জসিম জনি,ভোলা বাণী : ভোলার লালমোহনের ৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চলে ডেন্টাল ডাক্তার, নার্স ও সহকারীদের দিয়ে। ডাক্তার সংকটের কারণে হাসপাতালটিতে জরুরী বিভাগেও রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকেই রোগীর সেবা দিতে হয়। আর মাত্র দুইজন ডাক্তার থাকলেও তাদের একজন ডেন্টাল ও অন্যজন কনসালটেন্ট। এতোবড় একটি হাসপাতালে ডাক্তার শূন্যতার ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে বেঘাত ঘটছে। হাসপাতালে এ অবস্থার জন্য জরুরী ভিত্তিতে জেলা সিভিল সার্জনের কাছে পার্শ্ববর্তী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাক্তার ধার চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ৫০ শয্যার লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন ডাক্তারের স্থলে এখন মাত্র ৩ জন ডাক্তারই দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ হাসপাতালে মাস কয়েক আগেও ১৩ জন ডাক্তার থাকলেও তাদের ১০ জনই বিভিন্ন কায়দায় শহরমুখী হয়ে বদলী হয়ে যান। এনেসথেসিয়া (অজ্ঞান) ডাক্তার ও সার্জন না থাকার কারণে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের তালা গত দেড় বছর পর্যন্ত খোলেনি। অথচ বছর দুয়েক আগে সিজার অপারেশনসহ জটিল রোগীদের অপারেশনের জন্য লালমোহনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন অপারেশন থিয়েটারটি উদ্বোধন করেন। এক এক করে হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ চলে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সন্তোষ কুমার। বুধবার এনিয়ে বৈঠক করে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালু রাখতে ডেন্টালের ডা: রিয়াজ উদ্দিন ও কনসালটেন্ট ডা: মহিবুর রহমানকে আউটডোর, ইনডোরের সকল রোগী দেখার দায়ীত্ব দেয়া হয়। এছাড়া জরুরী বিভাগ চালু রাখতে অবসরে যাওয়া উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রামকৃষ্ণকে সাময়ীক দায়ীত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ডা: সন্তোষ কুমার। তিনি জানান, হাসপাতালে ৩টি ওয়ার্ড রয়েছে। এসব ওয়ার্ডে এখন সিস্টারদের দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। যথাসম্ভব তারাই সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। জরুরী রোগীদের বেলায় আমরাই গিয়ে দেখছি। এছাড়া হাসপাতালে পূর্ব থেকে চালু থাকা ৩টি বিভাগ শিশু স্বাস্থ্য করণীয় (আইএমসি), অসংক্রামক রোগ চিকিৎসা কেন্দ্র (এনসিটি) এবং গর্ভবতী ও গর্ভত্তোর চিকিৎসা কেন্দ্র চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় গাইনি, অর্থপেডিক্সসহ সকল ধরণের রোগীদের ৩ জন ডাক্তারকে দেখাশুনা করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোগীদের চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখতে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তার দেওয়ার জন্য বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ও জেলা সিভিল সার্জনের কাছে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সন্তোষ কুমার। পাশ^বর্তী উপজেলার হাসপাতাল থেকে একজন ডাক্তারকে আপাতত পাঠানো হচ্ছে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:১১:২৭ ১৯৭ বার পঠিত |