অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে পা দিয়ে লিখে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছেন বিউটি

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে পা দিয়ে লিখে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছেন বিউটি
শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯



---ভোলাবাণী নিউজ ডেক্সঃ
অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার মাঝেও এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে ‘এ’ গ্রেড পেয়েছেন বিউটি। এর আগে জেএসসি ও এসএসসিতে পেয়েছিলেন জিপিএ-ফাইভ পেয়েছিলেন। জীবনের সব বাধা পেরিয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চান বিউটি খাতুন।

দুই হাত ছাড়াই যখন বিউটির জন্ম হয়, মা-বাবার প্রধান দুশ্চিন্তা ছিল, মেয়েটা স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারবে তো? পারবে তো এই কঠিন সমাজ বাস্তবতায় টিকে থাকতে? তবে যত দিন যাচ্ছে মা-বাবার কপালে থাকা সেই দুশ্চিন্তার ভাজ ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে। আর ঠোঁটে ফুটে উঠছে হাসি।

বিউটি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক শাখায় ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে চান। তার পছন্দের তালিকায় প্রথমে আছে ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়। তবে যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সুযোগ পেলেও খুশি। ভবিষ্যতে তিনি শিক্ষক হতে চান।

তিনি জানান, লেখাপড়ার পেছনে তার মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। মা তার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন।

বিউটি আক্তারের জন্ম ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর গ্রামে। তার বাবা বায়োজিদ ও মা রহিমা বেগম। বাবা একজন দরিদ্র কৃষক। বিউটির বড় ভাই বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর করেছেন। তবে এখনো চাকরি পাননি। অভাবের সংসার হওয়ায় ছেলেমেয়েকে লেখাপড়ার জন্য ওই দম্পতি অনেক কষ্ট সয়েছেন।

বাবা বায়োজিদ হোসেন বলেন, মেয়ে যখন দুটি হাত ছাড়াই জন্ম নিল, তখন সত্যিকার অর্থে তাদের দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। বিউটি লেখাপড়া করতে পারবে, এটা তাদের ভাবনাতেই ছিল না। শুধু চিন্তা হতো, মেয়েটা একা একা তার প্রয়োজনীয় কাজ সামলাতে পারবে তো?

মা রহিমা বেগম বলেন, বিউটির পড়া বিষয়ে কোনো চিন্তা ছিল না। কারণ, পড়তে পারলেও লেখাটাই ছিল বিউটির জন্য প্রধান সমস্যা।

তিনি বলেন, প্রথমে দিকে তিনি মেয়েকে পা দিয়ে লেখা শেখানোর চেষ্টা করতেন। ঘরের মেঝেতে বসিয়ে তার ডান পায়ের আঙুলের ফাঁকে পেনসিল অথবা কলম ধরিয়ে দিতেন। শুরু দিকে বিউটির খুব সমস্যা হতো। তবে প্রতিনিয়ত বিউটি চেষ্টা চালিয়ে যান। একপর্যায়ে পা দিয়ে লেখা আয়ত্তে আনেন।

রহিমা আরও বলেন, বিউটির অদম্য মনোবলই তাকে এত দূর নিয়ে এসেছে। যতই কষ্ট হোক, তাকে উচ্চশিক্ষিত করে তুলবেন।

দুপচাঁচিয়া মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ সামছুল হক বলেন, মেয়েটি মেধাবী। নিয়মিত ক্লাস করত। পা দিয়ে লিখলেও তার ইংরেজি ও বাংলা দুটি লেখাই ভালো। অধ্যক্ষের ধারণা, পা দিয়ে লেখার জন্য খুব দ্রুত লিখতে একটু সমস্যার কারণে আশানুরূপ ফলাফল করতে পারেননি বিউটি।

ক্ষেতলালের আকলাস শিবপুর শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকাম উদ্দীন বলেন, বিউটি আক্তার পা দিয়ে লিখে তার বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩২:৫৯   ১৬৬ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


তজুমদ্দিনে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে ৩শ কেজি পাঙ্গাসের পোনা আটক ॥
প্রাইম ইউনিভার্সিটি ও ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মধ্যে যৌথ চুক্তি স্বাক্ষরিত
ভোলা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ আপনারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ লালমোহনে দোয়াত কলম সমর্থকদের ওপর শালিক সমর্থকদের হামলার অভিযোগ
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য নিহত
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় চলছে বাগদার রেণু শিকারের মহোৎসব
ড্রেজারে সরকারি জলাশয়ের মাটি খনন ঝুঁকিতে মুজিব কিল্লা
চরফ্যাশনে সড়ক দুর্ঘটনায় পুলিশ সদস্য নিহত
এসএসসিতে বরিশাল বোর্ডে শীর্ষে পিরোজপুর জেলা
ভোলা শহরে নেই কোন গণশৌচাগার ॥ জনগনের ভোগান্তি চরমে

আর্কাইভ