সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭

আর কতো নিঃস্ব হলে বিধবা ভাতা পাবে অসহায় মানিকজান।

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আর কতো নিঃস্ব হলে বিধবা ভাতা পাবে অসহায় মানিকজান।
সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০১৭



মোঃ আমজাদ হোসেন ।ভোলাবাণী।। লালমোহন প্রতিনিধি:

---“আসমানীনে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ী রসুলপুরে যাও।”পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবিতা বা সিনেমায় আমরা কতোইনা কাল্পনিক আসমানীকে দেখেছি কিন্তু আমাদের প্রতিদিনকার সমাজ চিত্রে এ রকম অনেক আসমানী আছে যারা আমাদের সাথে উঠাবসা করে ঠিক সেরকমই এক আসমানী আছে যে ভোলার লালমোহন উপজেলার ৭নং পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের নিঃস্ব মানিক জান (৪৫)।তার ভাগ্যে স্বামী মৃত্যুর দীর্ঘ সাত বছরেও জোটেনি সরকারের কোনো তহবিল বা ইউনিয়ন পরিষদের বিধবা ভাতা।কোন মতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ঘুরে নিজের ক্ষুধার জ্বালা মেটাতাম এমনটাই কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন অসহায় মানিক জান।তিনি আরও বলেন স্বামীকে হারিয়েছি সাত বছর আগে, দুইডা মেয়ে ছিলো, ঢাকায় থাকে বড়োডার বিয়া হইছে আর ছোটডার হয়নায়। কাজ করে মানুষের বাসায় মাঝে মাঝে বাড়ি আসে । স্বামী সন্তান হারিয়ে নিঃস্ব মানিক জান স্মৃতি হিসেবে তার নিজের স্বামীর রেখে যাওয়া ভিটিতেই পড়ে আছেন কোন রকম না খেয়েই।ছোট মেয়েটা ঢাকায় একটা কারখানায় কাজ করতো কিন্তু কাজ করার সময় চোখে আঁঘাত লেগে বিনা চিকিৎসায় বিছানায় কাঁতরাচ্ছে।টাকার অভাবে ডাক্তার কিংবা ঔষধ কিনতে পারছেননা।তার সাথে দেখা হওয়ায় কেঁদে কেঁদে তার কষ্টের কথা গুলো বলতে লাগলেন।স্বামী জয়নাল আবেদিনের আগের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর মানিকজানকে বিয়ে করলেন। স্বামীর আয় রোজগারে ভালোই কাটছিলো তাদের সংসার । আগের ঘরের সন্তানেরা মানিকজানকে ছেড় চলে গেছে একটা টাকা পয়সাও দেয়না। সাত বছর আগে স্বামী মারা যায় মানিকজানের। এরপর থেকেই রোগ শোক আর খাদ্যের অভাব দেখা দেয়।কিভাবে খাবো ঔষধ শুধু বসত ভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই ।মানুষের জমিতে ফসল তুলতাম তাও এবার নেই ঝর বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে,আমি পাবো কোথায় শাড়ির আচলে চোখের পানি মুছতে মুছতে বললেন মানিকজান।ওয়ার্ডের মেম্বার কে জানিয়েছেন ভাতার কথা উত্তরে বললেন যাদের আছে তারাই ভাতা বা ভিজিএফ চাল পায় আমি পাইনি। একবার গিয়েছিলাম চেয়ারম্যানের কাছে সেদিন সবাইকে চাল দিয়েছিলো, আমি বাড়ির নাম বলেছিলাম তারা বললো জনু মালের বাড়ি চিনিনা। সেদিন আমাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিল পরিষদের লোকজন।৪ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার শিলা এবং তার স্বামী কাশেমের কাছেও গেলাম তাদের নিকট কথা বলার কোন সুযোগ পেলামনা।আজ আমি নিঃস্ব আল্লাহ ছাড়া আর কেউই নেই আমার ।প্রতিদিন অন্যের কাছ থেকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে যা পাই তা দিয়ে অর্ধ হারে অনাহারে চরে মানিকজানের সংসার।সমাজের কেউ অসহায় মানিকজানকে সাহায্য করেনা তাই তিনি দেশ বা দেশের বাইরের মহানুভব বিত্তবানদের কাছে সহোযোগীতা চেয়েছেন।অসহায় এ মানিকজানকে সাহায্য করতে চাইলে টাকা পাঠাতে পারেন বিকাশ নম্বরে(পার্সনালঃ০১৮১২ ৯৭৪৯৮২)।
সরেজমিনে দেখা যায় বসত ভিটা ছাড়া আর কোন জমি নেই তার সাথে ভাঙা একটি দুই চালা ঘর। মানিকজানের মতো এভাবেই অসহায় জীবন যাপন করে সম্পদ লোভী মানুষের ভিড়ে হাজারো বৃদ্ধা। তাদের নেই জন প্রতিনিধি মেম্বার কিংবা চেয়ারম্যান,আছে ঝড় বৃষ্টিতে সংগ্রাম করে করে বেঁচে থাকার এক টুকরো চাহনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৯:৩০   ৬৬৫ বার পঠিত  |