মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭

বিলুপ্তের পথে কালোজিরা ধান

প্রথম পাতা » বিশেষ প্রতিবেদন » বিলুপ্তের পথে কালোজিরা ধান
মঙ্গলবার, ২ মে ২০১৭



 

---

ভোলায় এক সময় কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল কালোজিরা ধান। প্রায় ২০ বছরের ব্যবধানে এ ধানের জায়গা দখল করে নিয়েছে উফশী ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান। শুধু কালোজিরা ধান নয়, ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সারাদেশ থেকেই হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতিবান্ধব হাজারও জাতের দেশি ধান।

কালোজিরা, কাশিয়াবিন্নি, সরুসহ বিভিন্ন জাতের সুগন্ধি চিকন চাল দিয়ে তৈরি হয় পোলাও, বিরিয়ানি, খিচুড়ি, শিন্নি-পায়েস, ফিরনি ও জর্দাসহ আরো সুস্বাদু মুখরোচক নানা ধরনের খাবার। কিন্তু এসবই এখন কালের স্মৃতি। হাট বাজারে এখন আর এই চাল পাওয়া যায় না। বিলুপ্তের পথে এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী এ সুগন্ধি ধান।

সরেজমিনে ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ওই সব জাতের ধান আবাদকারী কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ জাতের ধানের ফলন হয় কম। বিঘাপ্রতি অন্য জাতের ধান যেখানে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ মণ উৎপন্ন হয় সেখানে এ জাতের ফলন হয় সর্বোচ্চ আট মণ পর্যন্ত। তবে বাজারে দাম দ্বিগুণ পাওয়া যায়। সার, সেচ ও পরিচর্যাও লাগে কম। সে হিসেবে আবাদে লোকসান হয় না বললেও চলে। এখনো গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের কাছে এ ধানের কদর যথেষ্ট।

---জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ জাতের ধান আগে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে আবাদ হতো। কিন্তু এসব ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরা বীজ আমদানির ওপর নিভর্রশীল হয়ে পড়েন। এর ফলে হারিয়ে যাচ্ছে এক সময়ের জনপ্রিয় কালোজিরা কাশিয়াবিন্নি, সরু, বেগুনবিচি, জামাইভোগ, দাদখানি ও খৈয়া মটরসহ নানা জাতের দেশি ধান।

সূত্রে জানা যায়, সরকারের কৃষি বিভাগের মাধ্যমে এ জাতের ধান আবাদে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা বা প্রদর্শনী প্লট প্রকল্প গ্রহণ করলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তির হাত থেকে তা ফেরানো সম্ভব হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন (এইও) বলেন, কালোজিরা ধান উপজেলায় প্রায় ৩২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের চেয়ে এ ধানের ফলন কম হয় বিধায় কৃষকরা এ ধানের চাষ কম করেন। কৃষকরা নিজ আগ্রহে এ জাতের ধান চাষ করেন। এ ধানটি দেশীয় জাতের ধানের মধ্যে অন্যতম।

এম আবু সিদ্দিক

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫১:৫৯   ১৬৯৮ বার পঠিত  |