আত্নার সড়ক

প্রথম পাতা » ইসলাম ও ধর্ম » আত্নার সড়ক
শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০১৯



---ভোলাবাণীঃ

মানুষ সৃষ্টির রহস্য নিয়ে ভাবলে মনুষ্যত্ব বিকাশের অবিচ্ছেদ্য বিষয় জেগে ওঠে। সৃষ্টির রহস্যের মাঝে স্রষ্ঠা অন্তরনিহিত আছে। মনুষত্বকে না জাগাতে পারলে মানুষ হওয়া যায় না। আমি যতটুকু জানি মানুষের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে মান বা যার লজ্জা, সম্মান আছে এবং হুশ অর্থ যার ঙ্গান আছে। হিতাহিত জ্ঞান ছাড়া মনুষ্যত্ব বা বিবেক জাগ্রত হতে পারে না। বিবেককে জাগ্রত করতে গেলে স্রষ্ঠার প্রেমে বিলীন হয়ে যেতে হবে। স্রষ্ঠার প্রেমে বিলীন হবার জন্য কিছু দিক - নিদের্শনা বা পথ অবলম্বন করতে হবে। মনের সাথে আত্নার সংযোগ স্হাপন করতে হবে। আত্না অবিনশ্বর আত্না পবিত্র। আত্নার তৃষ্নঞায় বিলীন হতে হলে কতগুলো গুণাবলি অর্জন করতে হবে।

আত্না হচ্ছে সমগ্র সমুদ্রের মাঝে একফোঁটা জলবিন্দু।

একফোঁটা জলবিন্দু আছে বলেই সমুদ্রের সান্নিধ্যে গিয়ে মানুষ এবং প্রকৃতি প্রেমিকেরা এত প্রিশান্তি লাভ করে। মনের মধ্যে খান্নাস, ষড়রিপু বাস করে। এই ষড়রিপুকে দমণ করতে হবে। আত্নার সহিত গভীর প্রেমের আলিঙ্গন সম্পর্ক স্হাপন করতে হবে। আল্লাহর জিকির দ্বারা মন ও আত্নাতে প্রশান্তি লাভ হয়।মনকে ধীর ও প্রশান্ত করতে পারলে মানুষেমানুষের সার্বিক গুণাবলি অর্জন করা সম্ভব। প্রশান্ত মন থাকলেই প্রজ্ঞা বা জ্ঞান আপনা আপনি আসা শুরু করবে। তখন একাগ্রতা বাড়বে এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হবে।

মানুষের গুণাবলি আছে এমন মানুষের সংস্পর্শ ছাড়া মানুষের গুণাবলী অর্জন করা সম্ভব নয়।মানুষের গুণাবলি অর্জন হলেই মন প্রশান্ত হয়,আত্না কথা বলে। সাফল্যের সরলপথে স্রষ্ঠার প্রিয়জনদের পথে পরিচালিত হতে পারলেই মানুষ সফল হয়। স্রষ্ঠার প্রিয়জনরা বিভ্রান্ত ও অভিশপ্তদের অন্ধকার গহ্বর থেকে রক্ষা পেতে সক্ষম হয়। স্রষ্ঠা সকল প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। সকলের প্রশংসিত, দয়াময়, মেহেরবান, দাতা হতে পারলেই স্রষ্টার প্রেমিক হওয়া সম্ভব। স্রষ্ঠা মানুষকে প্রত্যেকের কর্ম অনুযায়ী ফলাফল ভোগ করার সুযোগ দেন। প্রত্যেক জাতিকে কর্মকে সম্মান করা উচিৎ। কর্ম হচ্ছে এবাদত।

কাজকে ভালোবাসলে সবাই কর্মঠ মানুষকে ভালোবাসে। কর্ম ও পরিশ্রম দ্বারাই আলোকিত মানুষ হওয়া সম্ভব।

মন থেকে লোভ, হিংসা, শত্রুতা, ক্রোধ, রাগ, দমন করতে পারলেই মানুষ হতে পারবে। মানুষ হতে পারলেই মনের দরজা খুলে যাবে জানালা খুলে যাবে আত্নার সহিত মনের গভীর প্রেমের আলিঙ্গন ঘটবে। মন আত্না এক হয়ে পরমাত্মা অর্থ্যাৎ স্রষ্ঠার সান্নিধ্য পাওয়া যাবে। এ পথ এত সহজ নয় আবার খুব কঠিন ও নয়। মেডিটেশন করে মনকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সকল সম্ভাবনা আমাদের মধ্যে নিহিত আছে। নিয়মিত মনের মধ্যে আরোহন করে নিজেকে চিনতে হবে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত অর্জন করতে হবে। তাহলে ভিতর থেকে ধ্বনি শুনতে পারবে। হ্রদয়ের স্পন্দন শুনতে পারবে। হ্রদয়ের কম্পন শুনতে হলে পাঁচ ওয়াক্ত নামায, তাহাজ্জুদ নামায, মেডিটেশন এবং স্রষ্টার কল্যানে আমাদের কাজ করতে হবে। তাহলেই হৃদয়ের কম্পন শুনতে পারবে। প্রকৃত মানুষ হতে হলে হৃদয়ের দহন যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। দহণ যন্ত্রণা সহ্য করতে পারলেই আলোকিত মানুষ হতে পারবে। অন্যন্য মানুষ হতে পারলেই প্রেমের গুপ্ত পথের দেখা পাওয়া যাবে। সেখানে শুধু জ্যোতি বা নূর অথ্যাৎ আলো আর আলোই শুধু দেখবে। সেটা শুধু অনুভূতিতে দেখতে পাবে বর্ণনার ভাষা খুঁজে পাবে না।বিশ্বাসী নর নারীরা সবসময় সফলতার স্বর্ণ শিখরে আরোহন করে।

বিশ্বাসীরা সবসময় নামায কায়েম করে, যাকাত আদায় করে। পরকালীন মুক্তির জন্য নিজের রিযিক থেকে অন্যের জন্য ব্যয় করে, সৎকর্ম করে তার সবটাই আল্লাহর কাছে জমা থাকবে। বিশ্বাসী নর নারীরা জান্নাত পাবে। যার তলদেশে থাকবে প্রবাহমান ঝর্ণাধারা। কুরআন যারা পাঠ করে এবং মনোযোগ ও একাগ্রতার সহিত ধ্যানেনিমগ্ন হয়ে যারা শুনে তারা প্রঙ্গা লাভ করতে সফল হয়। মন প্রশান্ত হয়ে আত্নার সাথে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয়।

এই কুরআনের আয়াতকে যারা হ্রদয়ে ধারণ করতে পারবে তারাই স্রষ্টার প্রেমে বিলীন হতে পাবে। স্রষ্টার সান্নিধ্য পেলেই জান্নাত পাওয়া সহজ।দয়াময় আল্লাহ আমি জান্নাত চাই না আমি তোমার দীদার পেতে চাই। কাবাঘরকে মানব জাতির সর্বকালের মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ আশ্রয়স্হল করেছেন স্রষ্টা। কাবা ঘরকে তাওয়াফকারী আত্মনিমগ্ন ধ্যানী ও রুকু সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখতে হবে। কাবাঘরকে পবিত্র রাখতে পারলেই হৃদয়ের সাতটি স্তর অতিক্রম করতে পারব।এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কাবা কোথাও নেই। এই হ্রদয় কাবাকে ধীর ও প্রশান্ত করতে পারলেই আত্নার আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেখতে পারবে। আত্নার আলোয় আলোকিত হতে পারলেই আলোকিত মানুষ হতে পারবে। আমি আলোকিত মানুষ হতে পারবই এই বিশ্বাস যখনই হৃদয়ের মধ্যে ধারন করতে পারবে তখনই আলোকিত মানুষের গুণাবলি অর্জনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে। দেহের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সুখী হবার অভিনয় করা যায়।

সুখ আলাদা জিনিস। যেমন গাছের প্রাণ শাখা প্রশাখায় থাকে না গাছের প্রাণ থাকে গাছের শিখরে। তেমনি পরমাত্মার দর্শন পাওয়া গেলেই মনে প্রশান্তি আসে।

আত্মা ই হচ্ছে প্রাণ। আত্মাই হচ্ছে প্রাণের শিখর।যত দম চর্চা করবে ততই শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে মনের সঙ্গে আত্নার সংযোগ বৃদ্ধি পাবে।আত্নার সংযোগের পথ ধরেই প্রেমের পথে অগ্রসর হতে হবে। প্রেমিকা! তুমি যে পথে হাটঁবে ; আলো ঠিক সেইখানে জ্বলে উঠবে আপন শক্তিতে, তখন স্রষ্টার সাথে প্রেমের আলিঙ্গন ঘটবে।

স্রষ্টা নিজের মধ্যে বিলীন করে নিবেন। তখন স্রষ্টা মানুষকে মনোনীত করবেন প্রতিনিধিত্ব করার জন্য। আলোকিত মানুষের মাধ্যমেই তার বাণী মানুষের কাছে পৌঁছাবেন। কখনও গানের, কবিতার, গল্পের, অথবা কখনো স্বপ্নের মাধ্যমে মানুষকে জাগ্রত করবেন।

বিশ্বাসী নর নারীরা সফল হবে। এজন্য আন্তরিক বিশ্বাস করতে হবে স্রষ্টাকে তাহলে সফলকাম হতে পারবেই।

আল্লাহ কুরআনে লিখেছেন নিশ্চয়ই মুসলমান, ইহুদি, খ্রিষ্টান ও সাবেয়ীদের মধ্যে যারাই আল্লাহ ও মহাবিচার দিবসে বিশ্বাস করে এবং সৎকর্ম করে, তাদের সবার জন্যই প্রতিপালকের কাছে পুরস্কার রয়েছে। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবে না। অথচ আমাদের মোল্লা মুন্সিরা মানুষকে ধর্মের মধ্যে ভাগ করে ফেলেছে। তারা বলে ওরা মুসলমান না। অথচ মুসলমান অর্থ হচ্ছে যার ঈমান আছে।।
লেখকঃ
নায়লা পাইলট
শিক্ষকা

বাংলাদেশ সময়: ১২:০২:০০   ৬০১ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ইসলাম ও ধর্ম’র আরও খবর


নারীরা যেভাবে ইতেকাফ করবেন
পবিত্র মাহে রমজানের ৮ সুন্নত
আল্লাহর যেসব হক আদায় করা মুমিনের কর্তব্য
তুরাগতীরে দেশের বৃহত্তম জুমার জামাত অনুষ্ঠিত
আতিথেয়তায় আল্লাহর অনুগ্রহ মিলে যেভাবে
লিবিয়ায় মুসলিম বিজয়ের ইতিহাস
আজ ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মোঃ হাবিবউল্লাহ’র ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী
কাদের জন্য ওমরাহ , এর ফজিলত ও কবুল হওয়ার শর্ত
ধর্মীয় সম্প্রীতির নতুন ভুবন: আমিরাতে একই কমপ্লেক্সে মসজিদ-গির্জা-সিনাগগ
পবিত্র হজ আজ লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর হবে আরাফাতের ময়দান

আর্কাইভ