ভোলায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন ৫২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

প্রথম পাতা » এক্সক্লুসিভ » ভোলায় মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন ৫২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।
বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১



স্ট্যাফ রির্পোটার।।ভোলাবাণী।। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে বাড়ি পাচ্ছে ভোলার ৫২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের এ ঘর দেওয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৮২টি, দৌলতখান উপজেলায় ৪২টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২৮টি, লালমোহন উপজেলায় ২০টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৮টি, চরফ্যাশন উপজেলায় ৩০টি ও মনপুরা উপজেলায় ২০০টি পরিবার পাচ্ছে ঘর।

---

ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার জন্য ঘর নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে গিয়েছেন ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। এসময় তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আগামী ২৩ জানুয়ারি ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে দ্রুত গতিতে চলছে ঘর নির্মাণের কাজ।
ঘর পাচ্ছেন শুনে আনন্দে আত্মহারা গৃহ ও ভূমিহীন জনগণ। তাঁদেরই একজন জাহানারা বেগম (৬৫)। তিনি বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পরে পাঁচ সন্তান নিয়ে ঠাঁই ছিলো অন্যের জমিতে। শ্রমিক সন্তানরা সংসার চালানোর তেমন কোনো সামর্থ্য নেই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাকা বাড়ি ও জমি পেয়ে আমি ও আমার সন্তানরা অনেক খুশি।
জাহানারা বেগমের মতো জেলার ৫২০টি অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার পেয়ে আনন্দিত। মাথা গোঁজার স্থায়ী আবাসন পেয়ে দারুণ খুশি ভূমিহীন হতদরিদ্র্য সুবিধাভোগী পরিবারগুলো।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় সারাদেশের মতো ভোলায় খাস জমি খুঁজে কাজটি বাস্তবায়ন করছে উপজেলা প্রশাসন। আর নিয়মিত তদারকি করছেন জেলা প্রশাসন।
ভোলা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোলা সদর উপজেলায় ১৮২টি ঘর প্রথম ধাপে অনুমোদন দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না করে নিজেদের মাধ্যমেই এসব নির্মাণ করা হচ্ছে। স্বচ্ছভাবে ঘরগুলো গুণগত মান ধরে রাখার জন্য সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় তদারকি করা হচ্ছে। যাতে যাঁরা এখানে থাকবে, তাদের কোনো অসুবিধা না হয়।

---

ভোলার মনপুরায় ২শত ভূমিহীন ও গৃহহীণ পরিবারের জন্য নির্মিত হচ্ছে আধা-পাকা ঘর । প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সরকারী খাস জমিতে এসব ঘর নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রতিদিন এসব নির্মানাধীন ঘরগুলো সরজমিনে পরিদর্শন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঘরগুলো হস্তান্তর করার জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। বরাদ্ধ প্রাপ্ত গৃহহীণ ও ভূমিহীনদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আগামী ২৩ শে জানুয়ারী সারাদেশে একযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক উদ্ভোধনের পরপরেই ঘরগুলো গৃহহীণ ও ভূমিহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।মুজিববর্ষে “আশ্রয়নের অধিকার , শেখ হাসিনার উপহার” এ শ্লোগান বাস্তবায়নের লক্ষে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে খাস জমিতে ভূমিহীন ও গৃহহীণ ২শত পরিবারকে আধা-পাকা ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।

বরাদ্ধপ্রাপ্ত তালিকায় নাম উঠায় খুব খুশি রহিমা বেগম (২৫)। মা,বাবা ও স্মামী নেই রহিমা বেগমের। এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে থাকেন অন্যের বাড়ীতে ঝুপড়ি ঘর উঠিয়ে। সাবরেজিঃ অফিসে দীর্ঘদিন ধরে ভুয়ার কাজ করেন। ঘর বরাদ্ধের তালিকায় নাম উঠায় চোখে মুখে খুশির ঝিলিক দেখা যায়। জানতে চাইলে দুহাত উঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করেন। বলেন বুয়ার কাজ করে জীবনটা কাটিয়ে দিচ্ছি ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে। টাকা পয়সার অভাবে ঘর করতে পারিনি। বর্ষা ও শীতে অনেক কষ্ট হয়েছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকব আর কষ্ট হবেনা।

মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাচ্ছেন ভোলার ৫২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার।

একই কথা বলেন, উপজেলার হাজির হাট বাধের বাজার পাশে বেড়ীর ডালে বসবাসরত পিয়ারা বেগম(৩৫)। তার স্মামী ও বাবা নেই। এক ছেলে ও মাকে নিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর যাবত বেড়ীর ডালে কোন মতে ঘর উঠিয়ে থাকেন। বরাদ্ধকৃত তালিকায় নাম উঠায় খুব খুশি তিনি। বলেন এখন মাকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘরে থাকব। আর আমাদের কষ্ট হবেনা।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াছ মিয়া জানান, প্রতিটি পরিবারের জন্য দুই শতাংশ খাস জমি বরাদ্ধ দিয়ে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বাথরুম , গোসলখানা, বারান্দাসহ ২ কক্ষ বিশিষ্ট প্রতিটি আধা-পাকা ঘরের নির্মান ব্যয় ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নে ৫৩ টি, হাজিরহাট ইউনিয়নে ৬৪ টি, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নে ৪১ টি ও দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নে ৪২ টি ঘর নির্মানের কাজ চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা বলেন, ঘর নির্মানের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গত ১৩ ডিসেম্বর বরাদ্ধ পেয়েছি। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। প্রতি পরিবারের জন্য ২ শতাংশ খাস জমি কবুলত রেজিঃ করে দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপকারভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে।

শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে দেয়া বাড়ি পাচ্ছেন ভোলার দৌলতখান উপজেলার ভূমিহীন, গৃহহীন, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা ও অতি বৃদ্ধারা। প্রতিটি সেমি পাকা বাড়িতে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাবাড়ি ও একটি বাথরুম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভোলার দৌলতখান উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ওই উপজেলার সরকারি খাস জমিতে চর পাতা, উত্তর জয়নগর ও চর খলিফা ইউনিয়নে তৈরি করা হচ্ছে বাড়িগুলো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি হস্তান্তর করার জন্য ১৩০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছেন।

চরপাতা ইউনিয়নের স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার অসহায় এই মানুষগুলো দীর্ঘদিন ধরে কষ্টে জীবন কাটিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাদের জন্য বাড়ি উপহার দিচ্ছেন। আর বাড়ি পাওয়ার ফলে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত হবে। এ জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়িগুলো উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। যা প্রশংসা করার মতো।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আব্দুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার মতো প্রতিনিয়ত সব মানুষের কথা চিন্তা করেন তার আরও একটি প্রমাণ এটি। প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পেলে দীর্ঘদিনের কষ্টের জীবন শেষ হবে ওইসব মানুষের।

নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, তারা দৌলতখান উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এ ৪২টি বাড়ি নির্মাণ কাজে ১৩০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। তারা আশা করছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

তারা আরও জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রতিদিনই ৪/৫ বার তাদের কাজ পরিদর্শন করতে আসেন। তার নির্দেশে উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে।

দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাওছার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশের মতো দৌলতখান উপজেলায়ও ৪২টি বাড়ি অসহায়, দরিদ্র, ভূমিহীন, গৃহহীন, প্রতিবন্ধী, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা ও অতি বৃদ্ধাদের উপহার দেবেন। এ বাড়ি নির্মাণের জন্য গত ২৪ ডিসেম্বর কাজ শুরু করা হয়। এর মধ্যে চর পাতা ইউনিয়নের ৪০টি, উত্তর জয়নগর ইউনিয়নে একটি ও চর খলিফা ইউনিয়নের একটি বাড়ি রয়েছে। প্রতিটি বাড়িতে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা উন্নতমানে সামগ্রী ব্যবহার করেছি। উপহার ভোগীরা কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই র্দীঘ বছর ধরে বসবাস করতে পারেন এ ঘরে। আগামী ২০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্ধোধন করবেন।

জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না। এ লক্ষ্যেই ভোলায় সরকারি খাস জায়গার ওপর ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে ঘর। এখানে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবে প্রায় ৫২০ পরিবার। যাঁদের কোনো ঘর ও জমি নেই। তাদের এখানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, স্বামী পরিত্যক্তা ও প্রতিবন্ধীদের। প্রত্যেক পরিবারকে দুই একর জমির মালিকানাসহ লিখে দেওয়া হচ্ছে দুই কক্ষের একটি বসতঘর। তার সঙ্গে থাকছে রান্নাঘর, বাথরুম ও সামনে খোলা বারান্দা। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা।

ক্যাপসনঃ
পিক ঃ ১,২,৩ মনপুরায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মানের কাজ চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৭:৫৬   ৬১ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

এক্সক্লুসিভ’র আরও খবর


চরফ্যাশনে পলিথিন ও প্লাস্টিক পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে জ্বালানি তেল
ভোলাবাসীকে ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোঃ আকতার হোসেন
ভোলাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর
ভোলাবাসীকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মিজানুর রহমান শাহিন
অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান ভোলাবাসীকে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মজনু মোল্লা
চরফ্যাশন মনপুরাবাসীকে পবিত্র ঈদ উল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন এমপি জ্যাকব ॥
ভোলায় ৩ শতাধিক অসহায় দুস্থ পরিবারের মুখে হাসি ফুটালো বিবা’র মানবতার দেয়াল
দক্ষিণ আইচায় স্কুল ছাত্র নয়নের রিমোট কন্ট্রোল নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ ভাসছে পানিতে
ভোলার বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না বেশীরভাগ পন্য
বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফ’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আর্কাইভ