প্রতীক দেওয়া, না দেওয়া দলের এখতিয়ার ‘নৌকা ছাড়াই’ স্থানীয় সরকার নির্বাচন,

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রতীক দেওয়া, না দেওয়া দলের এখতিয়ার ‘নৌকা ছাড়াই’ স্থানীয় সরকার নির্বাচন,
রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪



ভোলাবাণী ডেক্স।।বিরোধী দলগুলোর চরম বিরোধিতার মুখেও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে দলগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত আইনেরও সংশোধন করা হয়। সে থেকে প্রতীক নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন করে আসছে আওয়ামী লীগ। তবে নানান কারণে এখন ওই অবস্থান থেকে সরে আসছে দলটি। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সবশেষ সভায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

‘নৌকা ছাড়াই’ স্থানীয় সরকার নির্বাচন,

আইন সংশোধন করে যেখানে স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক আনা হলো- সেই প্রতীক সরছে কেন, কীভাবে সরবে? এমন প্রশ্ন ছিল আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে। তারা বলছেন, সময়ের প্রয়োজনে প্রতীক দেওয়া হয়। এখন আবার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো আইনের সংশোধন হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, প্রতীক না দিলে আইনের ব্যত্যয় হবে না। প্রতীক দেওয়া, না দেওয়া দলের এখতিয়ার।

২০১৫ সালে স্থানীয় সরকার আইন সংশোধন করে দলগতভাবে প্রতীক দিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয়। সে সময় এর বিরোধিতা করে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল। এমনকি আওয়ামী লীগের তৃণমূলও এর বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে গত ৮ বছর দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয় আওয়ামী লীগ। ফলে দলীয় কোন্দল ও দলাদলি পৌঁছে গেছে গ্রাম পর্যায়ে। এমনকি কোন্দল ঢুকেছে পরিবারেও। খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যে বেড়েছে দলগত বিভক্তি ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত।
চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অধিকতর অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর করা এবং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত। এতে দেশের আইনের সঙ্গে কোনো সংঘাত হবে না।

তবে সম্প্রতি এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেক কারণ। গত কয়েকটি নির্বাচনে বিএনপিসহ আরও কিছু দলের বর্জনের ফলে ভোটার উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কম ছিল। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দেশে-বিদেশে। এ অবস্থায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেয় আওয়ামী লীগ। ফলে দলীয় প্রতীক না পেয়েও আওয়ামী লীগের অনেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। বেশ কয়েকটি আসনে নির্বাচন তুলনামূলক জমজমাট হয়েছে। যে কারণে সামনের দিনগুলোতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনও জমজমাট করতে এবং দলীয় কোন্দল কমাতে প্রতীক তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

এ বিষয়ে  আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের নিজস্ব দলীয় সিদ্ধান্ত। কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি বা পরিবর্তনের উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি। আওয়ামী লীগ এবার দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় আসন্ন উপজেলা নির্বাচন অধিকতর অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর করা এবং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত। এতে দেশের আইনের সঙ্গে কোনো সংঘাত হবে না।’

একটি বিশেষ প্রতীক যারা পেয়েছেন, তারাই পেশিশক্তির বলে বিজয়ী হয়েছেন। অন্য কোনো দল বা প্রতীকের প্রার্থী প্রচার-প্রচারণাও ঠিকমতো করতে পারেননি। সবকিছুই তো দলীয় প্রভাবে ধ্বংস করা হলো। জনগণ তো বিকল্প খোঁজার কোনো সুযোগই পাচ্ছে না।

আইন সংশোধন ছাড়া দলীয় প্রতীক ব্যবহার না করার সুযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ  বলেন, ‘সুযোগ আছে। কোনো দল যদি মনে করে প্রতীক দেবে না, তারা সেটা পারবে। অনেক জায়গায় এমনটা আগেও হয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনে সারাদেশে প্রতীক দিলেও প্রধানমন্ত্রী নিজের এলাকায় দেননি। প্রতীক দেওয়া, না দেওয়ার এখতিয়ার দলের।’

প্রতীক দেওয়া, না দেওয়া দলের এখতিয়ার

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক দলগুলোর সিদ্ধান্তের বিষয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সত্যিকার অর্থে সবাই অংশগ্রহণ করে। প্রতীক না থাকলে আরও বেশি অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল উল্লেখ করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন  বলেন, ‘এ সরকার যখন প্রতীক দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিলো, তখন আমার মতো অনেকেই এর বিরোধিতা করলেন। কারণ, আমরা জানতাম এর ফলাফল কী হতে পারে। তাই হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন কাঠামোই তো ভেঙে ফেলা হলো। একটি বিশেষ প্রতীক যারা পেয়েছেন, তারাই পেশিশক্তির বলে বিজয়ী হয়েছেন। অন্য কোনো দল বা প্রতীকের প্রার্থী প্রচার-প্রচারণাও ঠিকমতো করতে পারেননি। সবকিছুই তো দলীয় প্রভাবে ধ্বংস করা হলো। জনগণ তো বিকল্প খোঁজার কোনো সুযোগই পাচ্ছে না।’

আইনটি যেভাবে করা আছে, তাতে নির্বাচন দলীয় প্রতীকেও হতে পারে, দলীয় প্রতীক ছাড়াও হতে পারে। কোনো দল যদি কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে প্রতীক দেয়, সেখানে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হবে।

তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রতীক না থাকা ভালো সিদ্ধান্ত। আরও আগে এ আইন বাতিল করা দরকার ছিল।’

আইন সংশোধন ছাড়া দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সুযোগ আছে কি না? এমন প্রশ্নে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইনটি যেভাবে করা আছে, তাতে নির্বাচন দলীয় প্রতীকেও হতে পারে, দলীয় প্রতীক ছাড়াও হতে পারে। কোনো দল যদি কাউকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে প্রতীক দেয়, সেখানে নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হবে। এছাড়া অপশন আছে- সেখানে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে পারে। আমি আইনটি দেখেছি, আইনটি ঠিক আছে।’
আইন সংশোধনের প্রয়োজন হবে না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি মনে করে সেখানে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেবে, তাহলে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আবার দল যদি মনে করে, না আমরা এভাবে দলীয় মনোনয়ন কাউকে দেবো না, আবার কোথাও কোথাও দেবো, কোথাও কোথাও দেবো না- দল থেকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ারও সুযোগ আছে।’
সুত্রঃঅনলাইন থেকে সংগ্রহিত

বাংলাদেশ সময়: ২১:০৯:৩৫   ৭৭ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
জাতীয় পর্যায়ের লোকনৃত্য প্রতিযোগীতায় ভোলার মেয়ে স্বস্তিকার ২য় স্থান অর্জন
ভোলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
চরফ্যাসনে হিটস্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু
ভোলায় তীব্র প্রবাহে অস্থির জনজীবন
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ॥
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥

আর্কাইভ