মাহে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » মাহে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়
রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪



 ভোলাবাণী স্বাস্থ্য ডেক্স।।

রমজানে ডায়াবেটিস রোগীরা অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন রোজা রাখতে পারবেন কিনা? খাবার গ্রহণের নিয়মকানুন, ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা নির্ধারণ, দৈনন্দিন হাঁটা বা ব্যায়ামের সময়কাল এসব প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে থাকে নানা ধরনের প্রশ্ন। রোজা পালনে ঝুঁকিপূর্ণ এবং রোজা রাখা অবস্থায় কী ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে সে সম্পর্কে রোগী ও তার স্বজনদের ধারণা থাকতে হবে। প্রাত্যহিক জীবনধারা, সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিয়ম মেনে চললে বেশিরভাগ ডায়াবেটিস রোগীই রোজা রাখতে পারেন। তবে রোজার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

 

মাহে রমজানে ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

রোজা পালনে ঝুঁকিপূর্ণ কারা

অতি বৃদ্ধ বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের রোগী।গত ৩ মাসের মধ্যে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা অধিক বেড়ে গিয়ে কিটো অ্যাসিডোসিস বা হাইপার অসমোলার স্টেটের ইতিহাস থাকলে।ঘন ঘন হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমা।হাইপোগ্লাইসেমিয়া বুঝতে অক্ষম ব্যক্তি।  অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-১ ডায়াবেটিস বা দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-২ ডায়াবেটিস।

 গর্ভবতী ডায়াবেটিক মা বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে।

 দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ ৪ ও ৫), ডায়ালাইসিসের রোগী। হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হলে। দিনে একাধিক বার ইনসুলিন গ্রহণ করলে। মারাত্মক ইনফেকশন, যক্ষ্মা, ক্যানসার থাকলে।

তা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ-৩), স্থিতিশীল হৃদরোগ বা স্ট্রোক, স্তন্যদাত্রী মা, অধিক কায়িক পরিশ্রমকারী ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মতান্ত্রিকভাবে রোজা না রাখলে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে (১) হাইপোগ্লাইসেমিয়া (২) হাইপারগ্লাইসেমিয়া (৩) ডায়াবেটিস কিটো অ্যাসিডোসিস এবং (৪) পানিশূন্যতা বা ডি-হাইড্রেশনে ভুগতে পারেন।

রমজানে খাদ্যাভ্যাস

রোজায় দৈনিক ক্যালরি চাহিদা একই রকম থাকবে, কেবল খাবার গ্রহণের সময়সূচিতে পরিবর্তন হয়। সাধারণত ইফতার ও সাহরিতে দুটি মূল খাবার গ্রহণ করা হয়।যথেষ্ট পরিমাণে শাকসবজি, তাজা ফলমূল খেতে হবে। চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া নিষেধ। জটিল শর্করা যেমন : লাল চালের ভাত, রুটি, ওটস, কর্নফ্লেক্স খাওয়া ভালো। ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও তেলযুক্ত উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।এক সঙ্গে অনেক খাবার না খেয়ে ভাগ করে খাওয়া উচিত। ইফতারে শরবত বা মিষ্টি জুস না খেয়ে ডাবের পানি, ফলের রস, লেবু পানি পান করতে পারেন।সাহরি না খেয়ে রোজা রাখবেন না।৭. ইফতার ও সাহরির মাঝখানে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ইনসুলিন

চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তিনবারের ওষুধ একবার বা দুবারে পরিবর্তন করে আনুন।

যারা ট্যাবলেট খান তারা সকালের ডোজটি ইফতারের শুরুতে এবং রাতের ডোজটি অর্ধেক পরিমাণে সাহরির আধা ঘণ্টা আগে খাবেন। অবশ্যই ওষুধের মাত্রা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করে নিন। সকালের ইনসুলিন ডোজটি ইফতারের আগে, রাতের ডোজ কিছুটা কমিয়ে সাহরির আধা ঘণ্টা আগে নিন। কতটা কমাবেন চিকিৎসক নির্ধারণ করে দেবেন। ইফতারির সময় নির্ধারিত ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ করে অপেক্ষা না করে ইফতার সেরে ফেলুন।

হাঁটা বা ব্যায়াম

রোজা রেখে দিনের বেলায় অধিক হাঁটা বা কায়িক পরিশ্রম পরিহার করতে হবে।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা

ইসলামি চিন্তাবিদ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, রোজা রাখা অবস্থায় রক্ত পরীক্ষায় রোজা পালনে কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। তাই সাহরির বা ইফতারির ২ ঘণ্টা পর ও বিকেলে অথবা খারাপ লাগলে দিনের যে কোনো সময় ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাবেন।

দিনের যে কোনো সময় রক্তের গ্লুকোজ ৪ মি. মোল/লি. বা তার কম অথবা ১৬.৭ মি. মোল/লি. বা তার বেশি হলে সঙ্গে সঙ্গে রোজা ভেঙে ফেলা উত্তম। সম্ভব হলে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার একটি গ্লুকোমিটার সংগ্রহে রাখুন।

ডায়াবেটিস রোগীদের সাধারণ পরামর্শ

রোজা রেখে কখনোই আগের মাত্রার ওষুধ বা ইনসুলিন নেবেন না। নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না, এতে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।

রোজা রাখা অবস্থায় ইনসুলিন নেওয়া যায়। ইফতারির ১০-১৫ মিনিট আগে ইনসুলিন গ্রহণ করুন।

সাহরিতে ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করে কোনো অবস্থাতেই না খেয়ে বা পরিমাণে কম খেয়ে রোজা রাখবেন না।

সাহরির নির্ধারিত সময়ের শেষভাগে ও মাগরিবের আজান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবার গ্রহণ করুন।

হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন থাকুন। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে বুক ধড়ফড়, হাত-পা কাঁপা, ঘাম, মাথা ঘোরানো, অসংলগ্নতা এমনকি জ্ঞান হারানোর মতো ঘটনা ঘটতে পারে। এ রকম অবস্থায় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কোনো খাবার খেয়ে রোজা ভেঙে ফেলতে হবে।

রোজা রাখা অবস্থায় ব্লাড গ্লুকোজের পরিমাণ ৪ মিলি মোল/লিটারের কম হলে অবশ্যই রোজা ভেঙে ফেলুন। পরবর্তী দিন থেকে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দিন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বাংলাদেশ সময়: ১১:১১:৪৭   ৬৩ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


তজুমদ্দিনে আগুনে পুড়ে ১৩ দোকান ছাই পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতি ॥
এসএসসির ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা
এ কে ফজলুল হককে কেন ‘শেরে বাংলা’ বলা হয়?
জাতীয় পর্যায়ের লোকনৃত্য প্রতিযোগীতায় ভোলার মেয়ে স্বস্তিকার ২য় স্থান অর্জন
ভোলায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
চরফ্যাসনে হিটস্ট্রোকে যুবকের মৃত্যু
ভোলায় তীব্র প্রবাহে অস্থির জনজীবন
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ॥
ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি

আর্কাইভ