আলমগীর হোসেন :ভোলা বাণী: ভোলার মনপুরা উপজেলার বনবিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কেওড়া গাছ প্রতিনিয়ত রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে যাচ্ছে প্রভাবশালীরা। বনবিভাগের কতিপয় লোকজনদের সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালীরা আঁতাত করে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা বলছেন, কোড়ালিয়া বিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট দিলেই গাছ কাটার মৌখিক অনুমতি দেন তিনি।
তবে বিট কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এই অভিযোগ অস্বীকার করেন বলেন, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কতিপয় লোক মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, রাতের আঁধারে প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে ৮-১০ জনের এক একটি গ্রুপে ভাগ হয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশ করে গাছ কাটা শুরু হয়ে শেষ হয় ভোর পর্যন্ত। এর মধ্যে কাটা গাছ টুকরো করে রাখে। পরদিন রাতে ফের কাটা গাছের টুকরো ভ্যানযোগে স’মিলে নিয়ে যাওয়ার পর শুরু হয় ভাঙ্গানোর কাজ, চলে ভোর পর্যন্ত। পরে এই সমস্ত গাছ স’মিলে ভাঙ্গিয়ে রুপা, বাগা ও তক্তা করা হয়। এই সমস্তু রুপা, বাগা ও তক্তা বিক্রি করে হাত প্রতি ৫০ টাকা করে।
তবে, স্থানীয়রা প্রভাবশালীদের ভয়ে এ কারবারিদের নাম বলতে রাজি নন।
সরেজমিনে গত তিন দিন ঘুরে দেখা যায়, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আলম বাজার সংলগ্ন সংরক্ষিত বনে ৩০টি কেওড়া গাছ কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। এই সমস্ত গাছ ছোট ছোট টুকরো করে রাখা হয়েছে। কাটা গাছের গোড়ায় কাঁদা মাটি দিয়ে লেপে দেয় গাছ খেকোরা। যাতে বুঝা যায় অনেক পুরানো গাছের গোড়া। পাশাপাশি একই ইউনিয়নের তালতলা, লতাখালী সংলগ্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চলে রয়েছে কাটা গাছসহ কেটে নেয়া গাছের অসংখ্য গোড়া। এছাড়াও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাঝের কাঠি, কোড়ালিয়া, হাজিরহাট ইউনিয়নের জংলার খাল, মনপুরা ইউনিয়নের কলাতলীরচর সংলগ্ন বনাঞ্চলের একই অবস্থা।
এছাড়াও উপজেলার ৩০ কিলোমিটার পাকা সড়কের দুই পাশের রেন্ট্রি, আকাশমনি, শিশু, মেহগনি গাছ কেটে নিয়ে গেছে প্রভাবশালীরা।
এ ব্যাপারে মনপুরা বনবিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সুকুমার রায় জানান, সংরক্ষিত বনের গাছ কাটার জন্য অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারপরও গাছখেকোদের ধরতে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫১:৫৪ ১১৫ বার পঠিত |