ্ছে।
আড়তদার মো.ফারুক বলেন, নদীতে মাছ না থাকায় আড়তগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। তেমন কেনাবেচা হচ্ছে না। জেলেরা আমাদের মাছ দিতে পারছে না, আমরাও বিক্রি করতে পারছি না।
বাক্তিল খাল এলাকার জেলে মফিজ ও মনিরসহ অন্যরা জানান, বিগত সময় অবরোধের পর জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পেত, এখন মাত্র ২/৩ দিন ইলিশ ধরা পড়লেও এখন আর সে চিত্র নেই। তেলের খরচ না ওঠায় অনেকেই অভিমানে নদীতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
হানিফ মাঝি বলেন, দুইদিন আগে নদীতে গিয়ে তিন হাজার টাকার তেল খরচ হয়েছে কিন্তু মাছ পেয়েছি মোটে ৭শ টাকার।
মৎস্যবিভাগ জানায়, নদীতে পলি জমে থাকায় ভরাট হয়ে গেটে নদীর তলদেশ। কোথাও আবার ডুবোচর জেগে উঠেছে, তাই সাগর থেকে নদীতে আসতে পারছে না ইলিশ। বাধা পেয়ে তারা দিক পরিবর্তন করছে, তাই উপকূলে নেই ইলিশ। যে কারণে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলেরা।
জেলেরা জানান, নদীতে ইলিশ শিকারে গিয়ে তেলের খরচও উঠছে না তাদের। ফলে অনেক জেলের চলছে দুর্দিন। পরিবার-পরিজন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা।
মৎস্যবিভাগের হিসাবে, নিষেধাজ্ঞার পর থেকে গত ১৫ দিন ইলিশ ধরা পড়েছে মাত্র ৭৫০ মেট্রিক টন। তবে শুরুর তিন দিনেই ছিল ২৬০ মেট্রিক টন। ইলিশের এমন আকাল দেখা দেওয়ায় চিন্তিত মৎস্য বিভাগও।
তারা বলছেন, মোহনায় পলি জমে ইলিশের গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এমন বাস্তবতায় ড্রেজিং জরুরি বলে মন্তব্য তাদের।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ বলেন, মোহনায় পলি জমি থাকায় ইলিশ উপকূলের দিকে আসতে পারছে না, এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ইলিশের আরও সংকট দেখা দেবে। তাই নদী খনন জরুরি।
এমন বাস্তবতায় ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনিশ্চিয়তার পাশাপাশি ইলিশ উৎপাদনও হুমকির মুখে বলে মনে করছেন তিনি

বাংলাদেশ সময়: ৮:১৪:৫৪   ৮৩ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


লালমোহনে জাগোনারী’র অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার পর ভোলায় মধ্যরাত থেকে মাছ শিকারে নামবেন জেলেরা
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে আরও ইউরোপীয় দেশ
তজুমদ্দিনে ৮৫৬টি গাছ কেটে রাস্তা চওড়া করার প্রস্তুতি সম্পন্ন ,স্থানীয়দের ক্ষোভ
ভোলায় ডিবির অভিযানে অস্ত্রসহ ৩ দস্যু আটক, অপহৃতরা উদ্ধার
গুজবে কেউ কান দেবেন নাঅটো চেয়ারম্যান হওয়ার দিন শেষ জনগনের ভোট লাগবে: মোহাম্মদ ইউনুছ
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪মনপুরায় উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৫ জন ॥ মোট প্রার্থী ১১ জন
তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি ॥
এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?

আর্কাইভ