বাংলাদেশের ব্যাংক এখন মূলধনে পিছিয়ে

প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বাংলাদেশের ব্যাংক এখন মূলধনে পিছিয়ে
শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২



ভোলাবাণী।। সম্পাদকীয়

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। বিশেষ করে মূলধনের দিক থেকে বিশ্বের ছোট-বড় প্রায় সব দেশের তুলনায় পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত। এমনকি অর্থনৈতিক সংকটে পড়া শ্রীলঙ্কার ব্যাংক খাতের সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশে প্রায় এক দশক ধরে ব্যাংক খাতে সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত কমছে। যার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত এখন বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।

সাধারণত, কোন ব্যাংক কতটা শক্তিশালী বা অর্থনৈতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় কতটা সক্ষম তা পরিমাপ করা হয় ওই ব্যাংকের মূলধনের ভিত্তিতে। এছাড়া, আমানতকারীদের অর্থের সুরক্ষা, ব্যাংকের স্থিতিশীলতা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা পরিমাপেরও মাপকাঠি ওই মূলধন।

বাংলাদেশের ব্যাংক এখন মূলধনে পিছিয়ে

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০ সাল শেষে দেশের ব্যাংক খাতের মোট সম্পদ ছিল ১৮ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৯ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা ছিল ব্যাংকগুলোর মূলধন ও শেয়ারহোল্ডার ইকুইটি।বিশ্বব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, গত এক দশকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ব্যাংক খাতে সাধারণ গ্রাহকদের জমানো আমানতের সঙ্গে সম্পদের সামঞ্জস্য রেখে মূলধন বেড়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে দ্রুত আমানত বাড়লেও সে অনুপাতে মূলধন না বেড়ে উল্টো কমেছে।

মূলত, আমানতকারীদের জমানো অর্থ থেকে গ্রাহকদের যে ঋণ বা বিনিয়োগ দেওয়া হয়, সেটিও ব্যাংকের সম্পদ। অন্যদিকে মূলধন হলো ব্যাংকের উদ্যোক্তা তথা শেয়ারহোল্ডারদের জোগান দেওয়া পরিশোধিত মূলধন, বিভিন্ন ধরনের রিজার্ভ ও রিটেইন আর্নিংস।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকের মূলধন কম থাকলে আমানতকারীদের অর্থ থাকে ঝুঁকিতে। কারণ, মূলধন একটি আস্থার প্রতীক। মূলধন কম থাকলে ব্যাংক যত বড়ই হোক, টেকসই হবে না।

তিনি আরও বলেন, সম্পদের বিপরীতে মূলধন সক্ষমতার হার কম থাকার অর্থই হলো ব্যাংকগুলো দুর্বল।

বিশ্বব্যাংকের পরিসংখ্যান

২০১১ সালে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত ছিল প্রায় ৭ শতাংশ। ২০২০ সাল শেষে এই অনুপাত (ক্যাপিটাল টু অ্যাসেট রেশিও) নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, শ্রীলঙ্কার ব্যাংক খাতে সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত ৮ দশমিক ৬ শতাংশের বেশি। ভারতে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। পাকিস্তানে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। চীনে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে এ হার ১১ শতাংশ।

এমনকি নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপের ব্যাংক খাতের মূলধন সক্ষমতা বাংলাদেশের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

এ প্রসঙ্গে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মূলধন কাঠামোয় দুর্বলতা আগে থেকেই। নতুন ব্যাংকগুলো এসেই দ্রুত ব্যবসায়িক পরিধি বড় করছে। এ কারণে ব্যাংক খাতের মূলধনের চেয়ে সম্পদ বাড়ছে।

তিনি উল্লেখ করেন, একটি স্থিতিশীল ব্যাংক ব্যবস্থার জন্য মূলধন সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যাসেল-৩ অনুযায়ী, ২০১৯ সাল শেষে দেশের ব্যাংক খাতের সিআরএআর হওয়ার কথা সাড়ে ১২ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশে এখনও এটি ১১ শতাংশের গণ্ডিতে আটকে আছে। যদিও পাকিস্তানে এ অনুপাত ১৭, শ্রীলঙ্কায় ১৬ দশমিক ৫০ ও ভারতে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ।

সিআরএআর’কে ঝুঁকিবারিত সম্পদের বিপরীতে মূলধন সংরক্ষণের অনুপাত বা ক্যাপিটাল টু রিস্ক-ওয়েটেড অ্যাসেট রেশিও (সিআরএআর) বলা হয়।

বৈশ্বিকভাবে ব্যাংকের সক্ষমতা পরিমাপের অন্যতম মানদণ্ড ধরা হয় এই অনুপাতকে। আর্থিক দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের সময় ব্যাংক কতটা শক্তিশালী ও ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারবে, এটি তার নির্দেশক।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৯:৫২   ৬১ বার পঠিত  |




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

প্রধান সংবাদ’র আরও খবর


ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন ২০২৪আপনাদের পবিত্র ভোট ৫ বছরের জন্য ভাল পাত্রে জমা রাখবেন-মোহাম্মদ ইউনুছ
দেশ ভাঙার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত কংগ্রেস: নরেন্দ্র মোদি
ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পারাপার খালের উপর ব্রিজ নির্মানের দাবী মনপুরাবাসীর ॥
লালমোহনে সাংবাদিকদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়
লালমোহনে আবাসনের ঘর জবরদখলের অভিযোগ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২৪ভোলার ৩ উপজেলায় ৩৮ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র দাখিল
কাউকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না : প্রধানমন্ত্রী
প্রচণ্ড গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা
শশীভূষণে পানিতে ডুবে দুই সহোদরের মৃত্যু
বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ট ব্যবসায়ীসহ গ্রাহকবিদ্যুত বিহীন মনপুরা ॥ তীব্রতাপদাহে ভোগান্তিতে সাধারন মানুষ

আর্কাইভ