শীত নেই শীতকালে

প্রথম পাতা » সাহিত্য পাতা » শীত নেই শীতকালে
বুধবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৭



---ভোলা বাণী : খেয়ালী প্রকৃতি অধিকার করে নিয়েছে আবহমান বাংলাকে। এখন যেন আর পঞ্জিকার অনুশাসন মানছে না। এই ঘোর শীতকালেও শীতের দেখা নেই। শীতের তীব্রতা না ছড়িয়েই প্রমাদ গুণছে পৌষ। শৈত্যপ্রবাহ কবে আসবে-এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে প্রহর গুণছে শীতবিলাসী মানুষ। অসচ্ছলরা শীতের কাপড়-চোপড় সংগ্রহে ব্যস্ত। তাপমাত্রা নামতেই চাচ্ছে না।

গত সোমবারও ঢাকায় সর্বোচ্চ ২৭ আর সর্বনিম্ন ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল তাপমাত্রা।

বিগত বছরেও এই একই সময়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবায়ে যবুথবু ছিল মানুষ। বাতাসে তাপমাত্রা নেমে এসেছিল ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। কিন্তু এবার ধরা দিচ্ছে আলাদা চিত্র। গতকাল সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দফতরের কোনো পূর্বাভাসই প্রকৃতিতে প্রতিফলিত হচ্ছে না।

ডিসেম্বরের শেষার্ধে উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে কিছুই খাটেনি। উত্তরাঞ্চলে ঘন কুয়াশা ও শীতের আমেজ থাকলেও মধ্যাঞ্চলে এখনও গরম কাপড়ে সর্বাঙ্গ আবৃত করার সেই শীত আসেনি। লেপ-তোষক তো বাক্স-পেটরায় পড়েই আছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় এবার এই শীত মৌসুমে এখন পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা বেশি। গত বছর এসময় শীতের তীব্রতাও ছিল বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদকে বলেন, সাইবেরীয় উচ্চ চাপ বলয় ও উত্তর-পশ্চিমা শক্তিশালী বায়ু প্রবাহের দুর্বলতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব ও তত্সংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘নাদা’র কারণে শীতের তীব্রতা নেই, এখনো শীত কম অনুভূত হচ্ছে। চলতি মাসে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

মুলত: বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীতের মৌসুম ধরা হয়। শীত আসে, ডুবিয়ে দেয় কুয়াশায়। বাজারে ভিড় বাড়ে, বদলে যায় দিনের হিসাব, সাজ-পোশাক বদলে যায়। শীত যে একেবারে পড়ছে না- তা নয়। গ্রামীণ জনপদে শীত যেটুকু নেমেছে তাতেই মৌতাত নিচ্ছে মানুষ। সৃষ্টি হয়েছে নতুন আমেজ ও উত্সব। উঁচু গাছের মাথায় কুয়াশার প্রলেপ। গাছের পাতার গায়ে হলদে রঙ। শোনা যাচ্ছে তাদের ঝরে পড়ার শব্দ। সূর্য তড়িঘড়ি টুপ করে ডুব দিচ্ছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে যেটুকু ঠাণ্ডা পরশ তাতেই বাতাসে শীতের গন্ধ। গরম চা আর ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠা পথে পথে। বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু। হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শীত। গ্রাম জীবনে শীত এসেছে নানা মাত্রা নিয়ে। গ্রামীণ জীবনে শীত ঋতু যেন ‘ব্রাত্যজন’। বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর প্রধান তিনটির একটি শীতকাল। শীত হলো সমৃদ্ধির প্রতীক।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘শরত্-হেমন্ত-শীতে মানুষের ফসলের ভাণ্ডার। সে জন্য সেখানে তার তিন মহল, ঐ খানে এর সাথে একজন কৃষকের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা যুক্ত, কষ্টের ভেতরেও তার প্রাপ্তি আছে।’ আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই জানুয়ারি মাসে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এসময় এসব অঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ও অন্যত্র মৃদু (৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সামগ্রিকভাবে বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক বলছেন, মাঘের শুরু থেকেই শীত তার স্বাভাবিক চরিত্রে ফিরে আসতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:০৩:০৫   ৪৪৫ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

সাহিত্য পাতা’র আরও খবর


ভোলায় বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরন
ভোলায় ৩দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক উৎসব ও পিঠামেলা শুরু
ভোলায় ২দিন ব্যাপী জেলা সাহিত্য মেলার উদ্বোধন
ভোলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত
উন্নত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হবে আজকের তরুণ সমাজ- প্রধানমন্ত্রী
মুক্তবুলির সেরা লেখক সম্মাননা পেলেন ১৪ জন
মা জননী স্বর্গখনি
২৫ বছর ধরে কবিতা লিখছেন ডিপ্লোমা চিকিৎসক মহিউদ্দিন
দ্বিতীয়বারের মতো সাহিত্য সম্মাননা পেলেন ভোলার ছেলে শামসুদ্দীন
তোমারি_অপেক্ষায়

আর্কাইভ