তজুমদ্দিনে খাদ্য ও মিষ্টি পানির অভাবে বিপাকে মহিষ খামারীরা ॥

প্রথম পাতা » তজুমদ্দিন » তজুমদ্দিনে খাদ্য ও মিষ্টি পানির অভাবে বিপাকে মহিষ খামারীরা ॥
সোমবার, ২৮ মার্চ ২০২২



হেলাল উদ্দিন লিটন।।ভোলাবাণী।। তজুমদ্দিন প্রতিনিধি
ভোলার তজুমদ্দিনে খাদ্য ও মিষ্টি পানির তীব্র সংকটে বিপাকে পড়েছে ছোট বড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক মহিষের খামারী। মহিষ পালনে ভোলা জেলা বিখ্যাত হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে খামারীর সংখ্যা। চরাঞ্চলে গড়ে উঠা মহিষের খামারীরা খাদ্য ও মিষ্টি পানির তীব্র সংকটের পাশাপাশি নানা রোগ বালাইর কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন সময় মারা যাচ্ছে মহিষ তাতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এসব বিষয়ে আতংকিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের।

লবণ পানি পান করে অসুস্থ মহিষের পরিচর্যা করছেন খামারী বাবুল মাঝি।

খামারীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, উপজেলার চরাঞ্চলে অনেক বছর ধরে গড়ে উঠেছে ব্যক্তি পর্যায়ে মহিষের খামার। এসব খামার থেকে প্রধান আয়ের উৎর্স হচ্ছে  দুধ থেকে দধি তৈরী করে বিক্রি করা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় থেকে আশা বেপারীদের কাছে মহিষ বিক্রি করা। দধি বিক্রি করে ভালো আয় হওয়ায় বাড়ছে খামারীর সংখ্যা। তবে চরাঞ্চলে খাদ্য ও মিষ্টি পানির তীব্র সংকটের সাথে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগবালাই। খাদ্য ও মিষ্টি পানির সংকটে মহিষগুলি দূর্বল হয়ে যাওয়ায় রোগাক্রান্ত হওয়ায় পাশাপাশি দুধও কমে গেছে। চরাঞ্চলের খামারীদের একমাত্র পানির উৎর্স হচ্ছে মেঘনা নদী থেকে। আর বছরের জানুয়ারী থেকে এপ্রিল চারমাস নদীর পানিতে প্রচুর লবণাক্ততা থাকায় মিষ্টি পানি ও খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়। বছরের এ সময়গুলি খামারীরা কৃত্রিমভাবে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করলেও মহিষের সংখ্যার তুলনায় তা একেবারেই অপ্রতুল। তাই মহিষের সম্ভবনাময় এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন সরকারীভাবে চরে হাউজসহ গভীর নলকূপ স্থাপন করা। তা না হলে মহিষের এই সম্ভাবনাময় শিল্পটি ধ্বংস হয়ে পথে বসতে পারে এসব খামারীরা। চরগুলিতে চর্ম ও বাতরোগে আক্রান্ত হচ্ছে মহিষ। উপজেলা থেকে চরগুলির দূরত্ব বেশি হওয়ায় যথা সময়ে চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে নদীর লবণ পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে মহিষ এতে পুঁজি হারিয়ে বিপাকে পড়ছেন খামারীরা।

খাদ্যের অভাবে মহিষগুলি দিন দিন দূর্বল হয়ে যাচ্ছে।

এক সময় এ উপজেলায় ক্ষুরা রোগ মহিষ খামারীদের মাঝে আতংক ছড়ালেও বর্তমানে চরের সকল মহিষকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বিনা মূল্যে দুইবার রাশিয়ান তৈরী টিকা প্রদান করেন। যার ফলে এখন চরের মহিষ খামারীরা সম্পূর্ণভাবে ক্ষুরা রোগ থেকে মুক্ত রয়েছেন। এছাড়াও মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মহিষ খামারীদেরকে ১শত ২০কেজি ভিটামিন মিনারেল পাউডার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনা মূল্যে কৃমির ঔষধ সরবরাহ করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিষের খামারী নুর ইসলাম (বাবুল মাঝি) বলেন, চরে আমরা যারা মহিষ পালন করি বছরে প্রায় ৬ মাস খাদ্যের তীব্র সংকট থাকে। খাদ্য সংকটের কারণে মহিষ শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে যাওয়ায় দুধ কমে যায়। অন্যদিকে জানুয়ারী থেকে এপ্রিল চারমাস নদীর লবণ পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক মহিষ মারা যায়। এতে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবী চরে হাউজসহ একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের পাশাপাশি উন্নতজাতে ঘাস তৈরীর।উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.পলাশ সরকার (পিএএ) বলেন, বর্তমান সময়ে নদীতে লবণপানি থাকায় মহিষের ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মহিষ মারা যায়। এতে খামারীদের আতংকিত না হয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সাথে চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করতে আহ্বান করবো। অন্যদিকে নদীতে বছরের চার মাস লবণপানি থাকা কালীন মিষ্টি পানির জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে হাউজসহ একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৪৯:০৮   ৬৫ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

তজুমদ্দিন’র আরও খবর


শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা অধ্যক্ষ নির্বাচিত হলেন মুফতি মাও: মুজির উদ্দিন
তজুমদ্দিনে ৮৫৬টি গাছ কেটে রাস্তা চওড়া করার প্রস্তুতি সম্পন্ন ,স্থানীয়দের ক্ষোভ
তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি ॥
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ॥
তজুমদ্দিনে গণহত্যা দিবস পালিত ॥
তজুমদ্দিনে প্রতিবন্ধী শিশুকে শিকল দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ॥
তজুমদ্দিনে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
তজমদ্দিনে পল্লীসেবার আয়োজনে বঙ্গবন্ধু’র জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত ॥
তজুমদ্দিনে সরকারি ২৪ বস্তা চাল উদ্ধার ॥ তদন্ত কমিটি গঠন
তজুমদ্দিনে যুব উৎসব পালিত ॥

আর্কাইভ