লালমোহনে কৃষকদের ৪৫ বছরের বন্দোবস্ত জমি দখল,আবাসন প্রকল্প তৈরি করছেন কিছু অসাধু ঠিকাদার।

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » লালমোহনে কৃষকদের ৪৫ বছরের বন্দোবস্ত জমি দখল,আবাসন প্রকল্প তৈরি করছেন কিছু অসাধু ঠিকাদার।
রবিবার, ২ জুলাই ২০১৭



---মোঃআমজাদ হোসেন।।ভোলাবাণী।।লালমোহন প্রতিনিধি:ভোলার লালমোহন উপজেলার ৭ নং পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের অধীনে চর কচুয়াখালীর সাধারণ কৃষকদের বন্দোবস্তকৃত চাষাবাদের ফসলি জমি জোর পূর্বক দখল করে আবাসন প্রকল্প তৈরি করছেন অসাধু ঠিকাদার আসাদ মেলাকার, সালাউদ্দিন কন্ট্রাক্টার,আলী মেম্বারের ছেলে মোস্তফা(৪০),চর আ’লীগ সভাপতি শাহে আলম মিস্ত্রী(৫০),বাচ্চু মাতাব্বর(৪০), আক্তার মাতাব্বর(২৩) এবং ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি শাহিন মাতাব্বর(৩৫) সহ কিছু ব্যক্তি।জানা যায় এই চরে ভূমিহীন স্থানীয় সাধারণ কৃষক পরিবারের লোকজনদের তাদের নিজেদের নামে ৯ একর করে চাষাবাদের জমি বন্দোবস্ত দিয়েছেন তৎকালীন সরকার।এরপর ১৯৯৮ সালে এই চরে ধীরে ধীরে বসতি স্থাপন শুরু হয়।তখন মোট ২২০ টি ঘর তৈরি করে দেয়া হয় কৃষকদের থাকার জন্য।আজ এই চরের বেহাল দশা,এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা চরের একেবারে বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি আজিজ সরদার(৭০) ক্ষোভের সাথে চরে তার বসতি জীবনে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব দিতে থাকেন।তিনি বলেন চরে প্রথমে বসতি ছিলো ২২০ টি,এরমধ্যে আজ ঘর আছে প্রায় ১০০’র মতো।সবাই ঘর ভেংগে বা বিক্রি করে অন্যর্থ্য চলে গেছে।অবশ্য যাবার কারনও বলেছেন আজিজ সরদারের মতো আরও অনেকে।এখানে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা দেবার মতো নেই কোন হাসপাতাল,শিশুদের লেখাপড়া শেখানোর জন্য কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত নেই।মোট কথা এখানে ৬টি মৌলিক চাহিদার একটিও ব্যবস্থা ছিলোনা এবং বর্তমানেও নেই।।তাই পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে চর ত্যাগ করছেন এসব সুবিধা বঞ্চিত সাধারণ মানুষ।আজিজ সরদারের মতো সবারই ৯ একর করে চাষাবাদের বন্দোবস্তকৃত জমি ছিলো মোঃ ইউনুস মিয়ার(৬৫)।তার মৃত্যুর পরে তার অসহায় এতিম ছেলেরা তার বাবার বন্দোবস্তকৃত জমি থেকে আজ বঞ্চিত।সরেজমিনে চরের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা গেছে সাধারণ কৃষকদের বন্দোবস্তকৃত চাষাবাদের জমি দখল করে তেঁতুলিয়া নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে আবাসন প্রকল্পের নামে ১০/১৫ ফিট উঁচু করে ভরাট করে দিয়েছেন।ইউনুস মিয়ার একটা জমির মধ্যে পুকুর কেটে মাছ চাষ করার কথাও স্বীকার করেছেন আক্তার মাতাব্বর(২৩)।কোন অধিকারে এসব করেছেন এ কথার জবাবে সে বলেন আমাকে এসব দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়েছেন ঠিকাদার আসাদ মেলকার, সালাউদ্দিন কন্ট্রাক্টার,বাচ্চু মাতাব্বর, মোস্তফা,শাহে আলম এবং শাহিন মাতাব্বর।আক্তার মাতাব্বর আরও বলেন আমরা জমির মালিক কিছু ব্যক্তিকে তাদের ক্ষতি পূরণ দিয়ে দিয়েছি।কিন্তু প্রকৃত জমির মালিকরা বলছেন আমরা ক্ষতি পূরণ তো দূরের কথা আমাদের ৪৫ বছরের বন্দোবস্তকৃত জমির ধারে কাছেও যেতে পারছিনা ভূমি দস্যুদের কারনে।সাধারণ মানুষদের অভিযোগ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার অভাবে এখানে কোন মানুষ থাকতে পারছেনা সেখানে নতুন করে আমাদের চাষের জমি দখল করে আবাসন করার কি দরকার।এই আবাসন প্রকল্পের কাজ করতে যেয়ে এসব সাধারণ অসহায় মানুষের ফসলি জমির পাশাপাশি ফলজ অনেক প্রজাতির শত শত গাছ কেটে নিয়েছেন ভূমি দস্যুরা।এদের মধ্যে অনেকে এখনো কোন প্রকার রেমিডি কিংবা ক্ষতিপূরণ পায়নি।এদের কাছে ডিসিয়ার কাটার রশিদ এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট আছে,আছে ভিন্ন ভিন্ন দাগ নম্বর ও জমির পরিমাণ ১ বাট(১ বাট=প্রায় ঊনিশ গন্ডা)।ক্ষতিপূরণ না পাবার মধ্যে আছেন - তোফায়েল আহমেদ,সীট -১০,দাগ নম্বর(৩০১৫),মাহমুদা খাতুন(৩০১৫), মোঃ সিদ্দিক(৩০১৬), শাহে আলম(৩০১৬),মজিবল হক মুন্সী (৩০৭৮), ফজল হক(৩০৭৮), জালাল আহমেদ(৩০৮২), আবুল কালাম(৩০৮৩),আনিচল হক(২৯৭০),মোঃ সাদেক(১৯৭৮), মোঃ কালু(১৯৭৮/১),নুরুল ইসলাম(১৯৭৮/১),মোঃ ফারুক(১৯৭৮/১),আব্দুল গণি (৩০১৭),আব্দুল গফুর( সীট -৭,দাগ-১৯৯০)।চর নিয়ে বিভিন্ন মহলে দোড়ঝাপ করে লাখ লাখ টাকা খরচ করেও কোন লাভের মুখ দেখেননি ভূক্তভুগীরা।জানা গেছে
উক্ত চরের ৩০০ একর জমি দশমিনা উপজেলার আর ৪০০ একর জমি লালমোহনের।এর সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই চরে খুনোখুনির মতো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।এই চরের সীমানা বিরোধ মামলা নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর ৭ নং পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচন বন্ধ।আর এ কারনেই বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউছুফ ইউনিয়নের কোন প্রকার উন্নয়ন তথা উক্ত চরের কোন খোজ খবর নেয়া থেকে বিরত রয়েছেন।আর নির্বাচন বন্ধের কারনে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে সাধারণ মানুষদের উপকার করতে পারছেননা।এই চরের মানুষদের যুগে যুগে শোষন আর বঞ্চনা দেখে যে কেউই বলবে পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের হাতিয়ার সেই ছোট্ট হোসেন মিয়ার
দ্বীপের ইতিহাসকেই হার মানায়।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৪৮:৩৮   ৫০৬ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি ॥
এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
জাতীয় পর্যায়ের লোকনৃত্য প্রতিযোগীতায় ভোলার মেয়ে স্বস্তিকার ২য় স্থান অর্জন
ভোলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
চরফ্যাসনে হিটস্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু
ভোলায় তীব্র প্রবাহে অস্থির জনজীবন
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ॥
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি

আর্কাইভ