ভোলাবাণী ডেক্স।।আইএমএফের ঋণ ইস্যুতে সংসদে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আইএমএফ তখনই ঋণ দেয়, যখন ওই দেশ ঋণ পরিশোধের যোগ্যতা অর্জন করে। আমরা সেই যোগ্যতা অর্জন করেছি বলেই আইএমএফ ঋণ দিচ্ছে। এখানে আমরা তেমন কোনো শর্ত দিয়ে ঋণ নেইনি।’
আজ বুধবার সংসদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে আইএমএফের ঋণের শর্তে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে এর ফলে মূল্যস্ফীতির চাপ সরকার কীভাবে সামলাবে সেই প্রশ্ন তোলেন।জবাবে বিশ্বের কোনো দেশ বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দেয় এমন প্রশ্ন তুলে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা তো বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি, গ্যাসে ভর্তুকি দিচ্ছি। আমার প্রশ্ন হলো পৃথিবীর কোন দেশ গ্যাস আর বিদ্যুতে ভর্তুকি দেয়? কেউ দেয় না।’
ব্যবসায়ী ও শিল্পকারখানার মালিকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ চাইলে যে মূল্যে কিনে আনব সেই মূল্য তাদের দিতে হবে। এখানে ভর্তুকি দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
‘আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি। বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়িয়েছি। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবহারে সকলকে সাশ্রয়ী হতে হবে। ইংল্যান্ডে ১৫০ ভাগ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে এই ইউক্রেন আর রাশিয়ার যুদ্ধের পর। আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশ আজকে বাড়ালাম, আর বাল্কে কিছু গ্যাসের দাম। এলএনজি আমরা যেটা ছয় ডলারে স্পট প্রাইসে কিনতাম, সেটা এখন ৬৮ ডলারে। কত ভর্তুকি দেবে সরকার? সরকার যে ভর্তুকিটা দেবে, সেটা তো জনগণেরই টাকা। আর দ্রব্যমূল্য আজেকে সারা বিশ্বেই বৃদ্ধি পেয়েছে।’
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নিম্ন আয়-মধ্যম আয়ের যারা তাদের জন্য টিসিবির ফেয়ার প্রাইস কার্ড দিয়ে দিয়েছি। যেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারে। তেল, চিনি, ডাল সীমিত আয়ের মানুষ ন্যয্য মূল্যে কিনতে পারে। সেই ব্যবস্থাটা করে দিয়েছি। এর থেকে যারা নিম্নআয়ের তাদের জন্য আমরা ১৫ টাকায় চাল আমরা দিচ্ছি। সেই সঙ্গে তেল, ডাল ও চিনিও দেওয়া হচ্ছে। আর একেবারে হতদরিদ্র যারা কিছুই করতে পারে না। তাদেরকে বিনাপয়সায় খাদ্য সরবরাহ করছি। স্বল্প আয়ের মানুষ যাতে কষ্টে না পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রেখে এই ব্যবস্থা করছি। কৃষিতে আমরা ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিচ্ছি।’
এর আগে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ দেশে আলোচিত। এই ঋণ পেতে কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। এই ঋণের কারণে এরই মধ্যে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ঋণের কারণে গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। এতে করে কৃষিপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। সামগ্রিকভাবে উৎপন্ন পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। বেড়ে গেছে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। এই চাপ সরকার কীভাবে মোকাবিলা করবে।’
বাংলাদেশ সময়: ২১:৩৩:৫৩ ৮৯ বার পঠিত |