।।ভোলাবাণী বিভাগীয় সংবাদ।। সংসারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে না পরায় বরিশাল শহরতলীর কাউনিয়া থানার আওতাধীন চরবাড়িয়ায় দিনমজুর মোক্তার হোসেন বেপারীকে (৪৮) কুপিয়ে হত্যা করেছে তার স্ত্রী-সন্তানরা। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মোক্তার বেপারীর মৃত্যু হয়। তিনি চরবাড়িয়া এলাকার মৃত আফেজ উদ্দিন বেপারীর ছেলে।
আটকরা হলেন- নিহত মোক্তার হোসেনের স্ত্রী মনিরা বেগম (৩৭), মেয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী তানজিলা আক্তার (১৭) ও ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আফিজুল ইসলাম (১৩)।
আটকরা হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম।
নিহত মোক্তার বেপারীর ছোট বোন শিল্পী বেগম জানান, দুই দশক আগে বানারীপাড়া উপজেলার চাখারের বাসিন্দা মজিদ হাওলাদারের মেয়ে মনিরা বেগমের সঙ্গে তার ভাই মোক্তার বেপারীর বিয়ে হয়েছিল। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। মেয়ে তানজিলা আক্তার সরকারি মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। আর বাড়ি সংলগ্ন চরবাড়িয়া বোর্ড স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছেলে আফিজুল ইসলাম। তবে বছর তিনেক ধরে সন্তানদের পড়ালেখা ও আনান্য খরচের টাকার জন্য রাজমিস্ত্রীর জোগালে (সহযোগী) মোক্তারের ওপর চাপ দিতে থাকে স্ত্রী মনিরা বেগম। এনিয়ে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। আর্থিক চাহিদা মেটাতে না পরায় তার ভাইকে স্ত্রী ও দুই সন্তান মিলে হত্যা করেছে।
নিহত মোক্তার হোসেনের মামী প্রতিবেশী কমলা বেগম বলেন, ঘটনার পর আমি দৌড়ে গিয়ে দেখি আহত মোক্তারের শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। স্ত্রী মনিরা ও মেয়ে তানজিলা তাকে কুপিয়ে আহত করে।
চরবাড়িয়া ৭নং ওয়ার্ড ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহিদুল আলম তুহিন বলেন, ভোর ৪টার দিকে মোক্তারকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এরপর পর সকাল ৬টার দিকে আমার মোবাইলে ফোন করে মনিরা বেগম স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার কথা বলেন। এরপর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে মোক্তারকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠাই। এ সময় থানায় জানালে পুলিশ মনিরা বেগম ও তার দুই সন্তানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-৪ রেজিস্ট্রার ডা. মো. ইখতিয়ার আহসান জানান, নিহতে মোক্তারের মাথায় ধারালো অস্ত্রের ৮ থেকে ১০টি আঘাত রয়েছে। আর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
কাউনিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের স্ত্রী ও দুই সন্তানকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পারিবারিক কলহের জেরে মোক্তার বেপারীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে আটকরা। মোক্তারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্ততি চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০৪:২৭ ১৯৩ বার পঠিত |