সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তজুমদ্দিনের মেঘনায় প্রকাশ্যে রেণু পোনা ধ্বংস করছে একটি মহল!!

প্রথম পাতা » তজুমদ্দিন » সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তজুমদ্দিনের মেঘনায় প্রকাশ্যে রেণু পোনা ধ্বংস করছে একটি মহল!!
রবিবার, ৭ মে ২০২৩



মেহেদী হাসান মামুন। ।ভোলাবাণী।।

ভোলার তজুমদ্দিন মেঘনা নদীতে বাগদা-গলদা পোনা নিধনের মহোৎসব চলছে। উপজেলার অন্তত ১৮-২০ টি স্পট হতে প্রকাশ্যে বিভিন্ন প্রজাতির রেনু পোনা আহরণ ও পরিবহন করা হলেও প্রশাসন এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য প্রজাতির মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে।

তজুমদ্দিনের মেঘনায় প্রকাশ্যে রেণু পোনা ধ্বংস করছে একটি মহল!!

স্থানীয় সুত্রে প্রকাশ, সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে দেদারছে বাগদা ও গলদা পোনা শিকার। অন্ততঃ হাজার কজানেক ভ্রাম্যমান জেলে রাতদিন মেঘনার বিভিন্ন স্থান থেকে গলদা-বাগদার রেনু পোনা ধরছে । এর সাথে যুক্ত আছে আড়তদার ও ঘের মালিক সহ বিভিন্ন শ্রেনীর লোক। গলদা চিংড়ির আড়তদাররা সাধারন জেলেদের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে অল্প টাকায় রেনু পোনা শিকার করতে বাধ্য করছে। অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টরা পোনা শিকারের বিষয়টি বিনিময়সূত্রে দেখেও না দেখার ভান করছে।মেঘনা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার শশীগঞ্জ মৎস্য ঘাট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ, কেয়ামুল্যা বটতলা, ধোপারনীর খাল, চৌমুহনী, মহেষখালী বাগানের খাল, চাচড়ার কাটাখালিসহ ১৮-২০ টি স্পটে প্রকাশ্যে গলদা চিংড়ির রেনু কেনা বেচা চলছে।
মাছ ঘাটের এ বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে অধিকাংশই অভাবগ্রস্থ পরিবারের সদস্য। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রয়েছে নারী ও শিশু কিশোর। মৌসুমে দু’পয়সা উপার্জনের জন্য মেঘনা তীরবর্তী চরাঞ্চলের অভাবী পরিবারের শিশু কিশোর লেখাপড়া বাদ দিয়ে সাময়িক ভাবে নেমে পড়েছে পোনা শিকারে।

ভারতের তৈরী বিশেষ এক প্রকার জাল ও ভাসা জাল দিয়ে চলছে পোনা শিকার। কিন্তু পোনা শিকারীরা পোনা শিকার করতে গিয়ে প্রতিদিন অন্যান্য প্রজাতির অসংখ্য মাছের রেনু পোনা এবং মাছের জলজ খাদ্যকনা বিনষ্ট করে চলছে। এতে নদীতে এসব মাছ বিলুপ্ত ও খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।

মৎস্য বিভাগের সূত্র মতে, মাত্র একটি চিংড়ি পোনার জন্য পোনা শিকারীরা ২ শতাধিক অন্যান্য জাতের মাছের রেনু পোনা মেরে ফেলছে। ফলে নদীর ভারসাম্য নস্ট হচ্ছে। নদী থেকে বেপরোয়া চিংড়ি পোনা নিধন বন্ধে ২০০১ সালে মৎস ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার বিষয়ে মৎস বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে কোন তৎপরতাই নেই ।

গত সপ্তাহে কোষ্টগার্ড কেয়ামুল্যা বটতলায় গলদা রেণুর আড়তে অভিযান চালালেও কোন ব্যবস্থা গ্রহনের সংবাদ পাওয়া যায়নি। অভিযানের কয়েক ঘন্টা ব্যবধানে আবার শুরু হয় পোনা শিকার, বিপণন। এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, তজুমদ্দিন উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কতিপয় জনপ্রতিনিধি এই চিংড়ির রেনূ নিধনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা পোনা সংগ্রহের জন্য মেঘনা তীরবর্তী চাচড়া, কেয়ামুল্যা, মহেশখালী, বাগানের খাল ও হাকিমুদ্দিনের ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট।

এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রতিদিন তজুমদ্দিন ও হাকিমুদ্দিনের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার হাজার ব্রেল পোনা পাচার হয় । আড়ৎদাররা এ পোনা ট্রাকে করে খুলনা, মংলা, বাগেরহাট সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌছে দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে তজুমদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে জেলেদেরকে সচেতন করা কিংবা রেনু পোনা শিকার না করার জন্য জেলেদেরকে সর্তক করা যাচ্ছে না । দক্ষিন আইচা কোষ্ট গার্ডের পেটি অফিসার এস,এম রানা বলেন, রেনু শিকার বন্ধ রাখতে প্রতিদিনই আমরা মেঘনা-তেতুলিয়ায় অভিযান চালাচ্ছি ।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৭:০৮   ১০১ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

তজুমদ্দিন’র আরও খবর


গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ॥
তজুমদ্দিনে গণহত্যা দিবস পালিত ॥
তজুমদ্দিনে প্রতিবন্ধী শিশুকে শিকল দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ ॥
তজুমদ্দিনে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
তজমদ্দিনে পল্লীসেবার আয়োজনে বঙ্গবন্ধু’র জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত ॥
তজুমদ্দিনে সরকারি ২৪ বস্তা চাল উদ্ধার ॥ তদন্ত কমিটি গঠন
তজুমদ্দিনে যুব উৎসব পালিত ॥
জনবল সংকটে তজুমদ্দিনে বেহাল প্রাথমিক শিক্ষা ॥
তজুমদ্দিনে কেক কাটা, র‍্যালি ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এশিয়ান টিভির ১১ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ।
তজুমদ্দিনে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত

আর্কাইভ