হারুন অর রশীদ ॥ভোলাবাণী।। পহেলা জানুয়ারি, ২০২৩ গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজেইউএস) ২৫টি বছর সফলতার সহিত পার করে ২৬শে পা রাখল। গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯৭ সালের পহেলা জানুয়ারীতে দ্বীপ জেলা ভোলার সদর উপজেলার চরনোয়াবাদ এলাকায় আত্মপ্রকাশ করে।
নিজের জমাকৃত অর্থ ব্যায় করে শুরু করা প্রতিষ্ঠান কখনো আলোর মুখ দেখবে বলে আশা করেননি সংস্থার দায়িত্ব নেয়া জাকির হোসেন মহিন। পেশায় তিনি একজন সাংবাদিক হওয়ায় হারার আগেই না হেরে চালিয়ে যান সংগ্রাম করে। অজোপাড়াগায়ের দরিদ্র লোকজনের জন্য কিছু করার প্রবল আগ্রহ থেকেই তিনি গড়ে তোলেন এই প্রতিষ্ঠান।দীর্ঘ এই ২৫ বছরে তিনি তার নীতির উপর অটল থাকার কারনেই পেয়েছেন অজস্র সুনাম আর খ্যাতি। ভোলার নিরন্ন মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচেছন নিরলসভাবে। শুরু থেকেই তিনি জোর দেন ক্ষুদ্র উদ্যোগতা তৈরির উপর। আর তাইতো তিনি উপকরণ সহায়তার পাশাপাশি ক্ষুদ্রঋণ দিয়ে সহায়তা করে আসছেন।
ইতিমধ্যে সংস্থার কাছ থেকে উপকরণ এবং ঋণ সুবিধা নিয়ে প্রায় ৩০,০০০ ক্ষুদ্র উদ্যোগতা তৈরি হয়েছে যারা তাদের কর্মক্ষেত্রে নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেকার আরো অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া সংস্থায় বর্তমানে প্রায় ১০০০জন কর্মী বিভিন্ন পর্যায় স্থায়ীভাবে কর্মরত আছে। যার মধ্যে কৃষিবিদ, মৎস্যবিদ, ভেটেরিনারি সার্জন, ডাক্তার ও প্রকৌশলী রয়েছেন।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন এর বিশ্বাস টেকসই উন্নয়নের জন্য শুধু ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থাই যথেষ্ঠ নয়। এর সাথে সাথে যদি জনগনকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয় তবে একজন উদ্যোগতা নিবিরভাবে তার কার্যক্রম স্থায়ীভাবে পরিচালনা করতে পারে। আর সেই চিন্তা থেকেই তিনি তার প্রতিষ্ঠানে অনেক কারিগরী কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।
গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা শুরু থেকেই কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতের দিকে আলাদা নজর দিয়ে আসছে। ভোলার গরিব মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে হাতে নিয়েছেন একের পর এক সময়োযোগী প্রকল্প এবং মানুষের দোরগোড়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের বিভিন্ন উন্নত জাত। এসব জাতের সঠিক চাষাবাদ এবং পরিচর্যার জন্য সংস্থাটি এ পর্যন্ত প্রায় ৬০০০০ কৃষক ও খামারিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে এবং কৃষক যাতে স্বল্পমূল্যে খুব সহজে উন্নত জাতের বীজ, মাছের পোনা ও বিভিন্ন প্রাণির বাচ্চা পেতে পারে তার জন্য গড়ে তুলেছেন একটি আধুনিক ব্রিডিং খামার এবং দেশী মাছের হ্যাচারী।
কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জনাব জাকির হোসেন মহিন ২০১৩ সালে ”শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক” হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরুস্কার গ্রহণ করেন।
এছাড়া কৃষি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন কর্পোরেশন (আইএফডিসি) থেকে পুরুষ্কার গ্রহণ করেন। কৃষি সহায়তা ও বাস্তবায়ন ক্যাটাগরিতে দেশের সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড চ্যানেল আই অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড-২০১৯ লাভ করে সংস্থাটি। তাছাড়া ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য সংস্থাটি মাননীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর নিকট হতে পুরষ্কার লাভ করে। বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহযোগিতায় ক্ষুদ্রঋণের পাশাপাশি বর্তমানে ২৮টির অধিক আয়বর্ধনমূলক প্রকল্প চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও নোয়াখালী জেলায় ৬০টি শাখা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:২৬:২৯ ৮২ বার পঠিত |