৯৪ টি পদের মধ্যে ৬০টি শূন্যউদ্ভোধনের ১০ বছর পার হলেও মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ৯৪ টি পদের মধ্যে ৬০টি শূন্যউদ্ভোধনের ১০ বছর পার হলেও মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত
মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ ২০২৩



মোঃছালাহ উদ্দিন ।।ভোলাবাণী।।মনপুরা প্রতিনিধি।।ভোলার মনপুরায় দেড়লক্ষাধিক লোকের চিকিৎসা সেবার এক মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি জনবলের সংকটের কারনে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত। প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি, বিদ্যুৎ সমস্যা ও জনবলের অভাবসহ নানান সমস্যায় জর্জড়িত উপজেলার এক মাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৩১ শয্যার হাসপাতালটি  গত ২১শে জুন ২০১৪ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে উদ্ভোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি ও আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি। উদ্ভোধনের ১০ বছর পার হলেও এখনও  জনবল সংকট ও প্রয়োজনীয় প্যাথলিজিক্যাল যন্ত্রপাতি এবং বিদ্যুতের অভাবে চালু হয়নি। সাধারন রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মনপুরা উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি  ৯৪ টি পদের মধ্যে ৬০ টি পদ দীর্ঘদিন পর্যন্ত শূন্য। ৭ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। দৈনিক ৩ শতাধিক রোগী দেখছেন ডাক্তাররা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চিকিৎসকের ১২টি পদের মধ্যে ৫টি পদ শূন্য। এর মধ্যে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী,মেডিসিন,গাইনী,এনেসথেসিয়া,ডেন্টাল সার্জন পদ দীর্ঘ দিন শূন্য রয়েছে। সিনিয়র স্টাফ নার্স ও সহকারী নার্সের ২৫ টি পদের মধ্যে ২০ট পদ শূন্য। ৫জন কর্মরত আছেন।  সেকমো ৫টি পদের মধ্যে ৩টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনিশিয়ান ল্যাভ ৫টি পদের মধ্যে ৫টি শূন্য। এমটি ডেন্টাল ১টি পদ শূন্য। এমটি রেডিও গ্রাফার ১টি পদ শূন্য। ফার্মাসিষ্ট ৩টি পদের মধ্যে ৩টি পদ শূন্য। মিডওয়াইফ ৪টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট রেডিওলোজি এন্ড ইমাজিং ১টি পদ শূন্য। মেডিক্যাল টেকনোলোজিস্ট এস.এল ১টি পদ শূন্য। পরিসংখ্যানবিদ ১টি পদ শূন্য। ষ্টোরকিপার ১টি পদ শূন্য। স্বাস্থ্য  সহকারী  পরিদর্শক ২টি পদের মধ্যে ১টি পদ শুন্য। স্বাস্থ্য সহকারী ১০টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। জুনিয়র ম্যাকানিক ১টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর ২টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। সহকারী নার্স ১টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য। সিকিউরিটি গার্ড ২টি পদের মধ্যে ২টি পদ শূন্য। আয়া ২টি পদের মধ্যে ১টি পদ শূন্য । অফিস সহায়ক ৫টি পদের মধ্যে ৪টি পদ শূন্য।  সুইপার ৫টি পদের মধ্যে ৩টি শূন্য। ওয়ার্ড বয় ৩টি পদের মধ্যে ২টি পদ শূন্য।
জনবল সংকট ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।  প্যাথলজিক্যাল সংক্রান্ত ইন্সট্রুমেন্টগুলোও পরিচর্যার অভাবে প্রায় অকেজো।
একটি এম্বুলেন্স ও একটি নৌ এম্বুলেন্স আছে হাসপাতালে। নৌ এম্বুলেন্স থাকলেও তা বিকল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। নৌ এম্বুলেন্সের অভাবে  মুমূর্ষ রোগীদের হাসপাতাল থেকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিতে অন্য উপজেলায় বা জেলায় পাঠানো সম্ভব হচ্ছেনা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারন রোগীরা। দ্রুতগামী একটি নৌ এম্বুলেন্স দাবী করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারন মানুষ। জনবল সংকট, প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে হাসপাতালের প্রতিদিনকার কার্যক্রম। ডাক্তাররা পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া রোগী দেখছেন। ফলে প্রকৃত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হ”েছন সাধারন মানুষ। জনবল সংকট ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাব ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারনে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা

বিছিন্ন এই উপজেলায় প্রধান সমস্যা গর্ভবতি মায়ের। এই উপজেলায় গাইনী কোন ডাক্তার না থাকায় ঝুঁকিতে থাকেন গর্ভবতী মায়েরা। বর্ষা মৌসুমে মূমূর্য রোগীদের নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটে।
স্কুলের শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন আজাদ, লিপা বেগম, হাজির হাট বাজার ব্যাবসায়ী মোঃ মনির হোসন বলেন, ডাক্তার থাকলেও সঠিক রোগ নির্নয় করার কোন প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির ব্যাবস্থা না থাকায় প্রকৃত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেনা রোগীরা।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান অনিক বলেন, আমরা হাসপাতালে প্রকৃত সেবা দেওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্ঠা করে যা”িছ। তবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে আরো ভালো হতো।

মনপুরা উপজেলার একমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ কবির সোহেল বলেন, আমরা আন্তরিকতার সহিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকি। এখানে জনবল ও প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে সত্যি। আমাদের প্রধান সমস্যা বিদ্যুত। দিনের বেলায় কোন বিদ্যুতের ব্যাবস্থা না থাকায় আমরা কোন রোগীদের পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে চিকিৎসা সেবা দিতে পারছিনা। বিদ্যুতের সমস্যা সমাধান এবং ডাক্তার ,নার্স ও জনবল সংকট সমাধান করতে পারলেই আমরা ভালো চিকিৎসা দিতে পারবো। রাতে ১টার  পরে হাসপাতালে কোন বিদ্যুত থাকেনা।
তিনি আরো বলেন, ৫০ শয্যায় উন্নীত হাসপাতালটি ২০১৮ সালে প্রশাসনিক অনুমোদন পেয়েছেন। এখনও আর্থিক অনুমোদন পাননি। এই জন্য হাসপাতালটি চালু করতে পারিনি। আমি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি’র সাথে এই বিষয় কথা বলব।

মনপুরা দ্বীপের দেড়লক্ষাধিক মানুষের প্রানের দাবী সরকার চিকিৎসা সেবা মানুষের দোড় গোড়ায় পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্যাথলজিক্যাল যন্ত্রপাতি, জনবল সংকট ও বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয়রা ।

বাংলাদেশ সময়: ০:২৭:৫০   ১১৫ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥
লালমোহনে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়
লালমোহনে আবাসনের ঘর জবরদখলের অভিযোগ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ভোলার ৩ উপজেলায় ৩৮ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল
কাউকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী
প্রচণ্ড গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা
শশীভূষণে পানিতে ডুবে দুই সহোদরের মৃত্যু
বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ট ব্যবসায়ীসহ গ্রাহকবিদ্যুত বিহীন মনপুরা ॥ তীব্রতাপদাহে ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ

আর্কাইভ