বিপদে মুমিনের করণীয় ।

প্রথম পাতা » ইসলাম ও ধর্ম » বিপদে মুমিনের করণীয় ।
মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০



ভোলা বাণী।।ইসলামিক ডেক্সঃমহান আল্লাহ পৃথিবীকে তাঁর বান্দাদের জন্য পরীক্ষাগার বানিয়েছেন। এখানে তিনি তাঁর বান্দাদের বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেন। কখনো শারীরিক সুস্থতা-অসুস্থতা দিয়ে, কখনো সন্তানসন্ততির মাধ্যমে, আবার কখনো সম্পদ দান করে বা ছিনিয়ে নিয়ে। তবে এসব পরীক্ষার মেয়াদ নিতান্তই সাময়িক।

বিপদে মুমিনের করণীয়

মহান আল্লাহ নিজেই পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পথ বাতলে রেখেছেন। নিম্নে তার কিছু তুলে ধরা হলো—আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস : বিপদে বিচলিত না হয়ে মহান আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখতে হবে। তিনি অবশ্যই আমাদের জন্য কল্যাণকর সিদ্ধান্তই নিয়ে থাকেন। তিনি অবশ্যই আমাদের বিপদ থেকে মুক্ত করবেন এবং সাময়িক বিপদের বিনিময়ে আরো উত্তম কোনো নিয়ামত দিয়ে পুরস্কৃত করবেন। যারা এভাবে সুখে-দুঃখে মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে, পবিত্র কোরআনে তিনি তাদের প্রশংসা করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তাঁরই সান্নিধ্যে ফিরে যাব। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের রবের পক্ষ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ এবং রহমত বর্ষিত হয়, আর তারাই সৎপথে পরিচালিত।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৫৬-১৫৭)

ধৈর্য ধারণ : বিপদ থেকে উত্তরণের সবচেয়ে শক্তিশালী কৌশল হলো ধৈর্য। ধৈর্য নবীদের গুণ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব আপনি ধৈর্য ধারণ করুন, যেমন ধৈর্য ধারণ করেছেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসুলগণ।’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ৩৫)। বিপদে ধৈর্য না হারিয়ে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে ঠাণ্ডা মাথায় তা থেকে উত্তরণের পথ বের করতে হবে। এতে দুনিয়ার বিপদ থেকে যেমন সহজে মুক্ত হওয়া যায়, আখেরাতেও পুরস্কার পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সফলকাম বলেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তাদেরকে তাদের ধৈর্যের কারণে এমন প্রতিদান দিয়েছি যে তারাই সফলকাম।’ (সুরা : মুমিনুন, আয়াত : ১১১)

তাওবা-ইস্তিগফার : কখনো কখনো মানুষের কৃতকর্মের কারণেই তাদের ওপর বিভিন্ন বিপদ আসে। তাই বিপদের সময় মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি তাওবা করতে হবে। অনেক সময় তাওবা-ইস্তিগফারের কারণে মহান আল্লাহ বিপদ তুলে নেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ এমন নন যে আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন এবং আল্লাহ এমনও নন যে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে অথচ তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন।’ (সুরা : আনফাল, আয়াত : ৩৩)। অর্থাৎ কোনো জাতির মধ্যে তাদের নবী উপস্থিত থাকলে যেমন মহান আল্লাহ আজাব দেন না, তেমনি কোনো জাতি যখন তাওবায় লিপ্ত হয়ে যায় তখন মহান আল্লাহ তাদের শাস্তি দেন না।

আল্লাহভীতি : মিথ্যা কিংবা ছলনার আশ্রয় নিয়ে কখনো বিপদ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না। বরং তা সাময়িকভাবে বিপদ দূর করলেও স্থায়ী বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যারা আল্লাহকে ভয় করে, তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলে, মহান আল্লাহ নিজেই তাদের রক্ষা করার ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্য নিষ্কৃতির পথ তৈরি করে দেন।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ০২)

দোয়া : যেকোনো বিপদে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। তিনি তাঁর বান্দার ডাকে সাড়া দেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমার বান্দাগণ যখন আমার সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করে, (তখন বলে দিন যে) নিশ্চয়ই আমি অতি কাছে। আহ্বানকারী যখন আমাকে আহ্বান করে আমি তার আহ্বানে সাড়া দিই। কাজেই তারাও আমার ডাকে সাড়া দিক এবং আমার প্রতি ঈমান আনুক, যাতে তারা সঠিক পথে চলতে পারে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

লেখক : শিক্ষার্থী, জামিয়া উম্মুল কুরা, মক্কা

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫১:২৭   ১৭০ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ইসলাম ও ধর্ম’র আরও খবর


নারীরা যেভাবে ইতেকাফ করবেন
পবিত্র মাহে রমজানের ৮ সুন্নত
আল্লাহর যেসব হক আদায় করা মুমিনের কর্তব্য
তুরাগতীরে দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত
আতিথেয়তায় আল্লাহর অনুগ্রহ মিলে যেভাবে
লিবিয়ায় মুসলিম বিজয়ের ইতিহাস
আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
কাদের জন্য ওমরাহ , এর ফজিলত ও কবুল হওয়ার শর্ত
ধর্মীয় সম্প্রীতির নতুন ভুবন: আমিরাতে একই কমপ্লেক্সে মসজিদ-গির্জা-সিনাগগ
পবিত্র হজ আজ লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর হবে আরাফাতের ময়দান

আর্কাইভ