ভোলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে আরবের খেজুর চাষ

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ভোলায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে আরবের খেজুর চাষ
রবিবার, ২৬ জুন ২০২২



শিমুল চৌধুরী।।ভোলাবাণী।।
ভোলার উপকূলের মাটি সম্ভাবনাময় হয়ে উঠছে মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর চাষে। এই খেজুর চাষে উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন দ্বীপ জেলার চাষিরা। তাই এ জেলার উঁচু জমিতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে সৌদি আরবের খেজুরের চাষ।

এ কাজের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নের দালালপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে সৌদি আরবের আজোয়া, সুক্কারি, মরিয়ম, খালাছ, আম্বারসহ বিভিন্ন প্রজাতির খেজুর। ভোলার উষ্ণ আবহাওয়া ও রুক্ষ মাটিতে ধানের পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে চাষ হচ্ছে মরুর খেজুর। অন্যান্য ফলের চেয়ে এই খেজুরের সংরক্ষণকাল, চাহিদা ও বাজারমূল্য বেশি। তাই বাণিজ্যিকভাবে খেজুরের বাগান করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন এখানকার স্থানীয় চাষিরা। এগুলো আকার ও স্বাদে সৌদি খেজুরের মতো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা বেশি।
মোসলেম উদ্দিনের বাগানে খেজুর গাছ।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দালালপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মেসার্স হাজি এগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী হাজি মো. মোসলেম উদ্দিন ২০২০ সালে ৪০ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের ড্রাগনের পাশাপাশি চাষ করছেন সৌদি আরবের খেজুরের। দুই বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের এ ফলের গাছ থেকে ফল আসতে শুরু করে। এখন তাঁর বাগানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ২৫০টি খেজুর ও ২১০টি ড্রাগন গাছ রয়েছে। এর মধ্যে সুক্কারি জাতের দুটি গাছে ইতিমধ্যে প্রচুর খেজুর ধরেছে। এবং ড্রাগনের প্রতিটি গাছেও রয়েছে ফল। ওই বাগান ছাড়াও তাঁর বাড়ির আঙিনার নার্সারিতে আরও প্রায় ৩০০ খেজুরের চারা রয়েছে। বয়স অনুযায়ী প্রতি পিছ চারা ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এ ছাড়া ৬০০ পিস ড্রাগনের কাটিং রয়েছে। প্রতি ড্রাগনের পিস ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন। এই জমিতে খেজুর ও ড্রাগন দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে বহু মানুষ।

এ বিষয়ে চাষি মোসলেহ উদ্দিন জানান, তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর সৌদি আরবে বসবাস করেছেন। তিন বছর আগে দেশে আসার সময় সৌদি আরব থেকে বিভিন্ন প্রজাতির খেজুরের বীজ নিয়ে আসেন। ওই বীজ তিনি তাঁর বাড়ির আঙিনায় রোপণ করেন। তিনি এখন খেজুরের বাগান করার জন্য পাশের ইউনিয়ন কাচিয়ার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাচিয়া গ্রামে ৪০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে ১৬ শতাংশ জমিতে পুকুর ও বাকি ২৪ শতাংশ জমিতে খেজুরের চারা এবং উন্নত জাতের ড্রাগনের কাটিং রোপণ করেন।

চাষি মোসলেহ উদ্দিন আরও জানান, এটা একটা চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট হলেও লাভজনক ব্যবসা। শুরুতে এলাকার মানুষ হাসি-ঠাট্টা করলেও ফলন আসার পর অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। জমিসংকটের কারণে বাগান সম্প্রসারণ করতে পারছেন না। একসময় তাঁর বাগানের খেজুর ভোলাসহ সারা দেশে রপ্তানি হবে বলেও তিনি আশা করেন।

এ বিষয়ে টবগী ইউনিয়নের মুলাইপত্তন গ্রামের বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘মোসলেম উদ্দিনের বাগান দেখে আমি উদ্বুদ্ধ হয়েছি। তাঁর কাছ থেকে ২৩টি খেজুর গাছের চারা নিয়ে আমি রোপণ করেছি।’

মোসলেহ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, এ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শের জন্য বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিসে গেলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। কৃষি অফিসে কয়েকবার যাওয়ার পর কয়েক মাস আগে একবার এসে দেখে গেছেন। এরপর অনেকবার যোগাযোগ করেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি অফিসার এইচ এম. সামীম আজ রোববার সকালে বলেন, সৌদি আরবের খেজুর মরুভূমির ফসল। তবু অনেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ফসলটি চাষ করছেন। এর মধ্যে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার টবগী ইউনিয়নে একজন চাষি এই ফসল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন বলে শুনেছি। অনেক সময় বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আমাদের কর্মকর্তারা সময় দিতে পারেন না। তব, খুব শিগগিরই তাঁর বাগানটি পরিদর্শন করে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১:২৫:৪৬   ৮৫ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


ইফতারে প্রশান্তি দেবে চিড়া-ফলের ডেজার্ট
জেলায় মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
ভোলায় ১৫৬ জেলের কারাদণ্ড
ভোলার বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না বেশীরভাগ পন্য
ভোলায় নানা আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে সিরিজতামিম-রিশাদ ঝড়ে টাইগারদের সিরিজ জয়
তজুমদ্দিনে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
মনপুরায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মশতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত ॥
মাহে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়
পবিত্র মাহে রমজানের ৮ সুন্নত

আর্কাইভ