বুধবার, ৮ মে ২০১৯

রোজায় ডায়াবেটিস আক্রান্তদের করণীয়

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রোজায় ডায়াবেটিস আক্রান্তদের করণীয়
বুধবার, ৮ মে ২০১৯



---ভোলাবাণী লাইফস্টাইলঃ মঙ্গলবার থেকে রমজান মাস শুরু হয়েছে। মুসলমানদের কাছে অবশ্য পালনীয় রোজা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখাও জরুরি।

কারণ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিয়ম মেনে ও সময় মতো খাবার খেতে হয়। সেই সঙ্গে দিনের বিভিন্ন সময় তাদের ওষুধ নেয়ার দরকার হয়। ফলে সেহরি এবং ইফতারের মধ্যে দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার প্রভাব পড়তে পারে তাদের শরীরে।

রমজান মাসে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির রোজা রাখার ক্ষেত্রে কী কী করণীয়?

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আলীমের পরামর্শগুলো তুলে ধরা হলো-

১. রোজার আগেই ডায়াবেটিক পরীক্ষা

রোজা শুরুর আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ ঠিক করে নিতে হবে ডায়াবেটিক রোগীদের। স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুযায়ী তাদের রোজা পালন করা উচিত হবে কিনা বা কিভাবে করতে পারবেন, তা নিয়ে চিকিৎসক পরামর্শ দেবেন।

২. হাইপোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি

দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে ডায়াবেটিক রোগীদের রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে গিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। তখন প্রচুর ঘাম হয়, বুক ধড়ফড় করে।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন, এরকম পরিস্থিতি দেখা গেলে সঙ্গে সঙ্গে শরবত বা ব মিষ্টি জাতীয় কিছু মুখে দিতে হবে। স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য তখনি রোজা ভেঙ্গে ফেলার জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। না হলে মৃত্যু ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। এজন্য সব সময়ে সঙ্গে মিষ্টি চকলেট বহন করার পরার্মশ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

৩. সকালের খাবার ইফতারে আর রাতের খাবার সেহরিতে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. শারমিন রুমি আলীম বলেন, রোজায় ডায়াবেটিক রোগীদের খাবারের ক্ষেত্রে সহজ পরামর্শ হলো, আপনি সকালে যে খাবারটি খেতেন, সেটা খাবেন সন্ধ্যায় আর রাতে যে খাবারটি খেতেন, সেটা খাবেন সেহরিতে। দুপুরের খাবার রাতে খেতে পারেন।

তিনি বলছেন, আমাদের দেশে ইফতারিতে যে ভাজাপোড়া খাওয়ার চল রয়েছে সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ভালো নয়। ইফতারে দই চিড়া, রুটি বা সবজি, ১/২ টা খেজুর, ফলমূল খেলে শরীরের জন্য ভালো।

রাতের খাবারের ক্ষেত্রে ভাতের বদলে আটার তৈরি খাবার বা রুটি খেতে পারলে তা শরীরের জন্য ভালো, যেহেতু এটি দীর্ঘসময় নিয়ে হজম হয়ে থাকে। খাবার খেতে হবে সেহরির সময় শেষ হওয়ার কিছু আগে।

৪. চিনির শরবত বাদ দিয়ে ফলের শরবত বা ডাবের পানি

চিনি বা বাজারের বিভিন্ন ধরণের শরবত বাদ দিয়ে বরং ডাবের পানি বা ফলের শরবত ইফতারিতে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা।

সেহরিতে ভারী খাবারের পরিবর্তে যতটা বেশি সম্ভব তরল পান করতে হবে। ইফতারির পর থেকে সেহরি পর্যন্ত যতটা বেশি সম্ভব পানি পান করতে হবে।

৫. ব্যায়াম

যে সকল ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত ব্যায়াম করে থাকেন, রোজার রাখার সময় তাদের নিয়মের কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে।

যেহেতু অন্যান্য সময় ব্যায়ামের পরে তারা খাবার বা পানি খেয়ে থাকেন, কিন্তু রোজার সময় সেটি সম্ভব হয় না, ফলে শরীরে শর্করার মাত্রা অনেক কমে যেতে পারে।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সন্ধ্যার পর অথবা সেহরির আগে হাটাহাটি বা ব্যায়াম করতে পারেন রোজাদার ডায়াবেটিক রোগীরা।

বিবিসি বাংলার সৌজন্যে

বাংলাদেশ সময়: ৯:২৮:০৩   ২৪৩ বার পঠিত  |