রবিবার, ২৬ মে ২০১৯

প্রচণ্ড তাপদাহ আর আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » প্রচণ্ড তাপদাহ আর আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি
রবিবার, ২৬ মে ২০১৯



---আদিল হোসেন তপুঃ (ভোলা)।।

একেকটি শয্যায় শুয়ে আছে অসুস্থ দুটি কিংবা তিনটি শিশু। কারো জ্বর কারো বা নিউমোনিয়া, কারো বা অন্য কোনো সমস্যা। সবাই রোগী। দেয়ালের উপরে সিলিং ফ্যান ঘুরছে। তারপরেও প্রচণ্ড গরম। শয্যার পাশেই শিশুদের মা বসে আছেন। অনাগত সন্তানের সুস্থতায় এভাবেই দিনের পর দিন পার করছেন তারা।

এ চিত্র ভোলা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের। হঠাৎ করেই ভোলা সদর হাসপাতালে শিশু রোগীদের উপচে পড়া ভিড় পড়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহ আর আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে অসুস্থ রোগীদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে।

একদিকে ভ্যাপসা গরম অন্যদিকে দুর্গন্ধময় পরিবেশে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন রোগীরা। ধারন ক্ষমতার অধিক রোগী থাকায় নার্সরাও শিশুদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

শনিবার দুপুরে হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে শিশু ওয়ার্ডে ২০ টি বেডের বিপরীতে ৭২ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীদের চাপ বেশি থাকায় অতিরিক্ত ১৪টি শয্যা আনা হলেও একেকটি শয্যায় ২/৩ জন করে রোগী। গত সপ্তাহে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।



শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ খান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শিশু রোগীদের অনেক চাপ। শিশু ওয়ার্ডে রোগীদেন চাপ থাকায় আমরা চিকিৎসা দিতে গিয়ে রিতিমত হিমশিম খাচ্ছি। তবুও আমরা চেষ্টা করছি।

শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল কাদের বলেন, শিশু ওয়ার্ডে যেমনি ভিড় ঠিক তেমনি অন্যান্য ওয়ার্ডে। ডাক্তার সংকট থাকায় রোগীদের চিকিৎসা দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন জান্নাত বেগম বলেন, যেভাবে গরম পড়ছে এতে রোগীরা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

আরেক অভিভাবক লাভনি বলেন, হাসপাতালে অনেক সমস্যা রয়েছে, একদিকে বেড সংকট অন্যদিকে ডাক্তারও। তাছাড়াও হাসপাতালে দুগন্ধ ছড়াচ্ছে।

রোগীর মা শিল্পি বলেন, গরমের কারনে শিশুর ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে ভোলা সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও বর্তমানে ৩ শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছে রোগীরা। পুরুষ ও নারী মেডিসিন এবং গাইনি ওয়ার্ডেও রোগীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সেখানে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে অনেক রোগীকে।

রোগীদের স্বজন উজ্জল হাওলাদার ও নাজমুল সিকদার বলেন, ভোলার মানুষ এ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখানে এসে চিকিৎসা সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এখানে ২৫০ শয্যার আরো হাসপাতালটি নির্মাণ হলেও সেটি চালু হয়নি, আমরা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নিকট দাবি জানাচ্ছি যেন দ্রুত হাসপাতালটি চালু করে। এতে মানুষকে এতো ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

ভোলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তৈয়বুর রহমান বলেন, জনবল সংকটে বিষয়টি বার বার কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত জনবল বাড়েনি। এখানে ২২ জন ডাক্তারের স্থানে রয়েছে মাত্র ১১ জন। এতে কিছুটা সমস্যা তো হচ্ছেই। তবে আমনা সাধ্যমত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৭:৪২   ১৯৪ বার পঠিত  |